Bartaman Patrika
বিশেষ নিবন্ধ
 

আর ঘৃণা নিতে পারছে না বাঙালি
হারাধন চৌধুরী

জয়বাংলার লোক/ মোটা মোটা চোখ/ আতপ চালের ভাত খেয়ে/ ক্যাম্পের মধ্যে ঢোক।
এটাই বোধহয় আমার শোনা প্রথম কোনও ছড়া। আজও ভুলতে পারিনি। শ্রবণ। দর্শন। স্পর্শ। প্রথম অনেক জিনিসই ভোলা যায় না। জীবনের উপান্তে পৌঁছেও সেসব অনুভবে জেগে থাকে অনেকের। কোনোটা বয়ে বেড়ায় সুখানুভূতি, কোনোটা বেদনা। এই ছড়াটি আমার জীবনে তেমনই একটি। যখন প্রথম শুনেছি তখন নিতান্তই শিশু। তবু রয়ে গিয়েছে। শৈশবস্মৃতির শিকড় এতটাই গভীর কখনও। আজ বুঝতে পারি, কারণ, এই ছড়া আমার শুধু শ্রবণযন্ত্রকে অধিকার করেনি, দর্শনেন্দ্রিয়, এমনকী ত্বক রক্ত মাংস অস্থি ভেদ করে হৃদয়কে আন্দোলিত করেছে দীর্ঘকাল। এখনও করছে। পঞ্চাশ পেরনো অনেকেইর চেনা হয়তো ছড়াটি। সূচনার ‌‘জয়বাংলা’ শব্দবন্ধটি অবশ্যই গৌরবসূচক। কিন্তু, ছড়াটি কোনোভাবে মর্যাদাসূচক হয়ে ওঠেনি। বরং বাংলার একটি অংশের মানুষের প্রতি অবজ্ঞা তাচ্ছিল্য, এমনকী ঘৃণাই প্রকট হয়ে উঠেছে এই ছড়ার পরবর্তী শব্দগুলি চয়নের ভিতর দিয়ে।
‘জয়বাঙলা’ শব্দবন্ধটি, কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম (১৯২২) ব্যবহার করেছিলেন। পূর্ববঙ্গে মাদারিপুরের ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের নেতা পূর্ণ চন্দ্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কবি একটি প্রশস্তি লেখেন। তাতেই শব্দটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। পরে এটাই হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ‘মন্ত্র’। এই মন্ত্রশক্তির বলেই মুক্তিযোদ্ধারা সমস্ত ভয় তুচ্ছ করতে পেরেছিলেন, পরাস্ত করেছিলেন পাকিস্তানের জল্লাদ বাহিনীকে, জিন্না সাহেবের সাধের পূর্ব পাকিস্তান ২৪ বছরের ভিতরে ‘স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ’ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘জয়বাংলা’ নামে একটি সাপ্তাহিক কাগজও বেরত। ‘মুজিবনগর’ (কলকাতায়) থেকে। ছিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের মুখপত্র। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’টি এই কাগজের প্রথম সংখ্যায় ছাপা হয়। পাকপন্থীরা অবশ্য ‘জয়বাংলা’ স্লোগানটিকে বাঙালির হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে চায়। অন্যদিকে, স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার পক্ষের বাংলাদেশিরা চান ‘জয়বাংলা’কেই সে-দেশের ‘রাষ্ট্রীয় স্লোগান’-এর স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
