গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
ধরা যাক ডাঃ অমুকচন্দ্র বিশ্বাস সরকারি হাসপাতালে প্র্যাক্টিস করেন। আউটডোরের বাইরে লম্বা লাইন... ২ টাকার টিকিট কেটে হাজার হাজার মানুষ এসে দাঁড়িয়ে। দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন। শরীর খারাপটুকু বোঝেন তাঁরা। তাও কখন? সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে। আর বোঝেন প্রেসক্রিপশন বলে একটা কাগজ ডাক্তারবাবু দেবেন। সেখানে ওষুধের নাম লেখা থাকবে। সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারবাবু লিখবেন ওষুধের জেনেরিক নেম। অর্থাৎ সরষের তেল লিখবেন... কোন ব্র্যান্ডের কিনতে হবে, সেটা লিখবেন না। সরষের তেল তো অনেক কোম্পানিই বানায়! নামী, অনামী... সেগুলির কিছু প্যাকেট করে বিক্রি হয়, কিছু আবার বিক্রি হয় লুজ। যেমন ঘানির তেল বা মুদি দোকানে বোতলে ভরা। সবাই সরষের তেল কিনল। অর্থাৎ জেনেরিক নামের ওষুধ। কিন্তু সেই ডাক্তার যখন নিজের চেম্বারে বসবেন? কিংবা কোনও কর্পোরেট হাসপাতালে? তখন প্রেসক্রিপশনে কিন্তু তিনি ওষুধের জেনেরিক নাম লিখবেন না! তখন লিখবেন ব্র্যান্ড নেম। অর্থাৎ, কোন কোম্পানির সরষের তেল আপনাকে কিনতে হবে, সেটা নির্দিষ্ট করে বলে দেবেন তিনি। প্রশ্নটা হল, এই ফারাক কেন?
এর নেপথ্যে কারণ এবং ধারাবাহিক ঘটনা পরম্পরার একটা চেইন রয়েছে। একটির হদিশ পেলে পরেরটি নজরে চলে আসবে। শুরু করা যাক চেইনের প্রথম বেড়ি থেকে। অর্থাৎ ব্র্যান্ড নেমের ওষুধ, যা বড় কোম্পানি তৈরি করে। যে কোনও পণ্য তৈরি করতে কাঁচামাল লাগে। র মেটেরিয়াল। ওষুধ তৈরিতেও লাগে। সেই কাঁচামালের দাম সর্বত্রই উনিশ-বিশ। তা নিয়ে সন্দেহ নেই। এবার বড় কোম্পানিগুলো বাড়তি যে প্রক্রিয়ায় জোর দেয় সেটা হল, কেমিক্যাল সিন্থেসিস। এক একটি ওষুধ তৈরির সময় কোথাও ১০টি, কোথাও ১২টি, আবার কোথাও ১৫টি ধাপে কেমিক্যাল সিন্থেসিস হয়। সোজা বাংলায় বললে, কাঁচামালগুলোকে ওষুধের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করার আগে রাসায়নিক বিশ্লেষণ করা। প্রয়োজনমতো। তাহলে সেগুলো ভেজালমুক্ত হবে। ‘শুদ্ধিকরণ’ ঘটিয়ে তারা ওষুধ তৈরির কাজে লাগার যোগ্য হয়ে উঠবে।
কিন্তু ছোট কোম্পানিগুলিও কি একই রকম পদ্ধতি মেনে ওষুধ বানায়? মনে হতেই পারে, ওষুধ তৈরির সঙ্গে ছোট-বড় কোম্পানির সম্পর্ক কী? ওষুধ তো সর্বত্রই একভাবে তৈরি হয়! উত্তরটা হল, না। একই জেনেরিক নামের ওষুধ সর্বত্র একইভাবে তৈরি হওয়া উচিত। কিন্তু সেই উচিত কাজটি সর্বত্র হয় না। প্রথমত, বড় কোম্পানিগুলির মতো ছোট কোম্পানিগুলির পরিকাঠামো থাকে না। তার উপর আরও বেশি করে যে ফ্যাক্টরটা কাজ করে সেটা হল, ছোট কোম্পানিরা সাধারণত ওষুধের কোয়ালিটি বা গুণমান নিয়ে খুব একটা ভাবনাচিন্তা করে না। করলে প্রফিটের মার্জিন কমতে থাকবে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবটা দেখা যায় দামে। কীভাবে?
