গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
দেবতাদের মধ্যে শ্রীজগন্নাথদেব অতীব খাদ্যরসিক। পঞ্চব্যঞ্জনে পাত সাজিয়ে না দিলে তাঁর মন ভরে না। রথের সময় তাই তেমনই আয়োজন করা হয় বিশ্বজুড়ে সব ইস্কন মন্দিরে। জানালেন, কলকাতা ইস্কন মন্দিরের ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রীরাধারমণ দাস। জগন্নাথদেব যেহেতু সারা পৃথিবী জুড়ে পূজিত, তাই তাঁর খাবারে সবরকম স্বাদ পাওয়া যায়। দেশি ও বিদেশি স্বাদ নিয়েই তৈরি হয় মহাপ্রসাদ। এমন মহাপ্রসাদ যার মধ্যে পাস্তা, পিৎজা, লাসানিয়া বা স্যুপের মতো কন্টিনেন্টাল পদও পাবেন আবার পরমান্ন, পোলাও, রসমালাই ইত্যাদি দেশি পদও পাবেন। রথের সময় জগন্নথদেবের জন্য ৫৬ থেকে ১৫০ রকম ভোগের আয়োজন করা হয়। তার মধ্যে আবার মিষ্টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রভুর নাকি মিষ্টির প্রতি বিশেষ টান। তাই সন্দেশ, পান্তুয়া, পায়েস, রসমালাই থেকে শুরু করে কাস্টার্ড, ফ্রুট কেক, ফ্রুট স্যালাড সবই পাবেন। ভক্তরা তাঁকে যেমন রাখেন তিনি তেমনই থাকতে ভালোবাসেন। তাই অনেক ক্ষেত্রে আবার টফি, লজেন্স, চকোলেট, বাদাম, ড্রাই ফ্রুটসও তাঁকে প্রসাদে দেওয়া হয়।
কলকাতার ইস্কন মন্দিরে প্রভুর প্রসাদের তিন ধরনের রেসিপি জানানো হল। সহজ রেসিপি সহযোগে এবার রথে বাড়িতে বানিয়ে শ্রীজগন্নাথদেবকে ভোগ নিবেদন করতে পারেন।
পুষ্পান্ন
উপকরণ: বাসমতী চাল ২ কাপ, লেবু ২-৩টে, দুধ ২ লিটার, ভাজার জন্য ঘি পরিমাণ মতো, মাখন ৩ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, জল ৪ কাপ, দারচিনি গুঁড়ো ১ চা চামচ, আদা বাটা চা চামচ, জায়ফল গুঁড়ো চা চামচ, গোলমরিচ ও লবঙ্গ গুঁড়ো সামান্য, চিনি কাপ, হিং ১ চিমটে, কর্ন স্টার্চ অল্প।
পদ্ধতি: দুধ জ্বাল দিন। তা যখন ফুটে উঠবে তখন লেবুর রস মিশিয়ে দুধ কাটিয়ে ছানা করে নিন। এবার এই ছানা ঠান্ডা জলে বারবার ধুয়ে নিন। ধোয়ার পর তা একটা কাপড়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখুন অন্তত ৮ ঘণ্টা। সব জল ঝরে গেলে এই ছানা থেকে ছোট ছোট বল তৈরি করে নিন। বল বানানোর সময় ছানার সঙ্গে অল্প কর্ন স্টার্চ মিশিয়ে নেবেন। কড়াইতে ঘি গরম করে ছানার বলগুলো ভেজে তুলে রাখুন। এবার একটা বাটিতে সব মশলা মিশিয়ে নিন। চাল ধুয়ে রাখুন। তারপর হাঁড়িতে জল ফুটিয়ে ভাত রান্না করুন। এই ভাতের মধ্যে মশলার মিশ্রণ দিয়ে একবার নেড়ে মিশিয়ে নিন। জল মরে গিয়ে ভাত যখন সেদ্ধ হয়ে আসবে তখন নুন দিয়ে নেড়ে দিন। নামানোর ঠিক আগে ছানার বলগুলো মিশিয়ে নামিয়ে নিন। পুষ্পান্ন তৈরি হলে তা গরম অবস্থায় ঠাকুর শ্রীজগন্নাথদেবের সামনে অর্পণ করুন।
কুচো বাঁধাকপির তরকারি
উপকরণ: ছোট বাঁধাকপি ২টো, নুন ১ টেবিল চামচ, ঘি ৮ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, সায়েন পেপার গুঁড়ো ১ চা চামচ।
পদ্ধতি: বাঁধাকপিগুলো ছোট টুকরো করে কেটে নিন। পাতলা স্লাইসের মতো হবে। কড়াইয়ে ঘি ঢেলে গরম করে নিন। তাতে সায়েন পেপার ও হলুদ গুঁড়ো একসঙ্গে গুলে দিয়ে দিন। মশলা মোটামুটি কষিয়ে নিয়ে বাঁধাকপির টুকরো দিয়ে নাড়ুন। নুন দিন। মশলায় মিশে বাঁধাকপির টুকরোগুলো বেশ মুচমুচে হয়ে আসবে। তখন কাঁটা চামচের সাহায্যে তা গেঁথে দেখুন বাঁধাকপি সেদ্ধ হয়েছে কি না।
কাঁটা চামচ যদি বাঁধাকপিতে সহজেই গেঁথে যায়, বুঝবেন সেদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এবার ঝাঁঝরি হাতার সাহায্যে বাড়তি ঘি ঝরিয়ে নিয়ে মুচমুচে মশলাদার বাঁধাকপি তুলে প্রভুকে নিবেদন করুন।
ম্যাঙ্গো ক্রিম
উপকরণ: পাকা আম ৪-৫টা (আমগুলো পাকা হলেও যেন শক্ত থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে), চিনির গুঁড়ো কাপ, হুইপড ক্রিম ১ কাপ।
পদ্ধতি: আমগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর তা ছোট ছোট টুকরো কেরে কেটে নিন। কিন্তু খোসা ছাড়াবেন না। এবার একটা কড়াইতে জল নিয়ে তাতে এই আমের টুকরোগুলো ঢিমে আঁচে সেদ্ধ করুন। মোটামুটি নরম হওয়া পর্যন্ত সেদ্ধ করে নিন। তারপর তা একটা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিলেই খোসা আর আমের পাল্প আলাদা হয়ে যাবে। এবার এই পাল্প একটু ঠান্ডা হতে দিন। তারপর পাল্পের সঙ্গে হুইপড ক্রিম একটু একটু করে মেশান আর ফেটান। পুরোটা মিশে গেলে তার সঙ্গে চিনির গুঁড়ো মেশান এবং একইভাবে ফেটিয়ে নিন। এই মিশ্রণ ছোট বোল বা কাপে ঢেলে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। জমে গেলে ফ্রিজ থেকে বের করে শ্রীজগন্নাথদেবকে নিবেদন করুন।