মনে পড়ছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং তারপর দীর্ঘ কয়েক বছর এপার বাংলায় পূর্ববঙ্গের শরণার্থীর ঢল নেমেছিল। দুই বাংলার সীমান্তে হেন জায়গা পাওয়া দুষ্কর ছিল যেখান দিয়ে পূর্ববাংলার মানুষ এপারে প্রবেশ করেনি—নদী খাল বিল, খেত-খামার, জঙ্গল কোনও কিছুকেই বাধা মানেনি তারা। উপায়ও ছিল না। কোনোরকমে প্রাণটাকে বাঁচাতে হবে। এই ছিল সবার লক্ষ্য, মোক্ষ। তাদের বেশিরভাগই চলে এসেছিল বস্তুত একবস্ত্রে, খালি পেটে আর একটি করে ভাঙা বুক নিয়ে। অবশ্য সবার সেই সৌভাগ্যও হয়নি। সীমান্ত পেরনোর আগেই খান সেনাদের নজরে পড়েছিল যারা, তাদের হয় কচুকাটা করেছিল, নয়তো এলোপাতাড়ি গুলিতে ঝাঁজরা করে দিয়েছিল। দুধের শিশু থেকে নিরীহ নারী, অশক্ত বৃদ্ধবৃদ্ধা কারও জন্য তাদের এতটুকু মায়া মহব্বত ছিল না। নাবালিকা থেকে অন্তঃসত্ত্বা, এমনকী প্রৌঢ়া, বৃদ্ধাদেরও ইজ্জত লুটেছিল সেই বেজম্মার দল। বামপন্থীদের কল্যাণে ‘সর্বহারা’ কথাটির সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত। এতক্ষণ যে বাঙালি শরণার্থীদের কথা বলা হল, সর্বহারার সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত তো তারাই।
প্রথম দিকে তাদের কারও কারও অস্বাস্থ্যকর শরণার্থী ক্যাম্পগুলিতে জায়গা হয়েছে, আবার কারও হয়নি। তারা রাস্তা রেললাইন খাল নদী প্রভৃতির ধারে খোলা আকাশের নীচে, অথবা কোনোরকমে খাড়া করা ছাউনিগুলিতে ছিল। তার ভিতরেই শীত বর্ষাও কেটেছে মানুষগুলির। তাদের কাছে টাকাকড়ি বলতে কিছু নেই। সরকারি দানখয়রাতিই এক ও একমাত্র ভরসা। কিছুদিন রান্না খাবার, পাউরুটি, ছাতু, গুঁড়ো দুধ, জরুরি কিছু ওষুধ প্রভৃতি দেওয়া হয়েছে। তারপর রেশন মারফত দেওয়া হতো চাল। চাল বলতে আতপ চাল। এসব মিলিয়েই শরণার্থীদের হিউমিলিয়েট করার জন্য ‘জয়বাংলার লোক ...’ ছড়াকাটা হতো। ‘দিন আসবে’ ধরে নিয়ে হতভাগ্যরা কিছুই বলত না।
এই মানুষগুলি এমনভাবে থাকতে বাধ্য হতো যে তাদের মধ্যে পেটের ও ত্বকের নানা ধরনের অসুখ সংক্রামক হয়ে উঠেছিল। আর ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল চোখের চেনা অসুখ কনজাংটিভাইটিস। অস্বীকার করার উপায় নেই, কনজাংটিভাইটিস ওইসময় গণহারে ছড়িয়েছিল। অতএব, এই অসুখটির জন্য কেউ কেউ শরণার্থীদেরই দায়ী করল। শুধু দায় চাপাল না, অসুখটার নামও দিয়ে দিল ‘জয়বাংলা’! প্রকোপ অনেক কমে এলেও অসুখটা এখনও বিরল নয়। অবাক ব্যাপার, এখনও অনেক শিক্ষিত মানুষকেও বলতে শুনি—ওর ‘জয়বাংলা’ হয়েছে! সোজা কথায় পূর্ববঙ্গ থেকে আসা উদ্বাস্তু বা শরণার্থীদের সম্পর্কে ঘৃণা দেশভাগের ৭২ বছর পরেও দূর হয়নি।
আজ মানবেতর জীবনের সংজ্ঞা খুঁজতে গেলে প্রথমেই একাত্তরের সেই জীবন্মৃত মানুষগুলির ছবি সারি দিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত আফ্রিকার কিছু দেশ, সিরিয়া, প্যালেস্তাইন, আফগানিস্তান, কিংবা মার্কিনহানায় বিপর্যস্ত ভিয়েতনামের যেসব ছবি পরবর্তীকালে দেখেছি তাকে বাঙালির সেই দুর্দশার পাশে ন্যূন মনে হয়।
