দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
৩৭০ ধারা, তিন তালাক, সন্ত্রাস বিরোধী আইনের পরিবর্তন এবং ভগবান রামের জন্মভূমিতে রামমন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত করা নিশ্চিতভাবে ভারতের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায়।
মুসলমান মহিলাদের জীবন দীর্ঘদিন ধরে তালাক-এ-বিদ্দত-এর কারণে দুর্বিষহ অবস্থায় ছিল। বিগত এক বছর ধরে তাঁরা এর থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন। আমার তো মনে হয়, এটা কোন সাধারণ বিষয় নয়, কারণ এখানে মহিলাদের আত্মসম্মানের বিষয়টি জড়িয়ে আছে।
ভগবান রামের জন্মভূমির বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার পর সমগ্র দেশ যেভাবে শান্তি, স্থিতাবস্থা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেছিল, নিঃসন্দেহে তা মোদি সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। আমরা তো ভগবান রামের রামরাজ্যের আদর্শে বিশ্বাস করি, যেখানে প্রত্যেক মানুষের নিজ নিজ রাজনৈতিক দর্শন থাকবে, প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবেন, আবার একসঙ্গে মিলেমিশে থাকবেন। কারণ, মানুষ তো মানুষেরই জন্য।
রাজনীতির ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা যখন সঙ্কটে এসে দাঁড়িয়েছিল, মোদিজি সেই সময় জনসাধারণের সামনে এসে দাঁড়ান। তাঁর নিরন্তর প্রয়াসে জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরে পান। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি যে আচরণ করেছে, তা যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর। অথচ, সরকার বিভিন্ন সময়ে লিখিতভাবে এই আইনের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। তা সত্ত্বেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতই একমাত্র ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। আমরা বিশ্ব শান্তি এবং ধর্ম নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাংবিধানিকভাবে দায়বদ্ধ। মোদিজি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত সংখ্যালঘু মানুষদের ভারতে মাথা উঁচু করে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমার মতে যা দেশের ধর্ম নিরপেক্ষতার ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব অধ্যায়। কিন্তু সংকীর্ণ রাজনৈতিক কারণে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের এই বিষয়ে নিরন্তর ভুল বোঝানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
বিগত এক বছরে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমেই কৃষক সম্প্রদায়ের সম্মান রক্ষার জন্য তাঁদের সরাসরি অর্থ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। আর এরপর শ্রমিক, ছোট ব্যবসায়ী এবং দোকানদারদের সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য পেনশন প্রকল্প চালু করা হয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমি যখন ভারতের সামরিক দিকটি বিবেচনা করি, তখন দেখেছি সারা বিশ্বে সমস্ত শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার জন্য চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ রয়েছেন। গত ১৫ আগস্ট লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী ভারতে এই পদটি তৈরির কথা ঘোষণা করেন। প্রথম মোদি সরকারের সময়ে ‘এক পদ এক পেনশন’-এর বিষয়টি বাস্তবায়িত করা হয়েছিল, আর দ্বিতীয় মোদি সরকারের আমলে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ-এর পদটি তৈরি করা হল। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য দেশে অস্ত্রশস্ত্র (যেমন বন্দুক ও রাইফেল) উৎপাদনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলিকে দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি, অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রাফাল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ভারতের বায়ুসেনায়, যা দেশের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ। আমার নিজের এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানে সওয়ার হওয়ার সুযোগ মিলেছিল। এই প্রক্রিয়ায় শামিল হয়ে আমি গর্ব অনুভব করি।
আজ যখন সারা বিশ্বে মানবজাতি করোনা মহামারীর সঙ্কটের সম্মুখীন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন— যার মাধ্যমে এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে আমাদের ইচ্ছে এবং ক্ষমতা দু’টিই প্রকাশ পেয়েছে। গরিব শ্রমিক এবং কৃষকরা বর্তমান সময়ে এই লকডাউনের ফলে অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু সরকার এঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কোটি কোটি গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢুকেছে, দরিদ্র মানুষরা বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পাচ্ছেন। যার মাধ্যমে ধর্ম, বর্ণ এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে এই সঙ্কটের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দক্ষ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাই প্রতিফলিত হচ্ছে।
যে কোনও গভীর সঙ্কটের সমাধান করার ক্ষমতা মোদিজি দেখিয়ে আসছেন। কৃষক আজ তাঁর নিজের ফসল যে কোনও জায়গায় বিক্রি করার অধিকার পেয়েছেন। শ্রমিকদের জন্য ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের সংজ্ঞা বদলানো হয়েছে। দেশে বিমান রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীদিনে নিঃসন্দেহে এর ইতিবাচক প্রভাব আমরা দেখতে পাব।
লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক স্বাধীনতা আন্দোলনে ‘পূর্ণ স্বরাজ্য’-এর ডাক দিয়েছিলেন। এ বছর তাঁর জন্মশতবার্ষিকী। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলছেন, আমার মনে হয় তিলকজির গত শতাব্দীর ‘স্বরাজ্য’ সঙ্কল্পকে তিনি এইভাবে বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। একবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় এই শতকে আমি নিশ্চিত, দেশকে সেবা করার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগ অবশ্যই সফল হবে।