দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
তির তির করে ডান চোখটা নেচে উঠল তিতিরের। লক্ষণ ভালো নয়। তখনই বেজে উঠল মোবাইলটা। বসের নম্বর। ভাগ্যে কী আছে কে জানে?
শোনো তিতির, কাল তিনটের সময় ভিডিও কনফারেন্সে ক্লায়েন্ট মিট আছে। তোমাকেই সামলাতে হবে। যা প্রস্তুতি নেওয়ার নাও।
প্রস্তুতি? মাথায় হাত তিতিরের। বস বলেন, তার ভ্রুভঙ্গিমায় নাকি আবিষ্ট হন ক্লায়েন্টরা। এখন তো সেখানে আগাছার জঙ্গল! এভাবে কি ভিডিও কনফারেন্স জয়েন করা যায়? ঠোঁটের উপরের অংশ, থুতনিতেও তো অনেক রোম গজিয়েছে। উপায়?
একই সমস্যা রণিতারও। অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। ইলেভেন-টুয়েলভের ছেলেমেয়েগুলো পর্যন্ত তার যে ভ্রুয়ের শাসনে জব্দ হয়, সেই ভ্রু আজ জঙ্গল। ক্যামেরা থেকে যতটা সম্ভব দূরে মুখ রেখে ক্লাস নিচ্ছে সে। পার্লার খুললেও সেখানে হাইজিনের দিকে কতটা লক্ষ্য রাখা হবে, কে জানে। তাই এখনই যাওয়ার প্রশ্ন নেই। তাহলে? বিউটি সাইটে এখন আই ব্রাও শেপার, আনওয়ান্টেড হেয়ার ট্রিমার , হেয়ার রিমুভাল কিট পাওয়া যাচ্ছে। অর্ডার দিলেই হয়। কিন্তু কতটা নিরাপদ এইসব যন্ত্র? কৌশিক-রজত বিষয়টিতে আলোকপাত করলেন।
বাজার চলতি ইকুইপমেন্টের ভালো-মন্দ
১। অনলাইনে আই ব্রাও ট্রিমার কিনে ভুরুর আকার ঠিক রেখে এক্সট্রা হেয়ার রিমুভ করতে পারেন। তবে এটা নিজে করা খুব সহজ নয়। যে দিকের আই ব্রাও শেপ করবেন, সেই দিকের চোখ বন্ধ করে, এক চোখে দেখে করতে হবে। না হলে চোখের ক্ষতি হতে পারে
২। এক দিকের ভুরুর শেপ ভালো করে দেখে নিয়ে অন্যটায় হাত দেবেন। না হলে দু’টো দু’রকম হয়ে যাবে।
৩। দেখতে পেনের মতো হলেও এটা এক ধরনের রেজার। তাই খুব সাবধানে না করলে নরম ত্বক কেটে যাবে।
৪। যেহেতু রেজার, তাই এটা দিয়ে আই ব্রাও করলে খুব তাড়াতাড়ি রোমের গ্রোথ হয়। ফলে বার বার করতে হয়। রোমের টেক্সচারেও বদল হয়। মোটা হয়ে যায়।
৫। শেপ করার পরে অবশ্যই বরফ দিয়ে কম্প্রেস করবেন । তারপর ক্যালামাইন লোশন লাগাবেন। ইনফেকশনের ভয় থাকবে না।
ওয়াক্স স্ট্রিপ কি ভালো উপায়?
১। মুখের অন্যান্য অংশে, যেমন গোঁফের লাইনে, গালে, থুতনির লাইনে, গলায় রোম হয়ে থাকলে ওয়াক্স স্ট্রিপ দিয়ে তোলা যেতে পারে।
২। ভুরুর শেপ ঠিক রেখে ওয়াক্স স্ট্রিপ দিয়ে বাড়তি রোম তোলা বেশ কঠিন কাজ। একবার লাগিয়ে টেনে তুলে ফেললে আর তো সংশোধনের উপায় নেই । হেয়ার রিমুভাল ক্রিম দিয়ে করা যায় ?
১। ভুরুর শেপ করা যায় না। চোখের চারপাশের নরম ত্বকে এই ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা উচিত নয়।
২। মুখের অন্য জায়গার রোম তুলতে ব্যবহার করা যায়। তবে সেটাও রেগুলার করা ঠিক নয়। ত্বকের ক্ষতি হয়।
৩। এতেও রোমের টেক্সচার মোটা হয়ে যায় । যেটা থ্রেডিং বা ওয়াক্স পদ্ধতিতে করলে হয় না।
বাড়িতে তৈরি করুন ওয়াক্স
আপার লিপ, চিন, গাল, গলায় গজিয়ে ওঠা রোম তোলার জন্য খুব সহজে তৈরি করে যায় ওয়াক্স। এক কাপ চিনি, এক কাপ জল, একটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে ফোটাতে থাকুন। কিছুক্ষণ পরে মিশ্রণটা জেলির মতো হয়ে যাবে। একটি পাত্রে ঠান্ডা জল নিয়ে তাতে জেলির একটা ফোঁটা ফেলে দেখুন। যদি পুঁতির মতো আকার হয়, তাহলে বুঝবেন ওয়াক্স রেডি। একটু ঠান্ডা হলে চ্যাপ্টা চামচ দিয়ে যে জায়গায় রোম আছে, সেখানে সমান ভাবে লাগান। তার ওপর মোটা কটন স্ট্রিপ করে কেটে আটকে দিন। কিছুক্ষণ রেখে কাপড়টা এক ঝটকায় টেনে তুলুন। দেখবেন রোম সব ভ্যানিশ। এটা করার পরও বরফ কম্প্রেস করবেন। ক্যালামাইন লোশন লাগাবেন। এই ভাবে তুললে ত্বকের ক্ষতি হবে না। রোমের টেক্সচারও বদল হবে না। অনেকদিন পর রোম গজাবে। সাবধান! ভুরুর রোম তুলতে এই পন্থা কখনও নয়। চোখে গরম মিশ্রণ পড়লে বিপদ। আর চোখের পাতায় পড়লে পাতা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবে।
টুইজার কিন্তু সেফ
১। একটু ধৈর্য ধরে করতে পারলে ভুরুর শেপ ঠিক করা যায় টুইজার দিয়ে। যেহেতু এতে একটা একটা করে রোম তোলা হয়, তাই শেপটা করা সহজ
২। ত্বকের ক্ষতি হয় না। তবে এক্ষেত্রেও পরে বরফ কম্প্রেস মাস্ট। ক্যালামাইন ক্রিম দিয়ে মাসাজ করে নেবেন। ইনফেকশনের ভয় থাকবে না ।
৩। বাড়িতে দু’জন থাকলে একজন অন্যেরটা করলে ভালো হবে। মা মেয়েরটা করে দিলেন আর মেয়ে মায়েরটা।
স্টাইলিংয়ে বাজিমাত
১। আপনার কি চশমা আছে? একটু মোটা ফ্রেমের চশমা থাকলে সেটা পরুন। ভুরুর অনেকটাই ঢাকা পড়বে।
২। এখন গোগো গ্লাস ফ্যাশনে ইন। পাওয়ার না থাকলেও স্টাইল করে পরে নিন। ভুরুর খুঁত ঢাকা পড়ে যাবে।
৩। কপালের দিকের চুল একটু কার্ল করে সামনে ফেলে রাখুন। আনওয়ানটেড হেয়ার নজরে পড়বে না।
৪। পোশাকের সঙ্গে মানানসই মাস্ক পরুন। আপার লিপ, চিন ঢাকা পড়ে যাবে।
কেয়া শেঠ