বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ব্যোমকেশ বক্সী বাস্তবে কোন পোশাকে সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ?
তেমন কোনও প্রায়োরিটি বা প্রেফারেন্স নেই আমার। যখন যে জায়গায় আছি, তার উপরে নির্ভর করে। আজকাল চাকরিবাকরিতেও নেই, তাই ফর্ম্যালস পরাটা একদমই হয় না। টাই পরতে অবশ্য কোনওদিন পছন্দ করতাম না। আমি যখন শ্যুটিংয়ে দীর্ঘ সময় কাটাই, বা তার জন্য লম্বা সময় ধরে জার্নি করতে হয়, তখন ট্র্যাক প্যান্ট আর টি শার্টেই আরাম। আগে ডেনিম আর শার্টও ছিল প্রিয়। আজকাল সেটা আর হয় না। উপলক্ষ-নির্ভর হয়ে গিয়েছে সবটাই। পাজামা-পাঞ্জাবি পরতেও বেশ লাগে। পুজোর মধ্যে তো বটেই। ব্যোমকেশ বক্সীর মতো ধুতিও পরি। সামলাতে কোনও অসুবিধা হয় না। তবে নিজে পরতে পারি কাজ চালানোর মতো। অতটা স্বচ্ছন্দ নই। কিন্তু কেউ পরিয়ে দিলে দিব্যি ক্যারি করতে পারি।
রণবীর সিংয়ের মতো পোশাক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে কতটা ভালোবাসেন?
না না একদমই নয়! আমি ভীষণই রেট্রো লুক পছন্দ করি। আমায় বলতে পারেন ভীষণ ওল্ড স্কুল।
অ্যাকসেসরিজের মধ্যে কী কী মাস্ট?
আমার কিছুই এখন মাস্ট নয়। একটা সময় ঘড়ি ছিল। এখন সেটাও না হলে চলে যায়।
পুজোয় স্পেশাল কী কী পরার প্ল্যান?
পুজোয় প্রচুর ইভেন্টস থাকে, যেতে হয় এদিক ওদিক। তাই সেই ইভেন্ট অনুযায়ীই পোশাক পরব। তবে বাঙালির বড় উৎসব, তাই এথনিক ওয়্যারে গুরুত্ব তো দিতেই হবে।
যেসব তরুণ আবীরের মতো স্মার্টনেস পুঁজি করে তরুণীদের হৃদয়হরণ করতে চান, তাঁদের জন্য এবার পুজোর টিপস?
নিজের খেলাটা ভাই নিজেকেই খেলতে হবে! মানে নিজের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। অন্যদের দেখে উৎসাহিত হতে পারো, অনুপ্রাণিত হতে পারো, কাজটা নিজেকেই করতে হবে। নিজেকে বোঝা খুব জরুরি। আমি যদি দেখি কোনও একটা পোশাক আমাকে একেবারেই মানাচ্ছে না, কিন্তু সেটা ট্রেন্ড তাই সেটাই পরতে হবে, তাহলে কিন্তু সব গোলমাল হয়ে যাবে। বা এমন একটা জুতো পরে কায়দা মারলাম যে ফোস্কা পড়ে পায়ের দফারফা, হাঁটতেই পারলাম না! তাই নিজে কী পারব, কতটা পারব, এটা বুঝতেই হবে। আর একটা বিষয় হল আত্মবিশ্বাস। আমি নিজে ওল্ড স্কুল, কিন্তু আমি মানি প্রত্যেকের স্বাধীনতা আছে, নিজেদের ইচ্ছেমতো পোশাক পরার। আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কেউ যা খুশি ক্যারি করতে পারে। তবে উপলক্ষ এবং কাদের সঙ্গে সময় কাটাব, তার উপরে নির্ভর করেই পোশাক পছন্দ করা ভালো।
বাস্তবের সত্যবতী কে (স্ত্রী নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়) কোন সাজে দেখতে পছন্দ করেন?
অবশ্যই শাড়ি।
সাজগোজ নিয়ে কত্তাগিন্নির মতানৈক্য হয় না মত বিনিময় হয়?
না এটায় মূলত মত বিনিময়টাই হয়!
আপনার কাছে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা কী?
প্রত্যেকের ধারণা এ ব্যাপারে আলাদা। আমার ধারণা অন্য কারও উপরে চাপিয়ে দেব না। অন্যদেরও অনুরোধ করব তাঁরা যেন তাঁদের ধারণাটা দয়া করে আমার উপরে চাপিয়ে না দেন। আমি মনে করি ‘বিউটি লাইজ ইন দ্য আইজ অব দি বিহোল্ডার’, অর্থাৎ যে যেভাবে দেখবে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আর আমার কাছে সৌন্দর্যের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা। এর সঙ্গে নিজেকে নিজের ভালো লাগাটাও খুব জরুরি।
এখন সবটাই মিনিমালিস্টিক: সোহিনী
সত্যবতীর কাছে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা কী?
সত্যবতীর কথা যদি বলি, তাহলে তার কাছে পিওরিটিই সৌন্দর্য। তার সঙ্গে ব্যক্তিত্ব আর আভিজাত্যের মিশেল। কারণ সত্যবতী নিজেও নিজেকে সেভাবেই উপস্থাপিত করে। তার ভেতরের রুচি, স্বচ্ছতা ও স্নিগ্ধতা সেখান থেকেই প্রকাশ পায়। উচ্চকিত কোনও কিছু সত্যবতীর পছন্দ নয়। অতিরিক্ত নয়, মিনিমালিস্টিক সব কিছু। সেটাই তার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। মানুষমাত্রেই সুন্দর। ঈশ্বর যাকে যেভাবে পাঠিয়েছেন, তাতেই সে সুন্দর। তাতে অনেক মেকআপ, অনেক দামি পোশাক, অনেক গয়না চাপালে তার ভেতরের সৌন্দর্যটা চাপা পড়ে যায়— এটাই সত্যবতী মনে করে।
সোহিনী সরকার বাস্তবে কোন পোশাকে সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ?
