সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সৌরভ ধারা বললেন, ‘বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন জন্মের পর থেকেই শুরু করা উচিত। বাচ্চার ত্বক আর পরিণত মানুষের ত্বকের মধ্যে একটু পার্থক্য তো থাকেই। বাচ্চার ত্বকের ঘনত্ব পরিণত ত্বকের তুলনায় অনেক কম। ফলে ওদের ত্বকের যত্ন অনেক বেশি সচেতনভাবে করা উচিত। প্রথম থেকেই বাচ্চাকে স্নান করানো উচিত। প্রথম দিকে সপ্তাহে দুই বা তিন দিন। এমোলিয়েন্ট (আর্দ্রভাব বজায় রাখে এমন) ক্রিম লাগানো উচিত বাচ্চাদের। স্নানের পরই এই ক্রিম আমরা লাগাতে বলি। এটা না পেলে সাধারণ নারকেল তেলও লাগাতে পারেন। নারকেল তেলের দাম কম হলেও এর মধ্যে একটা এমোলিয়েন্ট রয়েছে।’
তেল লাগানো বা না লাগানো নিয়ে অনেক মত রয়েছে। আগেকার দিনের মা, কাকিমারা সরষের তেল লাগাতে বলতেন। অধিকাংশ চিকিৎসক এখন আর সে পরামর্শ দেন না। কারণ? সৌরভের মতে, ‘সরষের তেলের প্রাকৃতিক গুণ ইদানীং অনেকটা নষ্ট হয়েছে। এর বিশুদ্ধতাও আর আগের মতো নেই। বাজারচলতি সরষের তেলের মধ্যে এমন উপাদান থাকতে পারে যেটা হয়তো বাচ্চাদের ত্বকের জন্য ভালো নয়। তাই সুগন্ধ নেই যে নারকেল তেলে, তা ব্যবহার করতে বলি আমরা। ’
সদ্য মা হয়েছেন অভিনেত্রী বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়। মেয়ে আদিয়া বদলে দিয়েছে দৈনন্দিনের অভ্যেস। মেয়েকে তেল মাখানোর ক্ষেত্রে সনাতন নাকি আধুনিক, কোন পথের পথিক তিনি? হেসে অভিনেত্রীর জবাব, ‘আদিয়ার বয়স এখন ছ’মাসের একটু বেশি। ওকে স্নানের আগে তেল মাসাজ করাই। তাতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। ত্বকে একটা উজ্জ্বল ভাব থাকে। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল ব্যবহার করি। অথবা খাঁটি সরষের তেল। সেটা সবসময় পাওয়া যায় না। আমাদের মা, ঠাকুরমাদের আমল থেকেই এটা চলছে। আমাদেরও তাই মাখানো হয়েছে। তাতে নাকি হাড় শক্ত হয়। তবে মেয়েকে আমি যে তেলই মাখাই, একটু গরম করে নিই।’
শিশুদের ত্বক আর্দ্র রাখা জরুরি। সেটাই যত্নের প্রথম ধাপ। তবে কোনও শিশুর যদি ত্বকের কোনও রোগ ধরা পড়ে, তাহলে তার ধরন অনুযায়ী ভিন্ন চিকিৎসা রয়েছে। সৌরভ জানালেন, অ্যাটোপিক স্কিন থাকলে বাচ্চাদের ত্বক খুব তাড়াতাড়ি শুষ্ক হয়ে যায়। সেই ধরনের ত্বকে কোনও কোনও উপাদানের অভাব থাকে। এর ফলে একটা চুলকানি ভাব আসে। তখন ময়শ্চারাইজার লাগানো দরকার। যাতে আর্দ্রতা বজায় থাকে। ত্বকের ভিতরের থেকে বাইরের দিকে জলীয় ভাব যেটা বাষ্পীভূত হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, সেটা আটকানো খুব জরুরি। যাতে ত্বক শুষ্ক না হয়। সেজন্য এমোলিয়েন্ট লোশনের খুব প্রয়োজন।
‘অ্যাটোপিক বাচ্চাদের এই ক্রিম বা নারকেল তেল আমরা দু’বার বা তিনবার লাগাতে বলি। বেশি লাগালেও কোনও ক্ষতি নেই। সব সময় আর্দ্র ত্বকের উপর লাগানো উচিত। শুষ্ক অবস্থায় ক্রিম না লাগানোই ভালো। স্নানের পর, বিকেলে বা রাতে ত্বক ধুয়ে বা মুছে নিয়ে লাগান। আর একমাস বয়সের পর থেকে শিশুর চাইল্ডহুড স্টেজ শুরু হয়। তখন একটু অন্যরকমের এমোলিয়েন্ট ক্রিম দরকার। বয়স অনুযায়ী আলাদা আলাদা ক্রিম বাজারে পাওয়া যায়। লাইট লিকুয়িড প্যারাফিন, হোয়াইট সফট প্যারাফিন যুক্ত যেসব এমোলিয়েন্ট ক্রিম বাজারে আছে সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে’, বললেন তিনি।
শিশুদের ত্বকে বাজারজাত কোনও প্রসাধনী যত কম লাগানো যায় তত ভালো। সেটা ভালোভাবেই জানেন নতুন মা বাসবদত্তা। তিনি বললেন, ‘আদিয়া একদম ছোট বলে আমরা ঘরোয়া যে সমস্ত প্রসাধন করি, সেটা এই মুহূর্তে করতে পারছি না। বাচ্চাদের ত্বক এমনিই সুন্দর থাকে। একটু বড় হলে বাইরের প্রোডাক্ট ব্যবহার করা শুরু হলেই ত্বকে সমস্যা হয়। না হলে ওদের আলাদা কিছু দরকার হয় না।’ ধীরে ধীরে বয়স বাড়বে। বাজারজাত প্রসাধনীর সঙ্গেও ত্বককে মানিয়ে নিতে শিখতে হবে। সেক্ষেত্রে উপায় বাতলে দিলেন সৌরভ। তাঁর কথায়, ‘বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব কম প্রসাধনী ব্যবহার করাই ভালো। একান্তই ব্যবহার করতে হলে হালকা ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে তার উপর প্রসাধনী লাগাতে বলি আমরা। যাতে খুব সহজে ওটা সরিয়ে ফেলা যায়। স্নানের সময় প্রথম থেকেই ময়শ্চারাইজার যুক্ত সাবান ব্যবহার করুন শিশুর জন্য।’ এছাড়া বাথ ওয়াশ পাওয়া যায়। সেগুলো নন কমেডোজেনিক। অর্থাৎ রোমকূপের মুখ আটকে দেবে না। ঘাম, ময়লার মধ্যে দিয়ে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যেতে পারবে।