নামেই উৎসব। সে মরশুমেও এবার স্বস্তি নেই। আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। তবু কেশসজ্জা ছাড়া আর কত দিন চলে? বাহারি চুলের কেতায় মুগ্ধ করুন নিজেকে, সঙ্গে বাকিদেরও। হেয়ার এক্সপার্ট জাভেদ হাবিব এবং প্রিসিলা কর্নারের সঙ্গে কথা বলেছেন অন্বেষা দত্ত।
রঙেই পাল্টাবে লুক
জাভেদ হাবিব জানালেন, গোটা ভারতের কথা ধরলে উৎসবের মরসুম শুরু হয়েই গিয়েছে। এখন সকলেই চুল কাটার তুলনায় নজর দিচ্ছেন অন্যরকম কেশসজ্জায়। তার মধ্যে আসছে কালার করা বা কোনও কেমিক্যাল দিয়ে চুলের ভিন্ন লুক নিয়ে আসা। চুল কতটা লম্বা, সেটা নিয়ে এখন আর মাথা ঘামাতে চাইছেন না কেউ। কেমিক্যাল শুনে ভয় পাবেন না। আমার মতে, ভালো কেমিক্যাল চুলের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে প্রফেশনাল গ্রুপের জিনিস ব্যবহার করুন। কারণ ক্ষতি হয় উল্টোপাল্টা সব কেমিক্যাল ব্যবহার করা থেকেই।
তাঁর কথায়, ‘আপনাদের রাজ্যে চুল কাটতে গেলে দেখেছি বেশিরভাগ মহিলাই চুলের লেন্থ নিয়ে ভাবেন। সেটা ছোট-বড় করার মধ্যেই থাকেন। ফ্রিকসের দিকটাও গুরুত্ব দেন কেউ কেউ। লং বা শর্ট ফ্রিকস। এর বাইরে খুব বেশি কিছু করেন না।’
হাবিবের পরামর্শ, উৎসবের আমেজের কথা ভেবে কেউ ছোট করে রাখবেন, কেউ বা বড় রাখবেন চুল। রোল করে বা স্ট্রেটনিং করেও দেখতে পারেন। স্টাইল এখন অনেকটাই যন্ত্রনির্ভর। তাই সবসময় চুল কেটেই অন্য রকম লুক আনতে হবে, তার কোনও মানে নেই।
মাঝারি মাপের চুল যাঁদের, তাঁদের একটু সমস্যা হয়। তাঁরা লুক রিফ্রেশ করার জন্য একটা কাট করিয়ে নিতে পারেন। দু’টো লেয়ারিংয়ে কাট করাতে পারেন। লেয়ারিংয়ে বাঁধতেও পারেন, আবার খুলেও রাখতে পারেন। তবে কতটা লেন্থে লেয়ারিং হচ্ছে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটার উপরে অনেক কিছু
নির্ভর করবে।
শেষে এই হেয়ার এক্সপার্ট বললেন, ‘চুলের যত্নের জন্য একটাই কথা। রোজ শ্যাম্পু করুন। আবার বলছি, রোজ, নিয়ম করে। এর কোনও বিকল্প নেই।’
আগে চুলে তেল লাগিয়ে তারপরে শ্যাম্পু করে ফেলুন। তাতেই চুল ভালো থাকবে। আপনাদের রাজ্যে আর্দ্রতা অনেক বেশি বলে ঘামটাও বেশি হয়। তাতে চুলের খুব ক্ষতি হয়। তাই সেটা কনট্রোল করার উপায় নেই। কিন্তু
চুল ভালো রাখতে রোজ শ্যাম্পু করাটাই সেরা দাওয়াই।’
কদর লম্বা চুলের
প্রিসিলা কর্নার জানাচ্ছেন, মাস্ক পরতে হচ্ছে বলে এখন চুলের অনেক রকমের স্টাইল করা যাচ্ছে না। আবার আলাদা লুক আনা যাচ্ছে, এটাও সত্যি। মুখ ঢাকা পড়ছে বলে চুলের দিকে নজর বেশি পড়তে বাধ্য। তাঁর মতে, ‘দু’টো স্টাইল এই মুহূর্তে খুব পপুলার। একটা হচ্ছে, বাউন্সি হেয়ার। আর একটা হচ্ছে লং হেয়ার। লম্বা চুলের ফ্যাশন কিন্তু আবার ফিরে এসেছে। পাশাপাশি শর্ট হেয়ারও খুব পছন্দ করছেন অনেকে। শর্ট হেয়ার হলে মাস্ক পরে থাকলে সামলাতে অনেক সুবিধা হয়। লং হেয়ারে কার্লস থাকলেও ভালো লাগে। এখন সেই কার্লসটাও গুরুত্ব দিচ্ছেন অনেকে। মুখের অনেকটাই চুলের সৌন্দর্য দিয়ে মেকআপ করার চেষ্টা করছেন সবাই। তার সঙ্গে কালার করা (মূলত রিচ কালার-চকোলেট জাতীয়) লেয়ার কাটস— এগুলোও অনেক বেশি হচ্ছে। চুলের নারিশমেন্টও গুরুত্ব পাচ্ছে।’
তিনি জানালেন, এর সঙ্গে সঙ্গে ক্লাসিক বব আর পিক্সি হেয়ারকাটও চলছে ভালোই। মিডিয়াম লেন্থ এখন কেউ রাখতে চাইছেন না। কারণ ওই লেন্থটা মাস্কের জন্য সুবিধাজনক নয়। বাড়ি থেকে কাজের জন্য কম্পিউটারের সামনে বসলেও চুল সুন্দর করে গুছিয়ে না রাখলে চোখে লাগবে। তাই শর্ট হেয়ার ভালো। প্রিসিলার পরামর্শ, যাঁদের মিডিয়াম লেন্থ, তাঁরা চুলে যেন বেশি লেয়ার না রাখেন। তাহলে চুল সামলাতে বেশি মুশকিল হয়। ছোট চুলে বেশি লেয়ার ভালো লাগে না। বব বা লেয়ার কাটাই ভালো। লম্বা চুলে লেয়ারস রাখলে সুন্দর লাগবে। অনেকে কালারও চাইছেন।