যা আরামদায়ক সেটাই প্রিয়। যদি ঘুরতে যাই তাহলে ট্র্যাক প্যান্ট, টি শার্ট আর স্নিকার্স থাকবে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় আবার আলাদা পোশাক। অর্থাৎ মেজাজ বা আবহ অনুযায়ী পাল্টে যায় পোশাকের রকম। বাড়িতে থাকলে সবচেয়ে পুরনো রংচটা টি শার্ট আর পাজামাটাই নেব। সাজগোজ করার ইচ্ছে হলে কটন শাড়ি, সুন্দর ব্লাউজ, রুপোর গয়না এই ধরনের কিছু পরি। স্কার্ট পরতেও খুব ভালোবাসি। কিন্তু বেশি আরাম জিনস আর টি শার্টে।
পোশাক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে কতটা ভালোবাসেন?
এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য যে সময়টা লাগবে, সেটা নেই। আর সত্যি কথা বলতে কি সেই সময়টা আমি দিতেও চাই না। আমার হাইট ও চেহারা অনুযায়ী কোন কোন পোশাকে ভালো লাগে আমায়, জানি। সেগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পরি। কখনও যে এক্সপেরিমেন্ট করি না বা করিনি তা নয়। কিন্তু খুবই কম। কাউকে কেউ দেখেনি যে পোশাক পরতে, এমন কিছু আমি একদমই পরতে পারব না। আমার কটন বেশি পছন্দ। তা সে স্কার্ট হোক, পালাজো হোক, জাম্পস্যুট হোক— এই ধরনের ফাঙ্কি কিছু ভালো লাগে। ব্লেজার পরতেও দারুণ লাগে আমার। অনেক সময় কোনও সান্ধ্য পার্টিতে ব্লেজার পরে যাই।
পোশাক কি ব্যক্তিত্বের নির্ণায়ক?
আমি অভিনেত্রী। তাই নানা পোশাক ট্রাই করতেই হয় চরিত্র অনুযায়ী। লুকটাও পাল্টে যায়। কারণ একই লুকে দেখা গেলে সেটার মধ্যে বৈচিত্র্য থাকে না। এখন যদি আমি সত্যবতীর মতো সেজে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াই তাহলে এমন চরিত্রের জন্যই শুধু আমায় ভাবা হবে। কোনও নেগেটিভ শেডের চরিত্র বা হাইপ্রোফাইল কোনও চরিত্র এলে তখন লুক বদলাবেই। আর ব্যক্তিত্ব অনেকটাই অন্তরের বিষয়। পোশাক তার পরিপূরক মাত্র। সবসময় তাও হতে হবে, এমন নয়। উপর উপর বিচার করা যায় না কাউকে। একজন মানুষের সঙ্গে কথা না বলে তার ব্যক্তিত্ব বোঝা সম্ভব হয় না। পোশাক তাই অলঙ্কার, সেটা দিয়ে কারও ব্যক্তিত্ব নির্ণয় করা আমার মনে হয় না ঠিক হবে।
এবার পুজোয় কী কী পরার প্ল্যান? ফ্যানদের জন্য কিছু টিপস?
পুজোর প্ল্যান হয়নি সেভাবে। এমনিতেই করোনার দাপটে আগে থেকে কিছু প্ল্যান করা ছেড়ে দিয়েছি। তবে পুজোতে থাকব শহরেই। তখন শাড়িই ভালোবাসি। ফ্যানদের বলব, ফ্যাশনের নতুন সংজ্ঞা মেনে সবটাই মিনিমালিস্টিক রাখো। ফ্যাশন সেটাই, যেটা খুব ন্যাচারাল। আলিয়া ভাটের বিয়েতেই আমরা দেখেছি, কতটা মিনিমালিস্টিক করা যায় সবকিছু। হালকা মেকআপ, হেয়ারস্টাইল সাধারণ— অর্থাৎ ব্যক্তিত্বকে ছাপিয়ে পোশাক বা বাকি সাজগোজ নয়। আসল হচ্ছে ভিতরের মানুষটা।
ত্বক বা চুলের পরিচর্যায় সময় কতটা দেন?
প্রচুর মেকআপ করতে হয় বলে রোজ ভালোভাবে মেকআপ তুলে ফেলার চেষ্টা করি। তারপর এত ক্লান্ত লাগে যে কিছু করা হয় না। চেষ্টা করি সপ্তাহে একটা ফেস প্যাক লাগাতে। বা একটু ফলের টুকরো হয়তো মুখে ঘষে নিলাম। রাতে নাইট ক্রিম। দিনে সানস্ক্রিন লোশন মাস্ট। এর বেশি কিছু নয়। চুলেও প্রচুর স্প্রে হিট এসব দেওয়া হয়। তাই বাড়ি ফিরে রোজ শ্যাম্পু করে নিই। মাসে একটা দিন হার্বাল হেয়ারপ্যাক লাগাতে চেষ্টা করি। কারণ এটা বেশ সময়সাপেক্ষ।
অ্যাক্সেসরিজের মধ্যে ব্যাগে কী কী মাস্ট?
স্টুডিও ফিক্স, লিপ জেল। লিপস্টিক সবসময় ভালোবাসি না। ভালো পারফিউম, হ্যান্ডক্রিম আর অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন।