পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বাঙালি রান্নায় অদ্ভুত একটা জাদু আছে। আমিষ নিরামিষ সবরকম পদেই একটা আলাদা স্বাদ পাওয়া যায়। একই উপকরণ দিয়ে বানানো যায় নানা রকম সুস্বাদু রেসিপি। ফোড়নের অদলবদলে পালটে যায় রান্নার স্বাদ। আর সেই কারণেই বাঙালি রান্না এত পছন্দ করেন স্ট্যাডেলের এগজিকিউটিভ শেফ শচীন ভারমা। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দিল্লির গ্র্যান্ড ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে। তখন বাঙালি রান্নার চেয়ে ভারতীয় রান্নাতেই বেশি দক্ষ ছিলেন তিনি। রান্নায় নতুনত্ব আনতে চান শেফ সবসময়। আর তিনি মনে করেন বাঙালি রান্নায় সেই সুযোগ সবচেয়ে বেশি। কলকাতায় এসে বাঙালি রান্না করার সুযোগ পেয়ে তিনি তাই সেই সুযোগটা উপভোগ করছেন। জানালেন, বাঙালি মশলার সঙ্গে মাঝে মধ্যে অন্য ধরনের মশলা মিশিয়ে নতুন রকম রেসিপিও তৈরি করেন। খাবার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করাই তাঁর নেশা। আর সেই সুযোগ তিনি পান স্ট্যাডেল হোটেলের রান্নাঘরে। যুবভারতী ক্রিড়াঙ্গনের ঘন সবুজ ঘাসের আড়ালে স্ট্যাডেল হোটেল। আর সেই হোটেলে অন্যতম রেস্তরাঁ ফার্স্ট ইনিংস। সেখানে খাবারের ধরন বিভিন্ন। ওরিয়েন্টাল, বাঙালির পাশাপাশি আবার নর্থ ইন্ডিয়ান খাবারও পাবেন এই রেস্তরায়। বিভিন্নতায় ভরা মেনু থেকে বাছাই পদ সহযোগে দু’জনের খাওয়ার খরচ মোটামুটি ১২০০ টাকা, কর অতিরিক্ত। সেখান থেকেই দুটি বাঙালি রান্না রেসিপি অন্দরমহলের পাঠকদের উপহার দিলেন হোটেলের এগজিকিউটিভ শেফ।
উপকরণ: মাংস ৭৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ ৩টে মাঝারি, তেজপাতা ৩টে, লবঙ্গ ৫টা, গরম মশলা ১ চা চামচ, ছোট এলাচ ৪টে, দারচিনি ২ ইঞ্চি, সর্ষের তেল কাপ। ম্যারিনেশনের জন্য: রসুন ৮ কোয়া, ধনেগুঁড়ো ১ চা চামচ, জল ঝরানো টক দই ৪ টেবিল চামচ, আদা ১ ইঞ্চি, কাশ্মীরি লাল লঙ্কারগুঁড়ো ১ চা চামচ, নুন ১ চা চামচ।
পদ্ধতি: মাংস গরম জলে ধুয়ে রাখুন। আদা রসুন একসঙ্গে বেটে নিন। ম্যারিনেশনের সব মশলা একসঙ্গে মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। তাতে অল্প সর্ষের তেল মিশিয়ে নিন। পেঁয়াজ বেটে নিন। সেই বাটা পেঁয়াজ থেকেও অল্প এই ম্যারিনেশনের মিশ্রণে মেশান। তারপর এই ম্যারিনেড দিয়ে মাংস ম্যারিনেট করে রেখে দিন সারা রাত। ম্যারিনেড মাংসে মাখানোর আগে মাংসের টুকরো গুলো কাঁটা দিয়ে ফুড়িয়ে নিন। যাতে মাংসের ভেতর মশলা সম্পূর্ণ ঢুকে যায়। এবার প্রেসার কুকারে তেল গরম করুন। তাতে তেজপাতা, লবঙ্গ, ছোট এলাচ ও দারচিনি থেঁতো করে ফোড়ন দিন। তারপর বাকি পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। তারপর গরম মশলা দিন। মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে মাংস দিয়ে কষাতে থাকুন। মাংস কষানো হলে ও তাতে রং ধরলে যেমন গ্রেভি আপনি চান সেই অনুযায়ী জল দিন। জলটা সামান্য গরম করে নেবেন। এরপর প্রেশার কুকারের ঢাকা বন্ধ করে মাংস সেদ্ধ হতে দিন। নামানোর আগে কুকারের ঢাকা খুলে গরম মশলাগুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। ইচ্ছে হলে ওপর থেকে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে নামান। লুচি বা ভাত সহযোগে পরিবেশন করুন।
উপকরণ: মোচা ২টা, সেদ্ধ করা আলু ৩টে বড়, কাঁচা লঙ্কাকুচি ৪-৫টা, ঘি প্রয়োজন মতো, গোটা জিরে ১ চা চামচ, দারচিনি ২-৩ টুকরো, নারলে কোরা আর ভাঙা চিনে বাদাম কাপ, জিরেগুঁড়ো ১ চা চামচ, আদাকুচি ১ চা চামচল গরম মশলা ১ চা চামচ, চিনি চা চামচ, নুন স্বাদ মতো, কর্নফ্লাওয়ার ও ব্রেডক্রাম্বস মিলিয়ে কাপ, তেল ভাজার জন্য।
পদ্ধতি: মোচা কাঠি ফেলে ঝিরিঝিরি করে কেটে নিন। এবার অল্প দুধ ও নুন জলে মিশিয়ে সেই মিশ্রণে মোচা সেদ্ধ করে নিন। মিনিট দশের সেদ্ধ করার পর মোচা থেকে জল ঝরিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে হাত দিয়ে চিপে বাড়তি জল ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন। স্টাফিং বানানোর জন্য: একটা পাত্রে তেল ও ঘি মিলিয়ে গরম করে নিন। তাতে জিরে ফোড়ন দিন। সেদ্ধ করা মোচা দিয়ে কষিয়ে নিন। মোচা থেকে তেল ছাড়তে শুরু করলে নারকেল ও বাদাম দিন। এরপর একে একে গরম মশলা, আদা কুচি, নুন ও চিনি দিন। পুরটা একসঙ্গে মিশে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। আলুর খোলা বানানোর জন্য: আলু সেদ্ধ করে চটকে মেখে নিন। তাতে অল্প নুন দেবেন। ইচ্ছে হলে লঙ্কাকুচি মেশান। তার থেকে লেচি বার করে নিন। এই লেচি হাতের সাহায্যে চ্যপটা করে তা বাটির আকারে গড়ে নিন। সেই বাটির ভেতর মোচার পুর ভরুন। তারপর চপের মোতো আলুর মুখ দুদিক দিয়ে বন্ধ করে দিন। একটু লম্বাটে গোল আকারে চপগুলো গড়ে নিন। এবার এই চপগুলোকে কর্নফ্লাওয়ার ও ব্রেডক্রাম্বসের মিশ্রণে গড়িয়ে নিন। এই মিশ্রণ যেন চপের গায়ে লেগে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে নেওয়ার পর মোচার চপ খানিকক্ষণ ফ্রিজে রেখে শক্ত হতে দিন। কড়াইতে তেল গরম করে মোচার চপ ছাঁকা তেলে ভেজে তুলুন।