মাস্ক পরে বিয়ে হয় নাকি! কেউ বর-কনেকে দেখবে না? এই সময়ে যাঁদের বিয়ে ছিল, তাঁরা মনেপ্রাণে চাইছেন সব কিছু দ্রুত ছন্দে ফিরে আসুক। কী বলছেন সেলিব্রিটি মেকআপ আর্টিস্ট অনিরুদ্ধ চাকলাদার? লিখেছেন অন্বেষা দত্ত।

২৫ জনের বেশি জমায়েত চলবে না। তাহলে বিয়ে তো প্রায় বন্ধ।
কনে সাজানোর কী হবে?
ব্রাইডালের জন্য আমার আপাতত কোনও বুকিং নেই। যেগুলো ছিল, সেগুলো এখন পিছিয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী বাকি সিদ্ধান্ত হবে। যাঁরা বুকিং করিয়েছিলেন, তাঁরা নতুন তারিখ ঠিক করলে আবার সব সেইমতো হবে। এ মাসের শেষে অবশ্য একটা ব্রাইডাল আছে। তবে বাকি যা সব পিছিয়ে গিয়েছে, সেগুলো পুজোর পরেই সব ভাবব। নভেম্বরের আগে একেবারেই নয়।

তাহলে এখন কী ভাবছেন?
এটা একটা কঠিন পরিস্থিতি। অধৈর্য হয়ে কোনও লাভ নেই। এটা একা আমার ক্ষেত্রে ঘটছে, এমনটাও নয়। একার কোনও সমস্যা হলে বেশি খারাপ লাগা তৈরি হয়। মনে হয়, পুরো পৃথিবী দৌড়চ্ছে। তুমি একা এক কোনে আটকে আছ। এটা তো তেমন সিচুয়েশন নয়। সবাই আটকে আছে। বলা ভালো, আটকে ছিল। এখন আস্তে আস্তে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা শুরু করেছে। এটা সব মিলে একটা কমিউনিটি ফিলিং। মানে তোমার থেকে আমার অবস্থাটা আলাদা নয়।

কিন্তু কাজ তো বন্ধ?
তা তো বটেই। অসুবিধে কি হচ্ছে না? দৈনন্দিন জীবনযাপনে, ইকনমির দিক থেকে। সব দিকেই অসুবিধে হচ্ছে। কিন্তু যখন তুমি দেখ, তোমার মতো আরও অনেকেরই সেটা হচ্ছে, তখন নিজের সমস্যাটা বেশি বড় বলে মনে হয় না। তাই এই অনুভূতিটা হলে কোথাও যেন মনটা একটু শান্তি পায়। আমার সঙ্গে আরও পাঁচটা মানুষ আছে। যখন কোনও ইনডিভিজুয়াল প্রব্লেমের মুখোমুখি হয় মানুষ, তখন স্ট্রেসটা অনেক বেশি।

কাজকর্ম শুরু হলে?
বিয়ে না হলেও শ্যুট শুরু হয়েছে। আরও হবে। এ ভাবেই এগবে। এটা তো কারও কাছেই জানা ব্যাপার ছিল না। আজ বাইপাস সার্জারি করতে গেলে, পাঁচ জন পাঁচটা উপায় বলবে। এই যে এখন যে অপারেশনটার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, সেটা জীবনে কারও হয়নি। কেউই বলতে পারছে না, কী হবে। সবাই বলছে, দেখা যাক। সবাই মিলেই এগচ্ছে। যেমন ভাবে ছোট ছোট করে কাজ এগচ্ছে, আমরাও সেভাবে এগব। যেমন আজই একটা অ্যাওয়ারনেস ভিডিও শ্যুট হল। মেকআপের নতুন ডাইমেনশন কীরকম হতে পারে, তাই নিয়ে। সেফটি, হাইজিন এগুলোর দিকে খেয়াল রেখে। মেকআপ একেবারেই ইন্টিমেট এলিমেন্ট। সেখানে সামাজিক দূরত্ব রাখাটা ইম্পসিবল। সেটা কীভাবে করা যাবে, তাই নিয়ে আলোচনা করছিলাম আমরা। সবাই নানা জিনিস ভাবলে আর শেয়ার করলে একটা নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করা যাবে। সব স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে। তবে নতুন ভাবে কাজটা শুরু করতে সবাই এফর্ট দেবে।

পিপিই স্যুট ব্যবহারের ভাবনা কি আছে?
সালঁ-য় বা পার্লারে সেটা সম্ভব। কারণ একটা কন্ট্রোলড জায়গায় থেকে ওঁরা কাজ করেন। সারা দিনে অনেক জায়গা থেকে সেখানে লোক আসে। কিন্তু শ্যুটিং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে হবে। ধরে নাও একজনের জন্যই কাজ করতে হচ্ছে। চেনা পরিচিত মহলেই। আমি তার ট্র্যাক রেকর্ড জানি, সে আমারটা জানে। আমার তো মনে হয় না, আমাদের কাজটা পিপিই স্যুট পরে করা সম্ভব। আমি অন্তত পারব না। তার চেয়ে কিছু দিন কাজ করব না। মাস্ক, শিল্ড, এপ্রন এগুলো ব্যবহার হতে পারে। ভয় পেয়ে গেলে চলবে না। আবার রেকলেস হওয়ারও কোনও জায়গা নেই।