যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মায়ের সাহচর্য ও সঙ্গদান শিশুকে সুঠাম ব্যক্তিত্বের অধিকারী করে তোলে বলে মনোবিদ ফ্লিউগেল মনে করেন। মায়ের স্পর্শ শিশুর একান্তভাবে প্রয়োজন বলে অনুভব করেন তিনি। তাই কর্মরতা মায়েদের কাছে একান্ত অনুরোধ তারা যেন শিশুকে সঙ্গ দেন, স্পর্শ করেন। শিশুর মানসিক গঠনে মায়ের স্পর্শের ভূমিকা অসম্ভব বেশি।
শিশুর বয়স যখন দুই-তিন, তখন দেখা যায় অনেক শিশু বুড়ো আঙুল চুষছে অথবা বিছানা ভিজিয়ে ফেলছে। এই বয়সে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই প্রবণতা তার পাঁচ-ছয় বছরের পরেও যদি থাকে, তবে মনোবিদের সাহায্য নেওয়া বাঞ্ছনীয়। চেতন-অচেতন মনের নিরাপত্তা বোধের অভাব আর ভয় থেকে এই ধরনের আচরণ দেখা দেয়। সঠিক সময়ে গুরুত্ব না দিলে নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য— যেমন অমূলক ভয়, উদ্বেগ, বাড়ির বাইরে মিশতে না পারা, পাঠক্রমিক ও নানাবিধ কার্যাবলী থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
বিদ্যালয়-জীবনে মায়েদের শিশুর প্রতি যত্নবান হতে হবে। আজকাল অবশ্য সব বিদ্যালয়ে বৌদ্ধিক বিকাশ, আচরণগত বিকাশের বিস্তারিত খবর রিপোর্ট কার্ডে দেওয়া থাকে। অভিভাবক-শিক্ষক মিটিংয়েরও আয়োজন করা হয়। শিশুর যখন ছয় থেকে আট বছর বয়স, তখন দেখতে হবে বন্ধুদের সঙ্গে সে কীভাবে মিশছে। বন্ধুদের সামনে নিজের ইচ্ছা প্রতিস্থাপন করতে পারছে কি না। ওদের মতেই ও সমর্থন করতে বাধ্য হচ্ছে কি! এই ধরনের মনোভাবাপন্ন শিশুরা চিরদিনই অনুগামী হিসেবে পরিগণিত হয়। আর এই বয়স থেকেই কোনও কোনও শিশু উদ্যোগী হয়, সবাই তাদের অনুসরণ করে। পাঠক্রমিক কার্য, সহপাঠক্রমিক কার্য—খেলাধুলা, আঁকা, গান, নাচ প্রভৃতি নানাবিধ বিষয়ে তাদের উৎসাহ থেকে। এদের মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা থাকে।
এর পরেই চলে আসে বয়ঃসন্ধিকাল। সহজাতভাবে শিশুরা বিপরীত লিঙ্গের দিকে আকৃষ্ট হয়। অনেক সময় মায়েরা গর্ব করে বলেন— ‘আমার ছেলে’ বা ‘আমার মেয়ে’ কিন্তু ওইরকম নয়। এটা কিন্তু সঠিক আচরণ নয়। এর ফলে পরবর্তীকালে অসুবিধে হতে পারে। এই সময়ে দেখতে হবে ওরা সমস্যার সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করছে। অতিরিক্ত শাসন বা প্রশ্রয় কোনওটাই বাঞ্ছনীয় নয়। এই সময় মায়ের সঙ্গদান ও পরামর্শ একান্তই প্রয়োজন। একই সঙ্গে ছেলে বা মেয়ের বন্ধু এবং অভিভাবক হিসেবে মাকে থাকতে হবে। অতিরিক্ত বন্ধুত্ব যেমন ভালো নয়, তেমনই অতিরিক্ত শাসনও খারাপ। সন্তান যেন এই বয়সে নিজের মনের কথা মাকে খোলাখুলি বলতে পারে সেদিকে মাকে খেয়াল রাখতে হবে। মায়ের সঙ্গে শিশুর সম্পর্ক যেন স্বতঃস্ফূর্ত হয়। তাহলেই শিশু পৃথিবীতে সব মানুষকে গভীরতরভাবে ভালোবাসতেও শিখবে আবার বিচক্ষণতার সঙ্গে পদক্ষেপও নিতে পারবে।