তিনি একসময় ‘ব্যান্ড’-এ ছিলেন, এখন ‘ব্র্যান্ড’-এ আছেন! দেবাদিত্য চৌধুরী জনপ্রিয় চীনা রেস্তরাঁ ‘চাওম্যান’-এর কর্ণধার। তাঁর সঙ্গে কথা বললেন মনীষা মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে থাকছে রেস্তরাঁর দু’টি রেসিপি।

• ছোটবেলায় নাকি আপনার চীনা খাবারের গন্ধে ঘুম ভাঙত!
•• হ্যাঁ, আমি যে বাড়িতে থাকতাম তার পাঁচিল ঘেঁষেই ছিল চাইনিজ দোকান ‘কিম ওয়া’। তাই চীনা খাবারের গন্ধেই ঘুম ভাঙত। 
• চাওম্যান কি সেই স্মৃতি থেকেই?
•• ভালোবাসা তখন থেকেই। তারপর ‘লক্ষ্মীছাড়া’ ব্যান্ড হল। দেশ-বিদেশে কনসার্ট করতাম। সে সময় বিভিন্ন রেস্তরাঁয় খাওয়া তো ছিলই, সেগুলো রিভিউও করতাম। সেই থেকেই খাবারের দোকান খোলার ইচ্ছে। 
• চাওম্যান খুললেন ২০১০-এ। এর আগের প্রস্তুতি কেমন ছিল?
•• ২০০৭ থেকে নিয়মিত চীন যেতে শুরু করি। সেখানকার মশলা, খাবার, বাসনপত্র সবকিছুর সঙ্গে পরিচিত হওয়া শুরু করি। ওটা ছিল আমার নিজেকে প্রস্তুত করার সময়। 
• চাওম্যান হিট করবে মনে হল কেন? 
•• প্রথমত আমি সব চীনা খাবারে খাঁটি চীনা মশলা, স্যস ব্যবহার করতাম। তাছাড়া আমার পরিকল্পনা ছিল কলকাতার অলিগলিতে ফাইন ডাইনিং আউটলেট বানানো। চীনের কাটলারি ও বাসনপত্র ব্যবহার করেও মধ্যবিত্তের পকেট বুঝে একটা ফাইন ডাইনিংয়ের ব্যবস্থা করি। 
• এখন চাওম্যানের আউটলেট কতগুলো? পরের পরিকল্পনা কী?
•• এই মুহূর্তে কলকাতায় চাওম্যানের ১৫টা আউটলেট, বেঙ্গালুরুতে ৩টে ক্লাউড কিচেন আছে। এই মাসেই গৌরীবাড়ি ও শ্রীরামপুরে আরও ২টি আউটলেট খোলার কথা। খুব শিগগির কলকাতায় আরও ৩-৪টে রেস্তরাঁ খুলছে। ২০২৪-এর মধ্যে চারটি মেট্রো সিটিতে ‘চাওম্যান’-কে আরও বড় আকারে পৌঁছতে চাই। 
• এখন তো অ্যাপও এসে গিয়েছে!
•• হ্যাঁ, অ্যাপ আনলাম দেশের নানা প্রান্তে যাতে ছড়িয়ে পড়া যায়।
• করোনার সময়ে চাওম্যান কি নিজের ব্যবসা নিয়ে খুব নিশ্চিন্ত?
•• করোনার সময়ে সব রেস্তরাঁই সমস্যায় পড়েছে, আমরাও পড়েছিলাম কিছুটা, তবে সব সামলে আমরা দুটো আউটলেটও খুলতে পেরেছি। লোক নিয়োগও হয়েছে।

বার-বি-কিউ স্মোকড ফিশ
উপকরণ: ভেটকি মাছ ১৫০ গ্রাম (চিলি ফিশের আকারে ১০ টুকরো করা), ডিম ১টা, কর্নফ্লাওয়ার ৩ চামচ, ময়দা ১ চামচ, আদা ১ চা চামচ, শুকনো লঙ্কা স্বাদ অনুযায়ী, পেঁয়াজ ১কাপ, টম্যাটো কেচআপ ৩ চামচ, মাখন ২ চামচ, ডার্ক সয়া স্যস ২ চামচ, সাদা তেল, স্প্রিং ওনিয়ন কুচনো অল্প। 
প্রণালী: মাছ ভালো করে ধুয়ে তাতে নুন ও গোলমরিচ দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন মিনিট ১৫। একটি পাত্রে মাখন, ডিম, কর্নফ্লাওয়ার ও ময়দা গুলে নিন। মাছের টুকরোগুলো তাতে ডুবিয়ে সাদা তেলে হাল্কা করে ভেজে নিন। এবার একটি প্যানে এক চামচ তেল দিয়ে তাতে আদা কুচি, শুকনো লঙ্কার কুচি ও ডুমো ডুমো করে কেটে রাখা পেঁয়াজ যোগ করে হাল্কা করে নেড়ে নিন। এবার এতে টম্যাটো কেচাপ, ডার্ক সয়া স্যস, অল্প মাখন ও গোলমরিচ যোগ করুন। গ্রেভি ফুটে এলে তাতে ভেজে রাখা মাছের টুকরো যোগ করে আরও আধ মিনিট ফুটিয়ে নামিয়ে নিন। ওপরে অল্প মাখন ও স্প্রিং অনিয়ন কুচনো ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। 

কলকাতা স্টাইল চিলি চিকেন
উপকরণ: চিকেন ছোট করে কাটা ২৫০ গ্রাম, ডিম ১টা, কর্নফ্লাওয়ার ৩ চামচ, ময়দা ১ চামচ, নুন ও চিনি স্বাদ মতো, পাতিলেবু ১টা, গোলমরিচ  চা চামচ, কাঁচালঙ্কা স্বাদ মতো, সাদা তেল, সয়া স্যস ২ চামচ, টম্যাটো কেচআপ ৪-৫ চামচ, স্প্রিং অনিয়ন অল্প।
প্রণালী: চিকেন ভালো করে ধুয়ে নুন, লেবুর রস ও গোলমরিচ দিয়ে ম্যারিনেট করে এক ঘণ্টা রাখুন। একটা পাত্রে কর্নফ্লাওয়ার, ময়দা ও ডিম মিশিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন। এবার সেই মিশ্রণে চিকেনের টুকরো ডুবিয়ে ছাঁকা তেলে সোনালি করে ভাজুন। অন্য পাত্রে এক চামচ তেল দিয়ে কাঁচালঙ্কা কুচি নেড়ে তাতে টম্যাটো কেচআপ ও সয়া স্যস মেশান। এরপর নুন, চিনি ও গোলমরিচ মিশিয়ে ফুটিয়ে তাতে ভাজা চিকেন দিন। চিকেন ও গ্রেভি মিশে গেলে সেমি ড্রাই করে নামিয়ে নিন। ওপর থেকে স্প্রিং অনিয়ন কুচি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।