অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
ওই দিনটির দিকে ফিরে তাকিয়ে দেশ জানতে চাইছে, কার স্বার্থে এনডিএ সরকার এই কঠোর পদক্ষেপ নিল? সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছেন, দু’বছর আগে দেশের উপর খুবই অন্যায্য একটি নীতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যা বিশাল এক কেলেঙ্কারির শামিল।
নোটবন্দির পক্ষে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেলের যুক্তি ছিল, বাতিল ৫০০ ও এক হাজার টাকার নোটের এক-তৃতীয়াংশই আর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ফিরে আসবে না। এর ফলে বিশাল পরিমাণ কালো টাকার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটবে। হায় রে! মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্যকে মিথ্যা প্রমাণ করে বাতিল নোটের ৯৯.৩ শতাংশই আবার ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ফিরে এসেছে। অর্থাৎ, নোট বাতিলের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ কোটির কালো টাকা সাদা হয়ে গিয়েছে। নোটবন্দি দেশের ইতিহাসে মেগা কেলেঙ্কারিতে পরিণত হয়েছে।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংসদের কক্ষে আমাদের অনেক বড় বড় কথা শোনানো হয়েছিল। যারা নোটবন্দির সুযোগে কালো টাকা সাদা করেছে, তাদের হদিশ পেতে ‘তথ্য বিশ্লেষক’দের কাজে লাগানো হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত একজন অপরাধীও ধরা পড়েনি। এমনটা কেন? অদক্ষতা? নাকি কালো টাকার কারবারিদের অসৎ উপায়ে অর্জিত সম্পত্তি বৈধ করার লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত এই গাফিলতি?
এবং সর্বোপরি, আরবিআইয়ের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, এনডিএ জমানায় বিশাল পরিমাণে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। সেখানে নীরব মোদিরা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। এখন ভারত সরকার চাইছে, আরবিআই ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা এনডিএ সরকারের হাতে তুলে দিক। ধারা ৭-এর ব্যবহার করে আরবিআইকে যদি এজন্য বাধ্য করা হয়, তাহলে কি এই বিশাল পরিমাণ অর্থ আরও একটি কেলেঙ্কারির জন্য ব্যবহার করা হবে? স্বার্থ রক্ষিত হবে কিছু বন্ধু শিল্পপতির?
নোটবন্দির ফলে জিডিপি-র বৃদ্ধি নিম্নমুখী হয়ে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এবং এখন এর ফলে আরও একঝাঁক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে দেশকে। আর্থিক ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না, জিএসটি সংগ্রহে ঘাটতি, কর্মসংস্থান নিম্নমুখী, কৃষক আত্মহত্যা, রপ্তানিতে ঘাটতি, ছোট শিল্পের নিদারুণ অবস্থা। ভারতে সমাজের তৃণমূল স্তরের কোটি কোটি মানুষের জীবন নির্ভরশীল দেশের বিশাল ‘ইনফর্মাল সেক্টরে’র উপর। সেই সেক্টরের বিশাল অবমূল্যায়ন ঘটেছে।
আমি নিশ্চিত, দেশের সাধারণ মানুষের বিচক্ষণতাই শেষ কথা বলবে। দু’বছর আগে নোটবন্দির মতো স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক দলটি এই দৈন্যদশা ডেকে এনেছে, মানুষ তাদের শিক্ষা দেবেন। আর এই নোটবন্দির পরপরই আগাগোড়া অপ্রস্তুত ও তালগোল পাকানো জিএসটি চালু করে দেওয়া হয়েছিল।