কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
শুধু পেট ভরতি খাবার খেলেই শরীরে দ্রুত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়া সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ডায়েট মেনে পরিমিত আহার, শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম, পরিমাণ মতো জল খাওয়া ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া। এবার এক ঝলকে দেখে নিন, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ে কীভাবে সহজেই দ্রুত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা যায় তার ১২টি জরুরি ঘরোয়া টোটকা—
১. এই সময় কার্বোহাড্রেট ও ফ্যাট জাতীয় খাবার কম পরিমাণে খেয়ে প্রোটিন জাতীয় খাবারে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দুধ, ছানা, ঘি, পনির, মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দানাশস্য জাতীয় খাবার পাতে রাখুন। আর হাফ বয়েল নয়, ডিম খান সম্পূর্ণ সেদ্ধ বা অমলেট করে।
২. টক দই, ঘোল, রায়তা, সবুজ শাকসব্জি, ফল, ড্রাই ফ্রুটে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভৃতি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। তাই এসব খাওয়ায় বাড়তি নজর দিন। বেগুন, কুমড়ো,পটল, ঢ্যাঁড়স, গাজর, কাঁচা কলা, টম্যাটো, কলমি শাক, নটে শাক, লাউ, উচ্ছে, কাঁচা পেঁপে প্রভৃতি সব্জি নিয়মিত পাতে রাখুন। খুব বেশি তেল ঝাল মশলা দিয়ে রান্না করা যাবে না। এতে সব্জির গুণ অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে হজমেও নানান সমস্যা দেখা দেয়। আর ফলের মধ্যে পেয়ারা, লেবু, পেঁপে, কলা, তরমুজ, শসা, মুসম্বি প্রভৃতি খেতে পারেন। ড্রাই ফ্রুটসের ক্ষেত্রে আমন্ড, আখরোট ও কাজু খুব উপকারী।
৩. অতিরিক্ত লবণ ও চিনি মেশানো খাবার না খাওয়াই ভালো। সেই সঙ্গে
প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, জাঙ্ক ফুড ও তেলেভাজা এড়ান।
৪. খেয়াল রাখতে হবে শরীরে যাতে কোনও প্রকার ভিটামিনের ঘাটতি না দেখা যায়। তাই কড়া প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ভিটামিন এ, বি৬, বি১২, সি, ডি, জিঙ্ক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার প্রভৃতির উৎস রয়েছে এমন খাবারে বাড়তি জোর দিতে হবে।
৫. যাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান, যেমন প্রেসার, সুগার, ইনসুলিন প্রভৃতি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বন্ধ বা পরিবর্তন করা যাবে না।
৬. সব সময় ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করুন। সবার সঙ্গে খোলা মনে কথা বলুন। বইপড়ুন, সিনেমা ও টিভি দেখুন, ফোনে বা অনলাইনে শুভানুধ্যায়ী ও সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিন। বাড়িতে সরঞ্জাম থাকলে খেলাধুলোও করতে পারেন। এখানেই শেষ নয়, যেসব কাজ সময়ের অভাবে কখনও শুরুই করতে পারননি, সেসব করার জন্য কিন্তু এটাই সেরা সময়! এক কথায় যা যা করলে আপনার মন শান্ত থাকবে, চিন্তমুক্ত হবেন, হতাশা থাকবে দূরে— তাই-ই করুন।
৭. পঞ্চাশ বছরের বেশি বয়স হলে অবশ্যই নিউমোনিয়ার টিকা নিতে হবে।
৮. ধুমপান ও ড্রিকংস একদম বন্ধ করতে না পারলেও উল্লেখযোগ্য হারে কমাতেই হবে।
৯. শরীর বুঝে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ জলপান করতে হবে। দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস জলপান করা চাই।
১০. রোজ নিয়ম করে অন্তত ৩০ মিনিট ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতেই হবে। আর রাতে খাবার পর সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমোতে না গিয়ে ঘণ্টাখানেক একটু হাঁটাহাঁটি করুন।
১১. আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। তীব্র গরম, আবার কালবৈশাখীও চলছে। তাই একটু অসর্তক হলে অনেকেরই সাধারণ সর্দি, কাশি, গলা ব্যথায় হচ্ছে। এক্ষেত্রে মধু, হলুদ, গোলমরিচ, আদা ফোটানো জল ছেঁকে খেলে ভালো। মাঝেমধ্যে গরমজলে লবণ দিয়ে গার্গলও করতে পারেন। উষ্ণ গরমজলও মাঝেমাঝে খান। এমনিতে আদা হজমেও সাহায্য করে। রসুনও বিভিন্ন রকম সংক্রমণ প্রতিরোধে খুব সাহায্যকারী।
১২. যাঁরা দুধ চা বা লিকার চা খান, তাঁরা এসময় দিনে এক দু’বার গ্রিন টি খান। এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে, যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এই ১২টি মন্ত্র মেনে চললেই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দ্রুত বড়সড় প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। তবে যাঁদের খাওয়া দাওয়ায় চিকিৎসকের বিধি নিষেধ আছে, তাঁদের সেসব অবশ্যই মেনে চলতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছে মতো কোনও ওষুধ খাওয়া যাবে না। আর যদি দীর্ঘমেয়াদিতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান, তাহলে সারা জীবন এই পরামর্শ মেনে চলুন।