বিদ্যার্থীদের কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। বিবাহ প্রার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের ... বিশদ
নিয়মিত শরীরচর্চা এখন আমাদের দৈনন্দিন লাইফস্টাইলের অঙ্গ। যোগব্যায়াম ট্রেনিং সেন্টারে হোক বা বাড়িতে, জিমে হোক বা পার্কে সবুজ ঘাসে রোজ শরীর নিয়ে কসরত করতেই হবে সুস্থ থাকার জন্য। বয়েস, স্বাস্থ্য ও শরীরের ফিটনেস দেখে যোগ-শিক্ষক বা জিম ইন্সট্রাক্টর ঠিক করে দেন শরীরচর্চার রুটিন। সঙ্গে অবশ্যই চাই ডায়েট চার্ট। আর কী চাই বলুন তো? শরীরচর্চার জন্য উপযুক্ত পোশাক ও অ্যাক্সেসরিজ। আর সেই পোশাক হওয়া চাই কেতায় মোড়া। সঙ্গে চাই আরামও। রিবক, পিউমার মতো নামীদামি স্পোর্টসওয়্যার ব্র্যান্ডগুলো তো বটেই ভ্যান হিউসেন, পিটার ইংল্যান্ডের মতো সংস্থাও ফিটনেসওয়্যারে হাত বাড়িয়েছে। এমনকী ডলারের মতো ইনারওয়্যারের কোম্পানিও এই ধরনের পোশাক তৈরি করছে। নতুন নামও হয়েছে এর- অ্যাথেলিজারওয়্যার ।
কী এই অ্যাথেলিজারওয়্যার?
একই ব্যাখ্যা পাওয়া গেল প্রায় সব সংস্থার কাছে। শুধু যোগব্যায়াম বা শরীরচর্চার জন্য নয়, একে মাল্টিপারপাস ওয়্যারও বলা যায়। ধরুন আপনি ট্রাক প্যান্ট আর স্লিভলেস টিশার্ট পরে জিমে কসরত করছিলেন, সেখান থেকে বন্ধুর সঙ্গে ব্রাঞ্চে যাবেন। চিন্তার কিছু নেই, এই রেঞ্জেই আছে হালকা শোয়েট শার্ট বা জ্যাকেট যা ওই ট্র্যাক প্যান্টের সঙ্গে মানানসই। শুধু মনে করে সঙ্গে নিতে হবে এই যা। আবার এমনও হতে পারে, আপনি বাড়িতে যোগাসন করছেন কেপরি আর টপ পরে, তারপরই হয়তো আপনাকে বেরতে হবে গ্রসারি কিনতে বা বাজার করতে। ওপরে গলিয়ে নিন প্রিন্টেড শোয়েট জ্যাকেট। লুকটাই বদলে যাবে। পার্কে জগিং করে ফেরার পথে লেকের ধারে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেও এই স্টাইলিশ যোগ-বেশের জুড়িদার নেই। তবে এটা এই সংক্রমণের সময়ে সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। যোগ ব্যায়াম শেষ করতে না করতেই হোম অফিস শুরু হয়ে যায়। এমন পোশাকে থাকতে হবে যাতে ভিডিও কলে বসতে অসুবিধা না হয়। যে কোনও ব্র্যান্ডের অ্যাথেলিজার কালেকশন এমনই মাল্টিপারপাস ওয়্যার।
কেমন হবে ফ্যাব্রিক?
ওয়ার্ক আউট আর ওয়ার্ক ফ্রম হোম দু’টির জন্যই চাই কমফোর্ট। তাই পোশাক এমন হতে হবে যা পরে অতিরিক্ত গরম হবে না, ভারী হবে না, খসখসে বা রাফ টেক্সচারের হবে না। সব নামী কোম্পানির যোগাওয়্যারই এখন তৈরি হচ্ছে ফোর ইন ওয়ান স্মার্ট টেক ফ্যাব্রিকে। এই মেটিরিয়াল খুব নরম মোলায়েম ও স্ট্রেচেবল। স্ট্রেচেবল হওয়ায় আসনের সময়ে হাত পা স্ট্রেচ করতে অসুবিধে হয় না, কোথাও টান পড়ে না। কেউ কেউ আবার কুইক ড্রাই, অ্যান্টি ওডর ফিনিশ, স্টেন রিলিজ ফর্মুলা যুক্ত করেছে এর সঙ্গে। শরীরচর্চা করলে ঘাম হবেই, তা দ্রুত শুষে নেওয়ার ক্ষমতা আছে এই নিউ এজ ফ্যাব্রিকের। এছাড়া সহজে দাগ ছোপ পড়বে না এবং অতিরিক্ত ঘাম হলেও কোনও দুর্গন্ধ বেরবে না, এমনই দাবি করছে সংস্থাগুলো।
ডিজাইনে নতুন দিশা
