বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
ঘরে বাইরের আরাম
হাল্কা ঢিলেঢালা পোশাকটি দেখলে সবার আগে একটাই শব্দ মাথায় আসে, সেটা হল আরাম। কাফতানের এখন অবশ্য নানা রূপ। কাফতান নাইটি তো ছিলই। একসময়ে লোকে কাফতান বলতে সেটাই শুধু বুঝত। এখন তার রূপ একটু পাল্টে গিয়ে এসেছে কাফতান গাউন। তা ছাড়াও কাফতান টপ, কুর্তি, ড্রেস- কী নেই সেই তালিকায়! সবচেয়ে বড় কথা, বর্ষার ভ্যাপসা গরম হোক বা গনগনে গরমকাল, কাফতানের জুরি মেলা ভার। বোহেমিয়ান আর ট্রাইবাল প্রিন্ট, কখনও বা ইন্ডিগোর প্রিয় শেড, এমন নানা নকশায় কাফতান এখন আর শুধু ঘরের পোশাক হয়ে আটকে নেই।
সেলেব প্রিয়
সেলিব্রিটিরাও মজেছেন কাফতানের আরামে। কান চলচ্চিত্র উৎসবে হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি একবার হাজির হয়েছিলেন অলিভ গ্রিন কাফতানে। সে সময়ে তিনি ছিলেন সন্তানসম্ভবা। বছর তিনেক আগে জেনিফার লোপেজও আকাশি নীল কাফতানে একটি অনুষ্ঠানে এসে চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। হালের লকডাউনের সময় করিনা কাপুর, সোনম কাপুর আহুজা, মালাইকা অরোরার মতো বলিউডের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে জানান দিচ্ছেন কাফতান-প্রেমের কথা। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে আমাদের মতো অনেকেই আপন করে নিয়েছেন কাফতানকে।
ডিজাইনারের চোখে
এ শহরের ডিজাইনার শুভা মিত্রও জানালেন, বাড়িতে শুধু রাতে পরার জন্য কাফতানের দিন কিন্তু শেষ। এখন কাফতানের লেন্থ ছোট করে তার ধরনটাই পাল্টে গিয়েছে। তাই লেন্থ কমে সেটা ড্রেস বা টপের মতো হয়ে যাওয়ায় অনেকেই এটা বাইরে পরার কথা ভাবতে পারছেন। তাঁর কথায়, ‘এর সঙ্গে আমরা সুন্দর সুন্দর মোটিফ দিয়ে প্রিন্ট করছি। ফ্যাশন আইকন মোটিফ রেখেছি, মেরিলিন মনরোর মুখের প্রিন্ট বা মেক্সিকান পেইন্টার ফ্রিডা কাহলোর মুখও করেছি। এটা আরও অ্যাট্রাক্টিভ লাগছে। খুব ফ্যাশনেবল লুক আসছে। আর একটা কথা, যাঁদের ভারী চেহারা, তাঁদের জন্য কাফতানের জবাব নেই। তাঁদের কাছে এটা দারুণ ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে যাঁরা স্থূল চেহারা বলে সাধারণ ড্রেস পরতে একটু কিন্তু কিন্তু করতেন, তাঁদের কাছে এটা ভালো অপশন। যে-ই পরুক, ফিগারে একটা ব্যালান্সড শেপ আসবে। তাই সাধারণ ড্রেস না পরে অনেকে কাফতানে ভরসা পাচ্ছেন।’ শুভা এখন কাফতানের জন্য ভালো সাড়াও পাচ্ছেন। বাড়ির বাইরে পরতে চান বলেই অনেকে অর্ডার করছেন, জানালেন তিনি। তবে শুধু সেলেবরা পোস্ট করছেন বলেই রাতারাতি কাফতান জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে, সেটা বলছেন না শুভা। তাঁর কথায়, ‘আগে মানুষ সাত-পাঁচ না ভেবে অনেক ধরনের পোশাক কিনে ফেলতেন, যেটা একবারের বেশি বিয়েবাড়ি-পার্টি ছাড়া আর হয়তো পরাও যাবে না। কমফর্টের কথা না ভেবেই কিনে ফেলা। এখন কত দিন পরা যাবে, সেটা ভাবছেন। কাফতানের ক্ষেত্রে কখনও স্টোল দিয়ে পরলে, কখনও বা জুয়েলারি দিয়ে পরলে আলাদা লুক আসবে। আর সেলিব্রিটিদের দেখে একটা প্রভাব তো কাজ করেই। তবে কাফতানে আরাম আর ফ্যাশন সেন্স দু’টো খুব ভালো মিশে গিয়েছে।’ শুভা তাঁর অর্গ্যানিক ফ্যাব্রিকে কাফতানের রেঞ্জও সাধ্যের মধ্যেই রেখেছেন, ১৪৯৯-২৪৯৯টাকা। শর্ট, লং, অ্যাঙ্কল লেন্থ, থ্রি কোয়ার্টার সব ধরনের কাফতানই করছেন তিনি।
কত রূপে
বাড়িতে বসে কাজেও খুব সুবিধেজনক কাফতান। আর সেই জন্যই জনপ্রিয়তা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে বহু পুরনো পোশাকটির। যে কোনও বয়সের যে কোনও চেহারার জন্য উপযুক্ত কাফতান। কেউ কেউ তো কাফতানকে ফ্যাশনের এত রকম উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে তুলছেন, যে তা অনায়াসে পরে ফেলতে পারেন বিয়েবাড়িতেও। সে কাফতান কটনের না হয়ে সিল্ক বা আরও একটু গর্জিয়াস মেটেরিয়ালের হতে পারে। কাফতানে সেজে বাইরে বেরতে এখন দু’বার ভাবার কিছু নেই। স্নিকার্সের সঙ্গে সুতির প্রিন্টেড কাফতান মানানসই। হাঁটতে বেরলেও পরতে পারেন অনায়াসে। কোনও কাফতান যদি বেশি খেলানো হয়, তাহলে কোমরে একটা বেল্ট পরে স্মার্ট লুক নিয়ে আসা যায়। বাড়িতে কাফতােনর সঙ্গে অবশ্য অ্যাকসেসরিেজর কথা না ভাবলেও চলবে। সেখানে আরােম শুরু, আর আরােমই শেষ কথা।