উদাহরণ দেওয়া যাক। অ্যাজিথ্রোমাইসিন। গলায় ব্যথা, ইনফেকশন হলে এই জেনেরিক নামের অ্যান্টিবায়োটিকটি লাগে। ছোট-বড় প্রচুর কোম্পানি অ্যাজিথ্রোমাইসিন বানায়। বাজারে যে ব্র্যান্ডটি সবচেয়ে বেশি চলে, সেটির এমআরপি ১০০ টাকা। কিন্তু একটু খোঁজ-খবর করলেই এর থেকে কম দামের অ্যাজিথ্রোমাইসিন পাওয়া যাবে। একটি কোম্পানি ওই কম্পোজিশনেরই জেনেরিক ওষুধ বিক্রি করে ৬৭ টাকা এমআরপিতে। শুধু ব্র্যান্ডিংটা থাকে না। অর্থাৎ ডাক্তারবাবুরা প্রেসক্রিপশনে সেটা লিখবেন না, কিংবা তার জন্য মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌড়তে হবে না। আর একটু খুঁজুন। দেখবেন, ২৫-৩০ টাকাতেও একপাতা পাওয়া যাচ্ছে। ৩ হাজার টাকার শাড়ির যা কোয়ালিটি, সাড়ে তিনশো টাকার শাড়ির কি এক কোয়ালিটি হতে পারে? এই ভাবনাটা কেন আমরা ওষুধের ক্ষেত্রে ভাবি না? যে ওষুধ তৈরি, মার্কেটিং, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং অন্যান্য কর্মীদের বেতন দেওয়ার পর সব খরচ এবং প্রফিট ধরে ১০০ টাকা পাতা দাম হয়, সেই গুণমানের কি ২৫ টাকায় পাওয়া যেতে পারে? ধরে নেওয়া যাক, ২৫ টাকায় যে কোম্পানি বিক্রি করছে (এই দামে বিক্রির পরও কিন্তু তার ভালোই লাভ থাকছে), তাকে মার্কেটিংয়ের পিছনে খরচ করতে হচ্ছে না। সে বানাচ্ছে, আর সরাসরি ওষুধের দোকানে সাপ্লাই দিচ্ছে। তাতেও কিন্তু কোয়ালিটি আসে না! এলে বড় কোম্পানিগুলোও মার্কেট ধরে রাখার জন্য ওই দামে ওষুধ বিক্রি করত। আসলে যে সংস্থার বাজারে নাম হয়ে গিয়েছে, তারা কখনও খারাপ কোয়ালিটির ওষুধ বেচে বদনাম কুড়োবে না। তাহলে খুব পরিষ্কার, ব্র্যান্ডিং ছাড়া কোয়ালিটি বজায় রেখে ওষুধ বেচতে হলেও তাতে ৪০-৪৫ শতাংশের বেশি ডিসকাউন্ট দেওয়া সম্ভব নয়! তাহলে কিছু কিছু কোম্পানি ৮০ শতাংশ দিচ্ছে কী করে?
