সারাটা বছর এদেশ থেকে ওদেশ, বিদেশ থেকে স্বদেশ চরকির মতো পাক খেয়ে বেড়ায় যে মেয়েটি সে আমাদের ঋতু— অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। পুজোতেও এই রুটিনের অন্যথা হয় না। আজ মায়ের ফ্ল্যাটের পুজোয় তো কাল সিঙ্গাপুরে বরের কাছে। আজ মেয়েকে নিয়ে পুজো মণ্ডপে তো কাল ইউএসএ-তে পুজোর অনুষ্ঠানে। এবার পুজোটাও এইরকম দৌড়ে দৌড়েই কাটবে ঋতুর। তবে তাতে তাঁর ক্লান্তি নেই। ‘শুধু কষ্ট একটাই, পুরো পুজোটা সঞ্জয় আর ছেলেমেয়ের সঙ্গে মজা করে কাটাতে পারব না এবার।’ বলল ঋতু। ঢাকায় একটা ছবির কাজে ব্যস্ত রয়েছে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কথা হচ্ছিল ফোনে। বলল, এবার সপ্তমীর দিনই চলে যেতে হবে আমেরিকায়। অনেক বছর ধরে ওখান থেকে অনুরোধ আসছিল অনুষ্ঠান করার জন্য। এবার রাজি হয়েছি। শিকাগো, নিউ জার্সি, টরোন্টো, নিউ ইয়র্ক আর আটলান্টায় পরপর শো আছে আমার। বলা যেতে পারে এবার প্রবাসের পুজো দেখেই কাটবে দিন। সঞ্জয়কে বলেছি, ছেলেমেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় চলে আসতে। ও প্ল্যান করছে। তবে এখনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।’ বলতে বলতে ঋতুর গলায় খুশির ঝলক। ‘মেয়ে আগেই চলে আসছে কলকাতায়। ছেলে তো বড় হয়ে গিয়েছে। ওর পরীক্ষা আছে। শেষ হলেই বাবার সঙ্গে চলে আসবে। আজকাল তো অনেক আগে থেকেই বড় বড় পুজোর উদ্বোধন হয়ে যায়। তাই চতুর্থী পঞ্চমীতেই মেয়েকে নিয়ে ঠাকুর দেখব। ষষ্ঠীর দিনটা বাড়িতে সবাই মিলে হই হুল্লোড় করব।’
—আর সাজগোজ?
‘দুর্গাপুজো মানেই শাড়ি, গয়না, খোঁপা আর বড় টিপ। প্রবাসেও
এই সাজেই সাজব। তোমাদের ফোটোশ্যুটের শাড়িগুলোই হবে
আমার আমেরিকা সফরের সঙ্গী।
তবে নিঃসন্দেহে মিস করব কলকাতাকে।’
ষষ্ঠীতে তসর বেনারসি
‘ষষ্ঠীর সন্ধেতে ছেলেমেয়েকে নিয়ে যাব মায়ের ফ্ল্যাটের পুজোয়। গ্রিন-ম্যাজেন্টা কম্বিনেশনের স্কার্ট বর্ডার তসর বেনারসিটাই পরব ভাবছি,’ বলল ঋতু। শাড়িটি ‘প্রিয়গোপাল বিষয়ী’ থেকে নেওয়া।
সপ্তমীতে রেশম চান্দেরি
সপ্তমীর দিন আমার আমেরিকা যাত্রা। খুব ভারী শাড়ি পরে ফ্লাইটে অসুবিধে হবে। হালকা চান্দেরিটা বেশ উজ্জ্বল। এটাই পরব— বলল ঋতু। শাড়িটি ‘শ্রীনিকেতন’ থেকে নেওয়া হয়েছে।
অষ্টমীত জর্জেট বেনারসি
‘নিউ ইয়র্কের পুজোতেই বোধহয় অঞ্জলি দেব এবার। শিডিউলটা ঠিক মনে পড়ছে না।’ গোল্ডেন ইয়েলো-রানি রঙের জর্জেট বেনারসিটা মনে ধরল নায়িকার। বলল, ‘এটাই আমার অষ্টমীর সাজ।’ শাড়িটি ‘বেনারসি টেক্সটোরিয়াম’-এর।
নবমীতে ছত্তিশগড়ের ডুপিয়ান
‘নবমীর রাতে সম্ভবত নিউ জার্সির পুজোয় থাকব। শো’য়ের শেষে সেজেগুজে মায়ের আরতি দেখব। এইদিনের জন্য বাছলাম ব্ল্যাক-রেড কম্বিনেশনের ডুপিয়ান র সিল্ক শাড়িটা।’ ছত্তিশগড়ের শিল্পীদের দিয়ে বোনানো এই এক্সক্লুসিভ শাড়িটি ‘ফাগুন’ ডিজাইনার স্টোরের।
দশমীতে ডিজাইনার বেনারসি
‘দশমীর সন্ধেবেলায় মনটা খুব উতলা হবে দুই মায়ের জন্যে। আমার মা আর শাশুড়ি মা। ফোনেই প্রণাম জানাব। এদিন লালপাড় সেলফ ডিজাইনের জর্জেট বেনারসিটা পরার ইচ্ছে রয়েছে।’ শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে ব্লাউজ ও অসাধারণ জুয়েলারি তৈরি করে দিয়েছেন ডিজাইনার। এটি ‘দশভূজা’ বুটিকের।
ষষ্ঠী থেকে নবমীর সাজে ঋতুপর্ণা শ্যামসুন্দর জুয়েলার্সের এক্সক্লুসিভ গয়না বেছে নিয়েছে।