কর্মপ্রার্থীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। নিকটস্থানীয় কারও প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। পুরোনো কোনও বন্ধুর ... বিশদ
নিজের লেখা কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ নিয়ে পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্য এর পার্সেল ছবিটি ১৩ মার্চ মুক্তি পাবে। ইতিমধ্যে পরিচালক ইন্দ্রাশিস ২৫ তম কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটির জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার (হীরালাল সেন মেমোরিয়াল) পেয়েছেন। এছাড়াও নেটপ্যাক এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ইন ইন্দোনেশিয়াতে এই ছবিটি দিয়ে বাংলা ছবির একশো বছর উদযাপন করা হয় এবং সেখানেও ছবিটি ভূয়সী প্রশংসিত হয়। ডিওরম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের জন্য ছবিটি মনোনীত হয়েছে। এই ছবির স্টাইলিংয়ের দায়িত্বে ছেন অবর্ণা রায়।
ছবির গল্প সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই পরিচালক জানালেন, ‘নন্দিনী, শৌভিক ও তাদের মেয়ে সুজাকে নিয়ে সুখের সংসার। নন্দিনী ও শৌভিক দু’জনেই ডাক্তার। কিন্তু অতীতের কোনও কারণের জন্য নন্দিনী নিজেকে ডাক্তারি পেশা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। হঠাৎ একদিন নন্দিনীর কাছে একটি পার্সেল আসে। পার্সেল আমাদের কাছে যেমন আনন্দের তেমনি কৌতুহলের। কিন্তু সেটি নিতে গিয়ে নন্দিনী দেখেন যে যিনি পাঠিয়েছেন তার কোনও নাম, ঠিকানার উল্লেখ নেই। এই পার্সেলের মধ্যে কিছু ছবি, ফুল এবং উপহার দেখে নন্দিনী অবাক হয়ে যান। এইভাবে অযাচিত ভাবে ক্রমাগত পার্সেল আসতে থাকলে নন্দিনীর কপালে ভাঁজ পড়ে। ক্রমশ নন্দিনীর মনে হয় কেউ তাঁকে ব্ল্যাকমেলিং করছে। এই ভেবে নন্দিনীর মনে ভয় কাজ করে। অপরদিকে আবার শৌভিকের মনে এই পার্সেলকে ঘিরে নানা সন্দেহ মনে দানা বাঁধতে শুরু করে। ফলে পরিবারে হঠাৎ এক সমস্যার সৃষ্টি হয়। কেন বা কে পাঠাচ্ছে এই পার্সেল তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হলে অনেক কিছু প্রকাশিত হয়। অতীত সম্পর্ক, বন্ধন ইত্যাদি অনেক কিছু প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে প্রকাশিত হয় তাই নিয়েই ছবির গল্প’। এর থেকে ছবির গল্প আর বেশি বলতে চাইলেন না পরিচালক।
ছবির শিল্পীরা হলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (নন্দিনী), শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় (শৌভিক), অন্য শিল্পীরা হলেন অম্বরীশ ভট্টাচার্য, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, শ্রীলা মজুমদার, দামিনী বেণী বসু, তিয়াসা দাশগুপ্ত প্রমুখ।