কথা হচ্ছিল এক ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে। সজ্জন ব্যক্তি। ওষুধ নিয়ে এক পয়সার কালোবাজারি করেন না। কিন্তু দেখতে পান প্রায় সবটাই। নাম না লেখার শর্তে বললেন, এমন প্রচুর ছোটখাটো বৈধ-অবৈধ কোম্পানি আছে, যারা যেমন তেমন করে ওষুধ বানায়। তাদের না আছে কোয়ালিটির জ্ঞান, না আছে সদিচ্ছা। যে ওষুধের একটা পাতা বানাতে একটা বড় কোম্পানির কস্টিং ৫০ টাকার কাছাকাছি চলে যায়, তারা সেটাই ৮ টাকা বা ১০ টাকায় বানিয়ে ফেলে। সেই ওষুধ বানানেওয়ালারা না করে কেমিক্যাল সিন্থেসিস, না ব্যবহার করে ভালো কাঁচামাল। ফলে সেই ওষুধের কার্যকারিতা কি আর দামি ব্র্যান্ডের ওষুধের মতো হবে?
এরপরও সেই ওষুধগুলোই বাজারে চলছে। রমরমিয়ে। নামজাদা এক ফার্মা সংস্থার পূর্ব ভারতের দায়িত্বে থাকা অফিসার বলছিলেন, ‘এটা জেনেরিক ওষুধের যুগ হয়ে গিয়েছে। মানে, ব্র্যান্ডের নামমাহাত্ম্য কাটিয়ে অনামীরা বাজারে জাঁকিয়ে বসেছে। এরা ডাক্তারের কাছে যায় না। এদের মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ লাগে না। সরাসরি ওষুধের দোকানে। ধরুন আপনি দোকানে গিয়ে বললেন, গলাটা গতকাল থেকে খুব ব্যথা করছে। সঙ্গে জ্বর জ্বর ভাব। মনে হচ্ছে গলায় ইনফেকশন হয়েছে। কিছু একটা দাও তো! দোকানদান আপনাকে এমন একটা ওষুধ দেবে, যার মার্কেটে নাম নেই। সেই নামওয়ালা ওষুধ বিক্রি করলে ওর হয়তো ১০ টাকা প্রতি পাতায় প্রফিট থাকে। আর অনামীটা চালিয়ে দিলে ২০-২৫ টাকা। এটাই হল ডাক্তার না দেখিয়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ কেনার বিপদ। সেই ওষুধ খেয়ে যদি ভয়ানক সাইড এফেক্ট হয়, রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে দোকানদারকেও ধরতে পারবেন না। কারণ, তিনি দোকানদারের থেকে পাকা বিল নেননি! আর যদি নিয়েও থাকেন, সেই কোম্পানিকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে? সরকারই তখন রোগীকে বলবে, ডাক্তার না দেখিয়ে ওষুধ কিনেছিলেন কেন?’
ভেজাল ওষুধ। জাল ওষুধ। গোটা দেশে এর চোরাবাজার ছড়িয়ে রয়েছে। মহারাষ্ট্র, গোয়া, গুজরাত, পাঞ্জাব, সিকিম... এমনকী আমাদের রাজ্যেও। শোনা যায় কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া, আসানসোলে জাল ওষুধের রমরমা ব্যবসা। কোথাও জাল ওষুধ তৈরি হচ্ছে, কোথাও আবার লেবেল। গুড়জল বা আজেবাজে কেমিক্যালের বোতলে কাফ সিরাপের লেবেল সেঁটে দিলেই হল। জালিরা অবশ্য নিজের এলাকাতেই এই ব্যবসা করে না! ধরা যাক, হাওড়ায় এমন একটা জায়গায় তৈরি হল ৫০ বোতল কাফ সিরাপ। একজন লোক সেই স্টক নিয়ে চলে গেল আসানসোল। নামী কোম্পানির লেবেল লাগিয়ে। সরাসরি ওষুধের দোকানে গিয়ে বলল, রেট কাট