এই মানুষগুলির আদি পরিচয় কী? তারা ভারতসন্তান। ছোটবেলায় ইতিহাসে পড়েছি, ভারতকে অত্যাচারী ব্রিটিশের শাসনমুক্ত করার কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল মূলত তিনটি প্রদেশ—বাংলা, পাঞ্জাব ও মহারাষ্ট্র। পূর্ববঙ্গ কোনোভাবেই তার বাইরে ছিল না। পূর্ববঙ্গের মানুষজন সমান লড়েছিল। তবেই ভারত স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু সেই ‘স্বাধীনতা’ যে তাদের একাংশের জীবনে চরম অভিশাপের নামান্তর হয়ে উঠবে, তা তারা দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি। আমরা জানি, সেই অভিশাপের নাম দেশভাগ। হতভাগ্য মানুষগুলি এজন্য সেকালের হাতে গোনা কিছু ন্যাশনাল লিডারকেই দায়ী করে, যাঁদের ক্ষমতার লোভ দেশভাগ অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছিল। সাবেক বাংলা প্রদেশ দু’ভাগেই অবশ্য ক্ষান্ত হয়নি। বাংলার বেশিরভাগটা এসেছিল পশ্চিমবঙ্গে। (যদিও হিন্দুপ্রধান সাবেক খুলনা ও যশোহর জেলা পাকিস্তান কেন পেয়েছিল, সদুত্তর মেলনি।) আর কিছুটা গিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতে। বরাক উপত্যাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল যুক্ত হয়েছে আজকের অসম প্রদেশের সঙ্গে আর কিছুটা নিয়ে গঠিত হয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য। ভারতের মানচিত্র নিয়ে স্যার শেরিল র‌্যাডক্লিফের কাটাকুটির খেলা এখানেই শেষ হয়নি, দুই বাংলা আর অসমের মধ্যে তিনি দেড়শোর বেশি ছিটমহলেরও জন্ম দিয়ে গিয়েছেন। যে-যন্ত্রণা এই সেদিন অবধি বয়ে বেড়াতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে।
তাহলে বলুন, এই মানুষগুলির নিজের দোষটা কোথায়? যাদের বসবাসের পুরনো অঞ্চল অসমের অন্তর্ভুক্ত করা হল তাদের কেন অসমে ‘বহিরাগত’ দেগে দেওয়া হবে? কেন কিছু মানুষকে সাত দশকের বেশিকাল ছিটমহলের জাঁতাকলে পেষাই করা হল? নেতাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের কারণে কিছু মানুষকে পাকিস্তানে ফেলে রাখা হল। সেখানে একাধিক বার দাঙ্গার শিকার হল তারা। এইভাবে আড়াই দশক কাটার আগেই, একাত্তরে যুদ্ধের বলি হল তারা।
এখন জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) নতুন ধুয়ো তোলা হচ্ছে। সেখানে বাঙালিকে ফের প্রমাণ করতে হবে যে সে ‘ভারতীয়’! মানেটা কী? এই জাতিটার কি আর কোনও কাজ নেই। একটা করে ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে-না-উঠতেই তাকে আরেকটা নতুন ধাক্কা গ্রহণের জন্য তৈরি হতে হবে! কেন? কেন? কেন? এবং, আর কত বার, আর কত কাল চলবে এই পিং পং খেলা?