ছবির চরিত্রদের সাজ পোশাক সম্পর্কে বলতে গিয়ে স্টাইলিস্ট অবর্ণা বলেন, ‘পরিচালক ইন্দ্রাশিসের গল্প অনুযায়ী প্রতিটি চরিত্রের লুকসে ন্যাচারাল ব্যাপার রাখতে হবে। যেহেতু নন্দিনী এবং শৌভিক দু’জনেই ডাক্তার তাই এঁরা খুবই সফিসটিকেটেড। তাই সাজপোশাকে খুবই সফিসটিকেশন দরকার ছিল। যেহেতু নন্দিনীর জীবনে হঠাৎ একটা সমস্যা নেমে আসে যার ফলে তিনি কিছুটা বিধ্বস্ত সেই কারণে পোশাক থেকে মেকআপে একটু একটু করে রং কমে যায়। নন্দিনীর চোখে ডার্ক সার্কেল, চুল অগোছালো করে বাঁধা থাকবে, পোশাকের রং উচ্চকিত হবে না, কিছুটা ডার্কার শেড এই ব্যাপারগুলি মাথায় রাখতে হয়েছে। গল্প যেভাবে এগোবে নন্দিনীর পোশাক থেকে মেকআপের বদল ঘটবে।
নন্দিনীকে কুর্তির সঙ্গে পেন্সিল প্যান্ট, পালাজো, শাড়ি পরানো হয়েছে। ঘরের দৃশ্যে চরিত্রটি অফ হোয়াইট, গ্রে সিঙ্গল কালারের লঙ ড্রেস, জংলা প্রিন্টেড স্কার্টের সঙ্গে চেকস শার্ট পরেছে। কখনও আবার হাফ পালাজোর সঙ্গে টপ কিংবা স্কার্ট টপের সঙ্গে পায়ে স্লিপার ব্যবহার করেছে। সঙ্গে কখনও চুল খোলা বা অগোছালোভাবে বেঁধে রাখার সঙ্গে মেকবিহীন লুকে তাকে দেখা যাবে। তবে পুরো ছবিতে বাঁ হাতে নোয়া এবং কানে ছোট গোল্ডেন দুল নন্দিনী পরেছে। আমার ডিজাইন ও স্টাইলিং অনুযায়ী স্বতন্ত্র বুটিক পোশাক তৈরি করে দিয়েছে। এঁদের বেশ কিছু সিলভার জুয়েলারিতে নন্দিনী ওরফে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে দেখা যাবে।’ জন্মদিনের একটি দৃশ্যে নন্দিনী হ্যান্ডলুমের ব্ল্যাক বর্ডার দেওয়া হাতি প্রিন্টের রানি কালারের শাড়ির সঙ্গে সিলভার জুয়েলারিতে ধরা দিয়েছে। বর্হিদৃশ্যে তাঁকে শাড়ি ছাড়াও টপের সঙ্গে র্যাপার, লভ ড্রেস, পেন্সিল প্যান্টের সঙ্গে কুর্তি ও জ্যাকেট ইত্যাদি পরানো হয়েছে। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত নিজস্ব পায়ে ছোট হিলের জুতো, ব্ল্যাক লেদার হ্যান্ড ব্যাগ ব্যবহার করেছেন। কখনও তার ডান হাতে ঘড়ি, চোখে সানগ্লাস রয়েছে। এছাড়া একটি স্বপ্নদৃশ্যে টেরাকোটার গয়নার সঙ্গে ফ্লোরাল প্রিন্টেড অফ হোয়াইট শাড়ি সঙ্গে পরিপাটি করে চুল বাঁধা অবস্থায় নন্দিনীকে দেখা যাবে। যেখানে জিনসের সঙ্গে হলুদ রয়ের টি শার্ট ও হাফ জ্যাকেট সানগ্লাসে শৌভিককে দেখা যাবে। তবে ছবির শেষে দেখা যাবে যখন নন্দিনী সব সমস্যা থেকে বেরিয়ে একটু অন্য রকমভাবে বাঁচার চেষ্টা করছে তখন তাকে লতাপাতা জড়িতে হলুদ শেডের শাড়ি পরানো হয়েছে।
অপরদিকে শৌভিক অর্থাৎ শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে ফর্ম্যাল শার্ট, প্যান্ট, শ্যু, রিমলেস চশমাতে দেখা যাবে। শার্ট কখনও সিঙ্গল কালারের, আবার একটি চেকস শার্টও তিনি পরেছেন। তবে প্যান্টের কালার বেশিরভাগ ব্ল্যাক, ডার্ক গ্রে ইত্যাদি। ঘরের দৃশ্যে তিনি টি-শার্ট ও ট্র্যাকস্যুট পরেছেন। আবার দামিনী বেনী বসুকে বাড়িতে ওয়েদার করা রেডিশা কুর্তিতে দেখা যাবে যার মধ্যে একটা অভাবী লুক রয়েছে। আবার একটি দৃশ্যে তিনি খেস শাড়িতে ধরা দেবেন। অপর একটি বর্হিদৃশ্যে তাঁকে শার্ট, প্যান্ট, স্কার্ফ, চশমায় দেখা যাবে। আসলে ওঁর চরিত্রটি খুবই রহস্যময় এমন কথা অবর্ণার থেকে জানা গেল।
ক্যামেরা শান্তনু দে। সম্পাদনা মলয় লাহা। সুর জয় সরকার। গান গেয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শ্রীলা মজুমদার। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কৃষ্ণ কয়াল।