করে কোম্পানি বেচছে। আপনি কত টাকায় কেনেন? দোকানদার বলল ৮০ টাকা। সে বলল, আমি ৫০ টাকায় দেব। দোকানদার দেখল, দারুণ অফার তো! ৫০ টাকায় কিনে ১০০ টাকায় বেচলে ডবল প্রফিট! তবে হ্যাঁ, কোনও দোকানদার কিন্তু জেনেশুনে জাল ওষুধ বেচেন না। কারণ, সবার আগে তিনিই ধরা পড়বেন। তিনি এসব করেন বেশি লাভের আশায়। এভাবে এক্সপায়ারি ওষুধও দেদার মার্কেটে চলে যায়। জাল তারিখের স্ট্যাম্প, ব্যাচ নম্বর মেরে। অফিসার ভদ্রলোক বলছিলেন, ‘সবচেয় বেশি জাল হয় কিন্তু ইঞ্জেকশনে। আপনি টেডব্যাগ নেওয়ার সময় জিজ্ঞেস করেন কোন কোম্পানিরটা দেওয়া হচ্ছে? এভাবে কমদামি, অজানা কোম্পানির ওষুধ যেমন আপনার শরীরে ঢুকে পড়ে, তেমনই জাল ইঞ্জেকশনও আসে। সবচেয়ে বেশি ভেজাল হয় সঙ্গের ফ্লুইডে, যা মিশিয়ে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। আর সিরিঞ্জে। এতটাই বিপজ্জনক অবস্থায় ব্যাপারটা চলে যাচ্ছে, ভাবা যায় না। দাম কিন্তু সেই একই দিতে হয় আপনাকে’।
এবার আসা যাক দামে। ওষুধের বাড়তে থাকা দাম ইদানীং সত্যিই বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেদিনই এক ভদ্রলোক বলছিলেন, ‘যে প্রেশারের ওষুধ এক পাতা ১৩৬ টাকা ১৩ পয়সা এমআরপি ছিল, সেটাই এখন ১৪৯ টাকা ৫৪ পয়সা। সুগার, গিন্নির থাইরয়েড সবকিছুর দাম বেড়েছে। কী করি বলুন?’ বিষয়টা মোটেও ভুল নয়। এই নজরকাড়া দাম বৃদ্ধির কারণটা কী? প্রথমে আসা যাক ট্যাক্সে। আগে ওষুধের জন্য ট্যাক্স পড়ত ৪.৭৫ শতাংশ। জিএসটি চালু হওয়ার পর সেটাই ৫ থেকে ১৮ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। কয়েকটা হাতেগোনা আছে, সেই ওষুধে জিএসটি চাপে না। কিন্তু বেশিরভাগই ১২ শতাংশ। তাহলে এখানেই একটা ওষুধের দাম প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে গেল। তার উপর কিছু জীবনদায়ী ওষুধ, ইঞ্জেকশনের দাম সরকার বেঁধে দিয়েছে। কাজেই কেমিক্যাল, কিংবা ওষুধ তৈরিতে দরকারি স্টার্চ, ল্যাকটোজ, গ্লিসারিনের মতো জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও এই ধরনের কিছু ওষুধের এমআরপি বাড়াতে পারে না কোম্পানিগুলি। তারা গুণমানের সঙ্গে সমঝোতাও করতে পারে না! তখন কী হয়? যে সব ওষুধের দামের উপর বিধিনিষেধ নেই, সেগুলিকে টার্গেট করা হয়। অধিকাংশ ওষুধের দাম আবার ১০ শতাংশের বেশি বাড়ানোও যায় না। আর রয়েছে মার্কেটের তালমেল। একটা বড় কোম্পানি যে কম্পোজিশনের ওষুধের দাম ১০০ টাকা রাখে, অন্য বড় সংস্থাও তারই কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করে। যদি কেউ সেটা ১৩০ টাকা করে দেয়, তাহলে ডাক্তার বলবেন, ‘তোমারটা লিখব কেন? দাম বেশি যে!’ এরপরও চিকিৎসকদের একাংশের সাহায্যে তেমনটা হয়ে থাকে। বেশি হয় ইঞ্জেকশনের ক্ষেত্রে। ধরা যাক একটা কম্পোজিশনের অ্যাম্পুলের গড় দাম বাজারে ১১০০ টাকা। কিন্তু ১৬০০ টাকার অ্যাম্পুল নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেন একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। বললেন, আপনি আমাদেরটাই লিখুন। যে ক’টা লিখলেন, মাসের শেষে সবগুলোর জেরক্স দিয়ে দেবেন। বদলে আপনি অমুক বা তমুক গিফ্ট পাবেন। এমন ডাক্তারের সংখ্যা যদিও কম, তাও প্রবণতাটা রয়েছে। অনেক সময় ডাক্তারের হাতের লেখা বোঝা দুষ্কর হয়ে যাওয়ায় রোগী দ্বারস্থ হন দোকানদারের। তিনি যদি বুঝতে না পারেন, তাহলে অন্য একটি ওষুধ গছিয়ে দেন। সে আর এক ভয়ানক ব্যাপার। কিংবা অন্য ব্র্যান্ডের ওষুধ ধরিয়ে বলেন, ‘একই ওষুধ। এতেও একই কাজ হবে। দামটাও কম।’ রোগীও তাতে বিশ্বাস করে নেন।
এখন আবার কেন্দ্রের ফার্মাসিউটিক্যাল পলিসি আটকে রয়েছে বড় কোম্পানিদের আপত্তিতে। দাবি, এই নীতি কার্যকর হলে ওষুধের দাম আরও বাড়াতে হবে। তাই সেই খসড়ায় অদলবদল চলছে। এই হাইপ্রোফাইল যুদ্ধে আরও একটা মজা আছে। হঠাৎ সরকার একটা ওষুধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল। অথচ বড় কোম্পানির সেই ব্র্যান্ড মার্কেটে প্রচুর ছড়িয়ে আছে। তখন সেই সংস্থা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে দিল। এসব ক্ষেত্রে বড় ফার্মা কোম্পানিদের কাগজপত্র এতটাই জোরদার থাকে যে, সরকারপক্ষকে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হয়। ব্যাস, যতদিন মামলা চলবে, বিক্রিতে বাধা নেই। মার্কেটে যা স্টক ছিল, শেষ হয়ে গেল। বরং নতুন করে উৎপাদন এবং বিক্রি চলতে থাকল রমরমিয়ে।
তারতম্যের বাজার। ওষুধের দামের। এই তারতম্য মেটাতে হলে সরকার এবং রেগুলেটরি কমিটিগুলোকে অনেক বেশি সক্রিয় কিন্তু হতেই হবে। কঠোর হতে হবে প্রশাসনকে। ছোট, অবৈধ কারখানা বন্ধ করা সবার আগে দরকার। আচমকা অভিযান চালানো দরকার ওষুধের দোকানেও। অভিযানের অভিমুখটা হোক অবশ্যই গুণমান। যেমন তেমনভাবে ওষুধ বানিয়ে বাজারে ছাড়ার আগে যদি সত্যিকারের একটা স্ক্যানারের মধ্যে দিয়ে যায়, তাহলেই ধরা পড়বে ভেজাল। কোনও ওষুধ দোকানে ঢোকার আগে দেখে নিতে হবে তার সবরকম পরীক্ষা হয়েছে কি না। পিউরিফিকেশন, কেমিক্যাল সিন্থেসিস... সবকিছু। এটা করলেই গুণমান বজায় রাখতে হবে সবাইকে। আর ওষুধের দামও একটা নির্দিষ্ট পরিধির মধ্যে চলে আসবে। ‘জেনেরিক যুগে’ আজ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ লোকসান করতে হয় বড় কোম্পানিদের। তাতে যদি সাধারণ মানুষের উপকার হতো, প্রশ্ন ছিল না। তা কিন্তু হচ্ছে না। আমরা জানতেও পারছি না, ওষুধের নামে কী মিশছে শরীরে।