যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
পুজো তো স্পেশ্যাল। কারণ আমার ছবি মুক্তি পেয়েছে। তা নিয়ে ব্যস্ততা রয়েছে। সপ্তমী থেকে সময়টা পরিবারের জন্য। প্রতিবছর পুজোতেই কলকাতায় থাকি। বাড়িতেই খাওয়া, আড্ডা, গান চলে। ঠাকুর দেখি। ইউভান বড় হয়েছে। ওকে ঠাকুর দেখাব, ঢাক বাজাব, সাজগোজ...।
২০২২-এও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অহরহ আলোচনা হয়। বিষয়টা আপনি কীভাবে দেখেন?
নারীর ক্ষমতায়ন খুব শক্তিশালী আন্দোলন। আসলে মেয়েরা কী খাবে, কী পরবে, কখন বাড়ি থেকে বেরবে, কীভাবে কথা বলবে, কী ধরনের সিনেমা দেখবে বা বই পড়বে সেটাও বোধহয় সমাজ ঠিক করে দেয়। অথচ আমরা মহিলারা সব বিষয়ে পারদর্শী। কোথাও কম নই। বরং পুরুষদের থেকে অনেক জায়গায় এগিয়ে। কিন্তু আমাদের সেই সম্মান সব জায়গায় দেওয়া হয় না। সে কারণেই এই লড়াই চলতে থাকা দরকার। আর লিঙ্গসাম্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যাতে আমাদের পরের প্রজন্মের কাছে এটা আর আলোচনার বিষয় না হয়। তখন যেন সবাইকে সমানভাবেই দেখা হয়। এটা আমার মনে হয় সমস্ত নারীর মনের কথা।
সম্মানের জন্যই কি মেয়েদের এই লড়াই?
এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা, যদি নারীকে সম্মান করতে না পারো, অসম্মান করো না। যেভাবে কোনও কিছু হলেই আগে মেয়েদের দোষ দেখা হয়, সেই দিনটার বদল খুব দরকার। ‘পৌলমী’ চরিত্রটা বলতে চায়, হয়তো জীবনে আমাদের অনেক ভূমিকা পালন করতে হয়, অনেক দায়িত্ব থাকে, তা পালন করেও সম্মানের সঙ্গে নিজের জন্য বাঁচাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
একটি মেয়ের সাফল্যের নেপথ্যে পুরুষের ভূমিকা কতটা গুরত্বপূর্ণ?
জরুরি প্রশ্ন। আমরা সবসময় বলি, পুরুষের সাফল্যের পিছনে একজন মহিলার হাত থাকে। একইসঙ্গে আমাদের এটাও জানা উচিত, এটা নিয়ে আলোচনা করা উচিত, একজন মহিলার সাফল্যের পিছনে একজন ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং হাজব্যান্ড’ খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু স্বামী নয়, পরিবারের সমর্থনও দরকার।
এই ছবিতে কিছু সহজ কথা আছে। যেটা জানলে আমাদের জীবনও সহজ হয়ে ওঠে। যেমন রান্না মেয়েদের করতেই হবে। আর ছেলে রান্না করলে প্রশ্ন ওঠে। আসলে সমাজ নারীকে তো বটেই, পুরুষকেও অদ্ভুত নিয়মে বেঁধে রেখেছে। পুরুষ এগুলো করতে পারবে, আর মহিলা এগুলোই করবে। না হলেই তারা খারাপ। যারা এই নিয়মগুলো থেকে বেরিয়ে আসে তারা আলাদা। তারা অন্যরকম জীবনযাপন করে। আমার মনে হয় তারাই আমাদের স্টিরিওটাইপস গুলোকে ভাঙে।
আপনার দৈনন্দিনে রান্না কতটা জুড়ে থাকে?
(হাসি) বিয়ের আগে আমি মাঝেমাঝে রান্না করতাম। কিন্তু এখন একেবারেই করি না। কারণ শাশুড়িমা পছন্দ করেন না। উনি বলেন, আমি কি আমার ছেলেকে কাজ করে আসার পর রান্না বসাও, বলব? অথবা রান্না করে কাজে যাও, বলব? অতএব তোমাকেও বলব না। আমার বরও বলে যে সময়টা রান্না করবে, সেই সময়টা আমাকে দাও। আমি অপেক্ষায় আছি আমার ছেলে নিশ্চয়ই বলবে, বন্ধুরা মায়ের রান্না খেয়ে প্রশংসা করছে, আমি কবে খাব? তখন হয়তো আমাকে রান্নাঘরে ঢুকতেই হবে।
যে মেয়েরা নিজের মতো করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের কী বলবেন?
আমার মনে হয় আত্মবিশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেটা ভাবছি, স্বপ্ন দেখছি, সেটার উপর বিশ্বাস থাকাটা দরকার। অনেক মহিলার সঙ্গে কথা বলেছি, যাঁরা স্বপ্ন দেখতেও ভয় পান। ভাবেন হয়তো আমার জন্য সংসারের অনেক কিছু নষ্ট হবে বা আমার জন্য আমার চারপাশে অনেকের কষ্ট হবে। কিন্তু এটা মনে রাখা দরকার, আগে নিজে বাঁচুন তারপর সবাইকে বাঁচান। জীবন একটাই। এই জার্নিতে যেদিন থেকে এন্ট্রি নিয়েছি সেদিন থেকে এগজিট গেটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফলে নিজের যা যা ইচ্ছে সেটাই করা উচিত। অবশ্যই সমাজের প্রতি আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। নিজেদের মূল্যবোধ আছে। পরিবারের দায়িত্ব আছে। সব কিছু সামলেও নিজের স্বপ্নপূরণ করাই যায়।