পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
হেয়ারকাট
বর্ষায় চুলের যত্নে সবচেয়ে সহজ সমাধান হেয়ারকাট, বলছিলেন জলি চন্দ। এমনিতেই কোভিড পরবর্তী জমানায় চুল ছোট রাখার চল আগেকার থেকে অনেকটাই বেড়েছে। হাইজিন মেনে সব দিক দেখে চলতে হলে বড় চুল নিয়ে নানা অসুবিধের মুখে পড়তে হয়। তাই অনেকেই বেছে নিয়েছেন চুল ছোট করার অপশন। জলির কথায়, ‘এতে চুল মেনটেন করাটা খুব সহজ হয়ে যায়। নিয়মিত ওয়াশ করা, ড্রাই করা, কন্ডিশনিং— এগুলো নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকে না। চুল যত ফুরফুরে থাকবে, স্ক্যাল্পে যত হাওয়া লাগবে ততই ভালো। সারাক্ষণ চুল চেপে বা টেনে বেঁধে রাখা খুব অস্বাস্থ্যকর। এতে স্ক্যাল্পে হাওয়া পৌঁছয় না। তাতে হেয়ার ফলিকল আরও ঘেমে যায়। আমাদের মাথা থেকে এমনিতেই সিবাম সিক্রেশন হয়। যা তেলতেলে ভাব বজায় রাখে। সেগুলো জমে, তার সঙ্গে ঘাম জমে। হেয়ার ফলিকল তাতে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর সেটা থেকেই চুল পড়া শুরু হয়।’ বেশি বয়সের দিকে পৌঁছে গেলে চুল মেনটেন করা আরও ক্লান্তিকর হয়ে পড়ে। তাঁদের ক্ষেত্রেও চুল শর্ট করে নেওয়া সোজা রাস্তা।
লম্বা চুলে যত্ন
চুল বড় রাখলে হেয়ারফল ঠেকানো বড় দায়। জলি জানালেন, তাঁর কাছে এমন অনেকেই আসেন যাঁরা বলেন, চুলের যত্নে সব কিছু করছি, তাও কেন হেয়ারফল হচ্ছে? তাঁর উত্তর, ‘হাওয়া না ঢুকলে স্ক্যাল্প ব্রিদ করতে পারে না। ফলে চুল পড়বেই।’ কিন্তু বড় চুল যাঁদের রয়েছে, তাঁরা কী করবেন? ‘যাদের হেয়ার লেন্থ বেশি এবং নিয়মিত শ্যাম্পু করা সম্ভব নয়, তাঁরা চেষ্টা করুন বেশ খানিকটা সময় চুল খোলা রাখতে। সবসময় একটা খোপা বা বিনুনি নয়, লম্বা চুলে অনেক লেয়ারস বা সামনের দিকে কেটে একটু ফাঁকা ফাঁকা রেখে স্টাইলিং করা যায়। সঙ্গে ব্যবহার করুন খুব মাইল্ড শ্যাম্পু। ভালো ব্র্যান্ডের সেনসিটিভ স্ক্যাল্পের শ্যাম্পু বেছে নিতে পারেন। যাঁরা সারাক্ষণ এসিতে বসে কাজ করছেন, তাঁদের চুলের ক্ষতি হচ্ছে মারাত্মক। এসি যেমন স্কিন ড্রাই করে, চুলও একইভাবে রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই শুধু সিরাম কাজে দেবে না। ফ্রিজ কন্ট্রোলের জন্য বিশেষ ক্রিম বা লিভ ইন কন্ডিশনার লাগাতে পারেন। সেগুলো একটু ভেজা চুলে লাগালে উপরে একটা আস্তরণ থাকবে, যা চুলের ক্ষতি কিছুটা রুখতে পারে। যেদিন শ্যাম্পু করতে পারলেন না, সেদিন ভেজা হাতে লিভ ইন কন্ডিশনার নিয়ে চুলের লেন্থে লাগিয়ে নিন বেরনোর আগে। মনে রাখবেন, এটা চুলের গোড়ায় কখনও লাগাবেন না।’
বাকি উপায়
স্ক্যাল্পের সামগ্রিক যত্ন করলে চুল যে কোনও ঋতুতেই ভালো রাখা সম্ভব। জলির পরামর্শ, অনেক ঘরোয়া টোটকার উপরে ভরসা রাখতে পারেন। যেমন, একটা লোহার পাত্রে মেথির গুঁড়ো নিয়ে সারা রাত নারকেল তেলে ভিজিয়ে রেখে দিতে পারেন। পরে মেথি ছেঁকে সেই তেলটা লাগালে তাতে হেয়ার গ্রোথ ভালো হয়। ফলিকলও সুস্থ থাকে। তবে লাগিয়ে এক ঘণ্টা মতো রাখলেই যথেষ্ট। অনেকে ভাবেন বেশিক্ষণ রাখলে বেশি ফল দেবে। তা নয়, হেয়ার ফলিকলেরও একটা স্যাচুরেশন পয়েন্ট থাকে, ফলে ওটার যতটুকু নেওয়ার ততটাই নেবে, বলছিলেন এই বিশেষেজ্ঞ। এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন ভাতের মাড়। মাড়টা জল মিশিয়ে আরও তরল করে সেই জলটা দিয়ে চুল ধুলে সেটা ভালো কন্ডিশনারের কাজ করে। সেটা লাগিয়ে মিনিট পাঁচেক রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। কন্ডিশনার হিসেবে অ্যালোভেরা জেলও খুব কাজে দেয়। তেলের সঙ্গে ওটা মিশিয়ে লেন্থে লাগালে সেটা বেশ কাজে দেয়। এছাড়া আছে ঘোলের জল, তাও জলে মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এমন অনেক ঘরোয়া উপায় আছে। তবে হাতে সময় কম থাকলে বাজার থেকে কিনে নিতে পারেন হেয়ার মিস্ট। কন্ডিশনিং স্প্রে হিসেবে কাজ করে সেটা। যেভাবে ফেস মিস্ট লাগানো হয়, তেমনই চুলে লাগিয়ে নিন। ওটা কোটিং হিসেবে থাকলে চুল বাঁচবে। যাঁদের বেশি সময় রোদে রোদে ঘুরতে হয়, তাঁদের স্কিনের পাশাপাশি চুলের রঙেও পরিবর্তন হয়। পুড়ে কিছুটা যেন তামাটে হয়ে যায়। তাছাড়া ল্যাপটপের সামনে ইউভি রে-ও ক্ষতিকর। তাই হেয়ার প্রোটেকশন খুবই জরুরি। এর পাশাপাশি জলির সাবধানবাণী, যে ধরনের প্রোডাক্টই লাগান চুলে, সেগুলো যেন একটু ভালো মানের হয়। সস্তার জিনিস আখেরে কিন্তু কাজে দেবে না।