কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
সন্ন্যাসং কর্মণাং কৃষ্ণ পুনর্যোগঞ্চ শংসসি।
যচ্ছ্রেয় এতয়োরেকং তন্মে ব্রূহি সুনিশ্চিতম্।।
কিন্তু মূল জিজ্ঞাসা শ্রেয়ের জিজ্ঞাসা, সেটা যেন আমরা ভুলে না যাই। উত্তরে ভগবান দেখালেন, তুমি কেবলই ভুল করছ কেন? সন্ন্যাস আর যোগ দুটো আলাদা জিনিস নয়, দুটো একই জিনিস। যা সাংখ্য, তাই যোগ।
যৎ সাংখ্যৈঃ প্রাপ্যতে স্থানং তদ্যোগৈরপি গম্যতে।
একং সাংখ্যঞ্চ যোগঞ্চঃ যঃ পশ্যতি স পশ্যতি।।
ঐ যে সন্ন্যাস, ঐ যে জ্ঞান, সেটা ‘দুঃখমাপ্তুমযোগতঃ’, যোগ ছাড়া কিছুতেই সেই সন্ন্যাস অবস্থা লাভ হতে পারে না। সন্ন্যাস মানে সবকিছুই তাঁতে সমর্পণ। পরিপূর্ণ অর্পণের ফলেই সে-বিশুদ্ধ জ্ঞান ফুটে উঠবে। কিন্তু যোগের দ্বারা নিজের চিত্তকে সম্পূর্ণভাবে নিজের অধীন না করতে পারলে, আয়ত্ত করতে না পারলে, সুনিয়ন্ত্রিত করতে না পারলে সন্ন্যাস বা সমপর্ণ হবে না। তাই এই সুনিয়ন্ত্রিণের কথা যজ্ঞের থেকে শুরু করেছেন। যজ্ঞরূপ সুনিয়ন্ত্রণের পর এখন আসছে তার পরের ধাপ, সেটা হচ্ছে যোগরূপ সুসংযম। জীবনকে সুনিয়ন্ত্রিত করলাম, যেমন আমার খাওয়া, শোওয়া বা নাওয়ার সময়ের কোনো ঠিক ছিল না সাধারণ জীবনে। এই সাধারণ জীবন যদি আমরা অনিয়মিত, উচ্ছৃঙ্খল বা বিশৃঙ্খলভাবে কাটাই, সকালে কখন উঠব, কখন পড়ব, কখন লিখব, কখন বেড়াব, কোনো সময়ের যদি নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তাহলে সমস্ত কিছুই এলোমেলো হয়ে শুধু শক্তির অপচয় ঘটে। কিন্তু সেখানে যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ আনি তাহলে সেই নিয়ন্ত্রণের ফলে আমরা পৌঁছাই পরের ধাপে। আমরা সুসংযত হতে শিখি। প্রথমে সুনিয়ন্ত্রিত, সুনিয়মিত করে নিতে পারলেই তার পরের ধাপে পৌঁছে যাই, সুসংযত হয়ে যাই। এই সংযমই হল যোগের মূল কথা। সংযম কথাটিকে আমরা সাধারণত মনে করি শুধু ইন্দ্রিয়ভোগ, যেমন আহারাদি, থেকে বিরত থাকা। আসলে কিন্তু সংযম তা নয়। সংযম কথাটি যোগশাস্ত্রে পারিভাষিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে, ধারণা-ধ্যান-সমাধিকেই সংযম বলা হয়েছে তাহলে সংযম মানেই হচ্ছে intense concentration গভীরতম একাগ্রতা। এই একাগ্রতা আনবার জন্যই আমরা প্রথমত আহার-বিহারাদির মধ্যেও এই নিয়ন্ত্রণ বা সংযম আনবার প্রয়াস করে থাকি।