শরীরচর্চার জন্য যে ধরনের পোশাক আমাদের দরকার হয় তা হল, ট্র্যাক প্যান্ট, জগার্স প্যান্ট, কেপরি, লেগিন্স, বারমুডা, থ্রি কোয়ার্টার লেন্থ প্যান্ট, স্লিভলেস টিশার্ট, হাফস্লিভ টিশার্ট, টপ। যোগাসনের সঙ্গে যেহেতু মনের সংযোগ রয়েছে তাই খুব উগ্র চড়া রং একেবারেই চলবে না। খুব চকচকে মেটিরিয়ালও চলবে না। ম্যাট ফিনিশড সফট কটনে তৈরি পোশাকের রং তাই আর্দি বা প্যাস্টেল শেডের হওয়াই ভালো। সিঙ্গল কালার টিশার্ট বা টপের সামনে কোনও মোটিফ থাকতে পারে। তবে মোটিফের ক্ষেত্রেও তা যেন খুব চোখ ধাঁধানো না হয়। প্রিন্ট পছন্দ হলে হালকা জিওমেট্রিক বা ছোট ফ্লোরাল চলতে পারে। ছোটদের যোগা কালেকশনে ফুল, পাতা, পাখির ছবি থাকতেই পারে, তবে কার্টুন ক্যারেকটার নয়। কারণ তাতে ছোটদের ব্যায়ামে কনসেনট্রেট করতে অসুবিধা হবে।
যোগাসনের অ্যাক্সেসরিজ
স্টাইলিশ পোশাকের সঙ্গে চাই ফ্যাশনেবল সাজ সরঞ্জাম। জুতো জিমের জন্য, জগিংয়ের জন্য এবং হাঁটার জন্য খুব ইমপরট্যান্ট। ভালো ব্র্যান্ডের একটু দামি আরামদায়ক জুতো কিনবেন। বাড়িতে যোগাসন করার জন্য জুতো দরকার নেই। খালি পায়ে বা সুতির মোজা পরে করতে পারেন। পার্কে বা বাগানে শরীরচর্চা করলে হালকা ক্যানভাস শু পরা যায়। পোশাকের সঙ্গে মানানসই কয়েকটা শু থাকলে কেতা দেখানো যায় ঠিকই, তবে তা যেন ভালো কোয়ালিটির হয়। যোগাসন করার সময়ে চোখেমুখে যাতে চুল না পড়ে তার জন্য হেড ব্যান্ড, হেয়ার ব্যান্ড বা হেড গিয়ার চাই। আর চাই রিস্ট গার্ড বা রিস্ট ব্যান্ড। এইগুলোও ভালো কোয়ালিটির হতে হবে। কারণ মনে রাখতে হবে,
এই সাজপোশাকের সঙ্গে স্বাস্থ্য সংযোগ রয়েছে। তাই কেতাও চাই, সুরক্ষাও চাই।
তথ্যসূত্র: ভ্যান হিউসেন , পিটার ইংল্যান্ড, পিউমা, ডলার
এখন যা যা কাজে দেবে
এই মুহূর্তে বেশিরভাগ সময় বাড়ি বসে কাজ করে তৈরি হচ্ছে অন্য রকম অসুবিধা। অফিসের মতো ঠিকঠাক চেয়ার টেবিলে বসা যাচ্ছে না। ল্যাপটপ নিয়ে কখনও বিছানায় বসে, কখনও বা সোফায় গা এলিয়ে বসে তৈরি হচ্ছে নানা ব্যারাম। মনের উৎকণ্ঠাও কমছে না। কবে আবার সব স্বাভাবিক হবে, প্রশ্নটা সারাক্ষণ তাড়া করছে।
যোগপ্রশিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এই সময়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবচেয়ে সহজ ও সাধারণ প্রাণায়ম খুবই উপযোগী। শুধু তাই নয়, ইতিবাচক মনোভাব এবং প্রাণশক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও প্রাণায়মের জুড়ি নেই। জোরে জোরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার মধ্যে দিয়ে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা অনেকটাই কমানো সম্ভব।
ইমিউনিটি বাড়াতে কাজে দেবে মৎস্যাসনও। এই আসনের ফলে নাসারন্ধ্রের ভেতরের অংশ পরিষ্কার হয়ে যায়। সর্দিকাশির মরশুমে তাই যে কোনও ধরনের কনজেশন থেকে মুক্তি মেলে এই আসন করলে।
মনের চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে বিপরীত করণী মুদ্রা। এটি করলে স্নায়ুগুলোর মধ্যে সংযোগ ভালো তৈরি হয়। রক্ত চলাচলও ভালোভাবে হয়।
উত্তনাসনে সাইনাস এবং মিউকাস মেমব্রেন সুরক্ষিত থাকে। এটিও বুকে সর্দি জমার আশঙ্কা কমায়।
এ ধরনের আরও আসন প্রশিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নিয়ে বা ভিডিও কলে দেখে নিয়ে নিয়মিত সঠিকভাবে করতে পারলে শরীর তরতাজা হবে, টক্সিনের মাত্রা কমবে, মন থেকে নেতিবাচক চিন্তা দূর হবে, শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করতে পারবে পূর্ণ উদ্যমে।