রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
পুরনো দিনের রান্নাঘরের ভাবনা নিয়ে শুরু হয়েছে গপ্পোবুড়ির হেঁশেল। আগেকার দিনে বাড়ির মেয়ে-বউরা সারাদিন হেঁশেলে টুকটাক রান্না করতেন আর তারই সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলত নানা ধরনের গল্প। ক্রমশ জীবন গতিশীল হয়ে উঠতে শুরু করল। মেয়ে-বউরা ঘর সামলে রোজগেরে হয়ে উঠলেন। ভেঙে যেতে লাগল একান্নবর্তী সংসার। আর হেঁশেলের গল্পের পাঠও উঠে গেল। তবু সেই গল্প এক অন্যরকম নস্টালজিয়া নিয়ে আমাদের মন জুড়ে রয়েছে। সেই নস্টালজিয়া ফিরিয়ে দিতেই দুই বন্ধু অরিজিত মণ্ডল আর অর্ণব ঠাকুর উদ্যোগী হয়ে শুরু করেছেন এক ভিন্ন স্বাদের ক্লাউড কিচেন, গপ্পোবুড়ির হেঁশেল। এখানে পুরনো দিনের রেসিপি তো রয়েছেই, তবে তারই মধ্যে পাবেন একটু আধটু টুইস্ট। অর্থাৎ পুরনো স্বাদ বজায় রেখে একটু নতুনত্বের ছোঁয়া। আর এই ধরনের মেনু ক্রমশ খাদ্যরসিকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত সপ্তাহান্তে এই ক্লাউড কিচেনটির কারবার চলে। তবে বিশেষ অনুরোধে পার্টির আয়োজনও তাঁরা করে দেন। আর বিশেষ বিশেষ দিনে বিশিষ্ট অতিথি সহ ভিন্ন ধরনের মেনু তো থাকেই। পঁচিশে বৈশাখে রবীন্দ্রনাথের প্রিয় খাবার সাজানো হয়েছিল মেনুতে। আবার আর ডি বর্মনের জন্মদিনে ছিল তাঁর পছন্দসই খাবারের মেনু। এগুলো সকলের কাছে পৌঁছনো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে। আগে থেকে এদের পেজে ঘোষণা করা হয় বিশেষ দিনের বিশেষ মেনু সম্বন্ধে। তারপর যথাসময়ে তা অর্ডার করা যায়। তাছাড়া এদের আড্ডা সেশন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতি রবিবার বিকেলে এটির আয়োজন করা হয়। এতে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা আমন্ত্রিত হন আর খাওয়াদাওয়া নিয়ে তুমুল আড্ডা চলে। তাঁরা নিজেদের পছন্দের খাবার শ্রোতাদের জানান। খাওয়াদাওয়া নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন আবার অনেক সময় বিশেষ কোনও খাবারের ইতিহাসও তুলে ধরেন শ্রোতাদের সামনে। সেই আড্ডা সেশনেই অরিজিত আর অর্ণব তাঁদের পরবর্তী রবিবারের মেনুও ঘোষণা করেন। এবং তা কবে বা কীভাবে অর্ডার করা যাবে, তাও জানিয়ে দেন। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট আড্ডা ও খাওয়াদাওয়ার আসর নিয়ে এগিয়ে চলেছে গপ্পোবুড়ির হেঁশেল। সবে মাত্র এক বছর পূর্ণ করেছে এই ক্লাউড কিচেনটি। এরপর পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে তা পূর্ণ রেস্তরাঁ হিসেবেও চালু করতে চান, জানালেন অরিজিত। অর্ণব বললেন যদি পূর্ণ রেস্তরাঁ খোলা হয় তাহলেও এই আড্ডার আমেজটা ধরে রাখতে চান তাঁরা। ইন্টার্যাক্টিভ প্ল্যাটফর্ম থাকবে। তাতে আড্ডা, কবিতা, গান সবই রাখার কথা ভাবছেন তাঁরা। পুজোয় আড্ডার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া কেমন জমবে? জিজ্ঞেস করলে অরিজিত বলেন, মেনুতে মোচার ঘণ্ট থাকবে একটু চিংড়ি সহযোগে। কাটলেট থাকলে তা চিকেন বা মাটনের পাশাপাশি ছানারও হবে। গোলমরিচ মাংস, গোয়ালন্দ চিকেন কারি ইত্যাদি নিয়েই মেনু সাজানো হবে। বাঙালির রোজকার মেনু নিয়েই এই রেস্তরাঁর মেনু সাজানো হবে। লোকাল খাবার যদি একটু মোড়ক বদলে পরিবেশন করা যায় তাহলে লোকের কাছে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলেই মনে করেন অরিজিত ও অর্ণব। আর বাঙালি রান্নার মধ্যে কিছু এমন পদ আছে যা বাঙালি হলেও বিশেষ। রোজ বাড়িতে আমরা ডাব চিংড়ির মতো পদ তো পাই না। ফলে বাঙালি হলেও সেসব খাবার ভিন্ন। যেমন তাঁরা দ্বারকানাথ পোলাও নামে একটি রান্না রেখেছেন মেনুতে। এমন মেনু যা বাঙালি হলেও প্রচলিত নয়। অরিজিত ও তাঁর মা গপ্পোবুড়ির হেঁশেলের রান্নার সম্পূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁদের সহযোগিতা করেন শেফ ঝন্টু সাঁতরা। এঁদের খাবার অর্ডার দিতে চাইলে গপ্পোবুড়ির হেঁশেলের ফেসবুক পেজ বা ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে লগ ইন করতে পারেন।
কাতলা মাছের রেজালা
উপকরণ: কাতলা মাছের মাঝারি মাপের টুকরো ৫-৬টা, পেঁয়াজ ৩০০ গ্রাম, রসুন ২০ গ্রাম, ছোট এলাচ ৫টা, কাঁচালঙ্কা বাটা ১ কাপ, নারকেল কোরা ২০ গ্রাম, কাজু
বাদাম ৫০ গ্রাম, দই ২৫০ গ্রাম, ঘি ২৫০ গ্রাম, কেওড়া জল ২ ফোঁটা, নুন স্বাদ মতো।
পদ্ধতি: মাছের টুকরোগুলো ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। আদা ও রসুন বাটা ভালো করে চেপে নিয়ে রস সরিয়ে রাখুন। পেঁয়াজ, কাজু বাদাম ও নারকেল আলাদা আলাদা করে বেটে নিন। এবার একটা পাত্রে তেল গরম করে মাছের টুকরোগুলো হালকা করে ভেজে তুলে নিন। এরপর ওই তেলেই পেঁয়াজ বাটা, রসুন ও আদার রস দিন। মশলার জল শুকিয়ে গেলে ঘি ও ফেটানো দই দিয়ে কষুন।
তেল ছেড়ে আসা পর্যন্ত ভাজতে থাকুন। এরপর কাজু বাদাম বাটা ও কোরানো নারকেল বাটা দিয়ে ২-৩ মিনিট ভাজুন। মশলা যেন বাদামি না হয়ে যায়। এবার পাত্রে মাছের টুকরোগুলো ছেড়ে দিয়ে কাঁচালঙ্কা বাটা, দেড় কাপ জল দিন ও তা ফুটিয়ে ঘন ঝোল বা গ্রেভি বানিয়ে নিন। কিছুক্ষণ অল্প আঁচে রেখে নামিয়ে নিন। তার আগে কেওড়া জল দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নেবেন। পোলাও বা গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।