এখন শঙ্কিত স্বয়ং হেমন্ত বিশ্বশর্মা, মানে উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির প্রধান মুখ তথা অসমের অর্থমন্ত্রী। চতুর্দিকে বিজেপির মুখ পুড়ছে বলেই না? বিশেষত অসমের চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় ১২ লক্ষাধিক হিন্দুর নাম বাদ পড়েছে। তিনি পরিষ্কার বুঝে গিয়েছেন, এই বার্তা ক্রমে রটে গেলে তাঁদের ঘৃণার রাজনীতি ফিনিশ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। ২০ নভেম্বর হেমন্তবাবুই দাবি করেছেন, অসমের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি বাতিল করা উচিত। তবে শুধু অসমের জন্য নয়, সারা ভারতের জন্য নতুন করে এনআরসি প্রস্তুত করা উচিত, যার একটি নির্দিষ্ট কাট অফ ডেট (অসমের জন্য ২৪ মার্চ, ১৯৭১ দিনটি ধার্য করা হয়) থাকা প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন। হেমন্তবাবু মনে করছেন, অসমে এনআরসি তালিকা তৈরিতে অনেক গলদ আছে। ২৮ নভেম্বর তিনি বলেন, এনআরসিতে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য যেসব হিন্দু বাঙালি আবেদন করেছিলেন তাঁদের জেলাভিত্তিক নাম প্রকাশ্যে আনা হবে।
তা, কী লভ্যটা হবে মশায়? ক্ষমতার কারবারিদের আরেক দফা চাপান-উতোর ছাড়া কী মিলবে? এখন কথা হল, বাঙালি কেন এত ভুগবে? এই দুর্ভোগের অগ্রে বাঙালির নামটিই রাখছি, কারণটি সোজা—এদেশের আর কোনও জাতিকে এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে না—অমিত শাহের হুঙ্কার মতো সারা দেশে এনআরসি হলেও না। বাঙালি ছাড়া আর কাউকেই যাযাবর বা নিজভূমে পরবাসী বানায়নি এদেশের ঘৃণ্য রাজনীতি, পাঞ্জাবিদের কথা মাথায় রেখেই বলছি। এনআরসির পরীক্ষায় পাশ নম্বর পাওয়ার জন্য যেসব নথি রেডি রাখার ফতোয়া আসছে বলে শোনা যাচ্ছে, তা পশ্চিমবঙ্গের দু-চার কোটি বাঙালি জোগাড় করতে ব্যর্থ হবে। ১৯৭১-এর ২৪ মার্চের আগে ভারতে প্রবেশ করার সময় ক’জন বর্ডার স্লিপ নিতে পেরেছিল? নিয়ে থাকলেও ক’জন তা এতকাল গুছিয়ে রাখতে পেরেছে? ক’জন ওই কাগজের ভবিষ্যৎ গুরুত্ব বুঝেছিল? কোন জ্যোতিষ-গণনায় তারা টের পাবে যে, কোনও একদিন এক মহান সরকারের এনিয়ে বাই চাগাড় দিয়ে উঠবে?
শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তৈরি হয়। তিনি হিন্দুসহ সমস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে নতুন দেশ হবে সবার, চলবে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিতে। আর যায় কোথায়! পাকিস্তানের দালাল বাহিনী তাঁকে ‘হিন্দু ভারতের হাতের পুতুল’ দেগে দিয়ে খুন করল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ভারতের স্বাধীনতা দিবসে। তাঁর মৃত্যুর পরই বাংলাদেশের উপর ‘রাষ্ট্রধর্ম’ ইসলাম চাপিয়ে দেওয়া হল। ফলে, মুজিব-উত্তর বাংলাদেশ বহু হিন্দুর কাছে মোটেই নিরাপদ মনে হয়নি। সব ছেড়েছুড়ে কিংবা যাবতীয় সহায় সম্বল জলের দরে বেচে দিয়ে তারা এদেশে চলে এসেছে। বাংলাদেশের প্রগতিশীল সমাজ বার বার দাবি জানালেও বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত সংবিধান। দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন থেকে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাও তা পারেননি। হাসিনার সরকার হিন্দুসহ সমস্ত সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে আন্তরিক বলে শুনতে পাই। তবু, কেন যেন এখনও সে-দেশের হিন্দুদের একটা বড় অংশের মন থেকে ভয় দূর হয়নি।
অন্যদিকে বলব সেইসব মানুষের কথা, যারা এই বাংলা কিংবা এই ভারতের বাইরে পৃথিবীর কিছু আছে বলে জানে না, শোনেওনি, তাদের কথা। তারা এই বঙ্গে, এই ভারতে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের থেকেও বেশিকাল যাবৎ বসবাস করছে। হলফ করে বলা যায়, এমন বহু মানুষও এনআরসির প্রয়োজনীয় নথির জোগান দিতে পারবে না। যে-দেশের নানা অংশের মানুষ বংশপরম্পরায় ভূমিহীন গৃহহীন, ঝড়ঝঞ্ঝা বন্যা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফি বছর যাদের সঙ্গী, অশিক্ষার অভিশাপ এখনও যাদের আষ্টেপৃষ্ঠে রেখেছে, তারা জানে না জন্ম সার্টিফিকেট, মৃত্যুর সার্টিফিকেট বলে যে কিছু হয়, সেসব গুছিয়ে রাখতে হয়, কীভাবে রাখতে হয়। একবেলার চাল আটা জোগাড় করতেই যাদের কালঘাম ছোটে তাদের জমির দলিল আবার কী মশায়? চাকরির নথি কোত্থেকে জুটবে? সাত জম্মে কেউ স্কুল-পাঠশালায় গিয়েছে? অফিসে ঢোকার পারমিশন জুটবে কোত্থেকে হে? এই লোকগুলোর কী বন্দোবস্ত? ভারতে ভবঘুরে লোকের সংখ্যা কত, সরকার হিসেব দিতে পারবে? সারা পৃথিবীতে জিপসি-রোমানি যারা, শুনেছি তারা আদিতে ভারতীয়! তাদের উপর ইউরোপে একসময় খুব অত্যাচার হয়েছে, হিটলারের জমানা থেকে, এখনও হচ্ছে। তারা আজকের ভারতেও চলমান—ভদ্রজনেরা তাদের বানাজারা বলি। এনআরসি-ওয়ালারা এদের কথা মাথায় রেখেছেন তো?
ভারতভাগের খেলা থেকে এ পর্যন্ত অনেক দেখলাম আমরা। নেতাদের খামখেয়াল বন্ধ হওয়া দরকার। তাঁরা একটু মানবিক হোন। মানুষকে মানুষ ভাবতে শিখুন। তাহলেই দেখবেন এসব বদবুদ্ধি মাথা থেকে জাস্ট উবে যাবে। শুধু একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক খুলে ফেললেই দায় মিটে যায় না, দেশবাসীই যে যথার্থ মানবসম্পদ (হিউম্যান রিসোর্স)—এই শ্রদ্ধাটি থাকা জরুরি। দেশকে দ্রুত এবং সুন্দরভাবে সাজাতে হলে এই অমূল্য সম্পদের সদ্ব্যবহার করতেই হবে। মানুষকে অকারণ, বারংবার, ব্যতিব্যস্ত করার পরিণাম—অপূরণীয় ক্ষতিই আহ্বান করা।
05th  December, 2019
লক্ষ্য উত্তরবঙ্গ: মমতার প্রকল্প আছে, মোদির?
শান্তনু দত্তগুপ্ত

রাস্তাঘাটে আম জনতার সঙ্গে কথা বলছেন সঞ্চালক। প্রত্যেকের জন্য প্রশ্ন একটিই, গত ১০ বছরে নরেন্দ্র মোদি সরকারের এমন তিনটি কাজ বলুন, যার মাধ্যমে আপনি সরাসরি উপকৃত হয়েছেন।
বিশদ

এক জাতি, এক নির্বাচন: সন্দেহজনক তত্ত্ব
পি চিদম্বরম

ইস্তাহার হল একটি লিখিত ঘোষণা। তাতে থাকে মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে কিছু ইচ্ছা এবং মতামত। এই প্রসঙ্গেই মনে আসে ১৭৭৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং ১৯৪৭-এর ১৪-১৫ আগস্ট জওহরলাল নেহরুর সেই বিখ্যাত ‘ভাগ্যদেবতার সঙ্গে অভিসারের সংকল্প’ ভাষণের মতো দৃষ্টান্তগুলি।
বিশদ

15th  April, 2024
৪০০ নামুমকিন, তবু মরিয়া ‘গোয়েবলস’
হিমাংশু সিংহ

নির্বাচন কত বড় ‘মাইন্ড গেম’ তার অকাট্য প্রমাণ এবারের লড়াই। নরেন্দ্র মোদি জানেন, কোনও অঙ্কেই ৪০০ আসন জেতা সম্ভব নয়। দক্ষিণ ভারত না সাথ দিলে ৩০০ অতিক্রম করাও কঠিন। উত্তর ভারতে দু’-চারটে রাজ্যে হিসেব না মিললে ২০০-র আগেই কিংবা সামান্য ওপরে থমকে যেতে পারে বিজেপির রথ। বিশদ

14th  April, 2024
আমে-দুধে মেশায় আইএসএফ এখন ‘আঁটি’
তন্ময় মল্লিক

ডুবন্ত মানুষ বাঁচার আশায় খড়কুটোকেও আঁকড়ে ধরে। একুশের নির্বাচনে সেই আশায় ডুবন্ত সিপিএম আইএসএফকে আঁকড়ে ধরেছিল। বাংলার রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য ব্রিগেডের জনসভায় অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে দিয়ে আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকীর হাতে মাইক্রোফোন তুলে দিয়েছিলেন মহম্মদ সেলিম। বিশদ

13th  April, 2024
অশ্বমেধের ঘোড়া বনাম এক নারীর লড়াই
সমৃদ্ধ দত্ত

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবন ৫০ বছরে পা দিল। ৫০ বছর ধরে তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্থান এক চমকপ্রদ ঐতিহাসিক রেফারেন্স। বিশেষত পুরুষতান্ত্রিক ভারতীয় রাজনীতিতে এক নারী হিসেবে ক্রমে শীর্ষে পৌঁছনো প্রায় বিরল। বিশদ

12th  April, 2024
ইতিহাসমেধ যজ্ঞের শেষ পরিণতি কী?
মৃণালকান্তি দাস

সদ্য ক্ষমতায় বসা নরেন্দ্র মোদি সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী তখন স্মৃতি ইরানি। ২০১৪-র অক্টোবর মাস। দিল্লির মধ্যপ্রদেশ ভবনে মন্ত্রীকে ডেকে এনে প্রায় সাত ঘণ্টা বৈঠক করেছিলেন আরএসএস নেতারা। বৈঠকে সুরেশ সোনি, দত্তাত্রেয় হোসাবোলে ছাড়াও শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সঙ্ঘের বিভিন্ন শাখার নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বিশদ

11th  April, 2024
অর্থ পরে, আগে আস্থা ফেরান মোদি
হারাধন চৌধুরী

পূর্ববর্তী দুটি লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাজিমাত করেছিলেন। এবার তাঁর প্রচারের ক্যাচলাইন ‘গ্যারান্টি’। কখনও কখনও তিনি শুধু ‘গ্যারান্টি’তেই থেমে নেই, ‘গ্যারান্টিরও গ্যারান্টি’ দিচ্ছেন! পুরো শরীরী ভাষা উজাড় করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলে চলেছেন, ‘আজ পুরা হিন্দুস্থান জানতা হ্যায়, দুনিয়া ভি মানতা হ্যায়, মোদি কি গ্যারান্টি মতলব গ্যারান্টি পুরা হোনে কি গ্যারান্টি!’
বিশদ

10th  April, 2024
ফ্যাক্টর নারীশক্তি, গ্যারান্টিও
শান্তনু দত্তগুপ্ত

জওহরলাল নেহরুর হাতে সময় যে বেশি নেই, তার আভাস অনেক আগে থেকেই পেয়েছিলেন কংগ্রেসের ‘বস’রা। তাই বছর দুয়েক ধরে নিজেদের গুছিয়ে নিতে পেরেছিলেন। বরং সময় দেননি লালবাহাদুর শাস্ত্রী। কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? বিশদ

09th  April, 2024
বিপন্ন সাংবিধানিক নৈতিকতা
পি চিদম্বরম

দুর্নীতির অভিযোগে একজন কর্তব্যরত মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার একইসঙ্গে আইনি, রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক সমস্যা। এটা আরও এমন একটা বিষয় যা সংবিধানের লিখিত বয়ানবহির্ভূত এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে সাংবিধানিক নৈতিকতার দিক। 
বিশদ

08th  April, 2024
ডায়মন্ডহারবারে বিজেপি’র প্রার্থী নেই কেন?
হিমাংশু সিংহ

মুখে বড় বড় কথা, লড়াই করার নেতা নেই, দমও নেই। শনিবার দুপুরে এই লেখা যখন লিখছি তখনও ডায়মন্ডহারবারে প্রার্থীই ঘোষণা করতে পারেনি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রণেভঙ্গ দিয়েছেন সিপিএমের মদতপুষ্ট নৌশাদ সিদ্দিকিও। বিশদ

07th  April, 2024
বেলাগাম হও, নম্বর বাড়াও
তন্ময় মল্লিক

‘বিধায়কের সম্পত্তির সঙ্গে উপার্জনের কোনও সঙ্গতি নেই। তার হিসেব আমার কাছে এসে গিয়েছে। কীভাবে এত সম্পত্তি, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হবে। তিনি হয়তো তিহারে যেতে পারেন। এই হুঁশিয়ারির পর বিধায়ক যদি চুপ করে যান তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই।’ বিশদ

06th  April, 2024
ইতিহাসের তর্ক বিতর্ক: সর্বনাশ কিন্তু বাঙালিরই
সমৃদ্ধ দত্ত

আমরা সবথেকে কী পেতে ভালোবাসি? ধনসম্পত্তি, প্রশংসা এবং সমর্থন। ধনসম্পত্তি, অর্থাৎ টাকাপয়সা সম্পদ পেলে আনন্দ হয়। প্রশংসা শুনলে মন খুশিতে ভরে ওঠে। আর আমাদের কথার সমর্থন পেতে পছন্দ করি আমরা। সাধারণ মানুষ অথবা ক্ষমতার শীর্ষস্তরে থাকা ব্যক্তিত্ব সকলেরই এই একইরকম মনের সুর। বিশদ

05th  April, 2024
একনজরে
কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে সেই ২০০৯ সাল থেকে টানা জিতে আসছেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবারও তিনিই জোড়াফুলের প্রার্থী। বিগত লোকসভা নির্বাচনগুলির সময় দেখা গিয়েছে, জয় নিয়ে কার্যত ‘চিন্তামুক্ত’ থাকতেন তিনি। ...

দেশজুড়ে আদর্শ নির্বচনী আচরণবিধি চলছে। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার নির্বাচন। ওই দিন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। কিন্তু বিতর্ক বেঁধেছে আবাস যোজনার ফর্ম পূরণকে কেন্দ্র করে। ...

একদিকে সুনীল নারিন ও বরুণ চক্রবর্তী। অন্যদিকে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, যুজবেন্দ্র চাহাল, কেশব মহারাজরা। মঙ্গলবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচে স্পিনারদের লড়াই আকর্ষণীয় ...

রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাতে মধ্যস্থতা করতে ইউজিসি প্রাক্তন চেয়ারম্যান, নিয়েপা’র অধ্যাপক এবং সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যানদের নিয়ে নাগরিক কমিশন গঠিত হল। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্ম বা গৃহক্ষেত্রে অশান্তি মনঃকষ্ট হতে পারে। পেশাদারী কর্মে সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব কণ্ঠ দিবস
হাজব্যান্ড অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে
১৮৫০:  মাদাম তুসো জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ম্যারি তুসোর মৃত্যু
১৮৫৩: প্রথম ট্রেন চলল সাবেক বোম্বাইয়ের ভিক্টোরিয়া থেকে থানে পর্যন্ত
১৮৬৭: উড়োজাহাজের আবিষ্কারক উইলবার রাইটের জন্ম
১৮৮৯: অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের জন্ম
১৯১৬ - রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন
১৯৫১: লেখক অদ্বৈত মল্লবর্মণের মৃত্যু
১৯৬৬: শিল্পী নন্দলাল বসুর মৃত্যু
১৯৭৮: অভিনেত্রী লারা দত্তর জন্
১৯৮৭: বিশিষ্ট অভিনেতা বিকাশ রায়ের মৃত্যু
২০২১: পিডিএফ ও ফটোশপের উদ্ভাবক ও সফটওয়্যার কোম্পানি এডোবির সহ-প্রতিষ্ঠাতা চার্লস গ্যাসকির মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৯৭ টাকা ৮৪.০৬ টাকা
পাউন্ড ১০২.৭৫ টাকা ১০৫.৩৮ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৪ টাকা ৯০.১৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,১৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,৫০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৯০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৩,৬০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৩,৭০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৩ বৈশাখ, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪। অষ্টমী ২০/১৫ দিবা ১/২৫। পুষ্যা নক্ষত্র ৫৯/৫৩ শেষ রাত্রি ৫/১৬। সূর্যোদয় ৫/১৯/২৪, সূর্যাস্ত ৫/৫৩/৩২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৯ গতে ১০/২০ মধ্যে পুনঃ ১২/৫২ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪০ মধ্যে পুনঃ ৮/৫৬ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ১/৩০ গতে ৩/১ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫৪ গতে ৮/২৮ মধ্যে পুনঃ ১/১১ গতে ২/৪৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/১৯ গতে ৮/৪৫ মধ্যে। 
৩ বৈশাখ, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪। অষ্টমী অপরাহ্ন ৪/২৮। পুনর্বসু নক্ষত্র দিবা ৬/২৩। সূর্যোদয় ৫/২০, সূর্যাস্ত ৫/৫৫। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪০ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/৫১ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৩/২৭ গতে ৫/১১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৭ মধ্যে ও ৯/০ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ১/২৩ গতে ২/৫১ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫৪ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ১/১২ গতে ২/৪৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২০ গতে ৮/৪৬ মধ্যে। 
৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: কেকেআর-এর বিরুদ্ধে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত রাজস্থানের

07:14:21 PM

আইএসএল-এর নক আউট ও সেমিফাইনালের দিনক্ষণ ঘোষণা
আইএসএল-এর নক আউট ও সেমিফাইনালের দিনক্ষণ আজ মঙ্গলবার ঘোষণা করে ...বিশদ

05:32:32 PM

রামনবমী নিয়ে তৃণমূলকে তোপ মোদির

05:03:07 PM

বিজেপি বাংলার ৬ কোটি মানুষকে ফ্রি তে রেশন দিচ্ছে: মোদি

05:02:34 PM

ঘরে ঘরে গিয়ে বলুন মোদিজি এসেছিলেন, আপনাদের প্রণাম জানিয়েছেন: মোদি

 

04:58:00 PM

এতবছর ক্ষমতায় থেকে বাংলাকে পিছিয়ে রেখেছে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল: মোদি

04:56:47 PM