বাড়তি অর্থ পাওয়ার যোগ রয়েছে। পদোন্নতির পাশাপাশি কর্মস্থান পরিবর্তন হতে পারে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পক্ষে থাকবে। ... বিশদ
একান্ত আলাপচারিতায় কাজল জানালেন, লেবারের কাজ করতে করতে একদিন নিজের অজান্তে রং, তুলি আঁকার কাজে হাত লাগাই। আঁকি-বুঁকি কাটি। আমার নকশার কাজ ছাপাখানার মালিকের পছন্দ হয়। এভাবে তিন মাস লেবারের কাজ করার পর আমি কাপড়ে ড্রইংয়ের কাজ শুরু করি। মাইনে খুবই কম। সেইভাবেই চলছিল। প্রথম দিকে ছাপাখানাতেই কাজ করতে হতো। পরে বাড়িতে কাজ এনে করা যেত। ব্লক শাড়ি দিয়ে প্রথম কাজ শুরু করি। পরবর্তী সময়ে যুগের পরিবর্তনে চাহিদা না থাকায় ব্লক শাড়ির কাজ কমে যায়। তারপর ফুল শাড়ির কাজে হাত লাগাই। হ্যান্ড প্রিন্ট।
কাজল জানালেন, প্রথম প্রথম ডিজাইন তৈরির কাজ অন্য শিল্পীদের কাছ থেকে শিখতে হয়েছে। তারপর নিজেই ড্রইং শুরু করি। কোম্পানিতে দীর্ঘ কয়েক বছরের কাজের সুবাদে মালিকের প্রতি আমার বিশ্বস্ততার কারণে কাপড় বাড়িতে এনে কাজের ঢাড্ডায় (হ্যান্ড টেবিল) কাজ করে সপ্তাহান্তে ৬খানা কাপড় কোম্পানির ঘরে পৌঁছে দিই। এখন দু’জন সহযোগী কর্মচারী রেখেছি। তারা আমার ড্রইংয়ে রং বুলিয়ে ভরিয়ে তোলে। নিজের অভিজ্ঞতার সুবাদে তাঁত, সিন্থেটিক, তসর, পলি সিল্ক, পিওর সিল্ক কাপড়ে নিজের মনের মতো ডিজাইন তৈরি করি।
শাড়ির কাজের অনুপাতে রেট নির্ধারণ করা হয়। হ্যান্ড প্রিন্ট ২৪০ টাকা, ফুল শাড়ি ২৪০ টাকা। রং ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে সামান্য কিছু পারিশ্রমিক হাতে আসে। তবে এই কাজ করে তিনি যে গ্রামের কয়েকটি পরিবারকে স্বনির্ভর করতে পেরেছেন সেটাই বড় কথা। তাঁর নকশার কাজ করে গ্রামের গৃহবধূ অপর্ণা দোলুই ও ঝর্ণা দোলুই আর্থিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে। কাজল ভৌমিকের আঁকা কাপড় রামকানাই যামিনীরঞ্জন পালের দোকানেও স্থান পেয়েছে। কাপড়ের জমিতে নকশার কাজে মুন্সিয়ানা দেখিয়ে গৃহবধূ কাজল শিল্পীমনের যে পরিচয় দিয়েছেন তা তাঁর গ্রামের গর্ব। তাছাড়াও এর ফলে কাজলদের অভাবী সংসার সুখে সমৃদ্ধিতে ভরে উঠেছে। কাজলের এও এক পরম প্রাপ্তি।