পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শ্বাস-প্রশ্বাস অত্যন্ত আস্তে হলেও তার কোনরকম অসুবিধে হয় না।
দ্বিতীয়ত, ধ্যানের সময় মেরুদণ্ডের কোন অংশ কাঁপতে থাকে কিম্বা মনে হয় একটি ছুরি কেউ যেন মেরুদণ্ডের মধ্যে দিয়ে নীচে থেকে ওপর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ-অবস্থায় সাধকের শারীরিক অস্বস্তি হয়। খুব বেশি অস্বস্তি হলে মেরুদণ্ডের সেই অংশে হাত দিয়ে সামান্য ম্যাসাজ্ করে দিতে হয়। ম্যাসাজ করার সময় হাতকে ভার্টিক্যাল, না চালিয়ে হরাইজন্টাল্ ভাবে চালাতে হবে। এ-ধরনের শারীরিক অস্বস্তি অনেক সময় ধ্যানকালীন অবস্থার পরেও হয়। তখন সাধক উঠতে-বসতে-শুতে এটি অনুভব করেন, স্থির হয়ে থাকতে পারেন না। কয়েকদিন ধ্যান বন্ধ রাখলে এটি চলে যায়, কিন্তু ধ্যান বন্ধ না করে নীরবে এই অস্বস্তিকে সহ্য করা দরকার।
তৃতীয়ত, সাধকের তখন নানারকম দর্শন হতে পারে —জ্যোতি, দেব-দেবীর উজ্জ্বল রূপ, চেনা-অচেনা বিভিন্ন জায়গার এবং পরিচিত-অপরিচিত নারী-পুরুষের মুখ, সুন্দর ও বীভৎস দৃশ্য ইত্যাদি অনেক কিছু সাধকের সামনে আসে। এসব দর্শন ছাড়া কিছু মানসিক শক্তিরও (pshchic power) বিকাশ ঘটে। প্রথমদিকে এগুলি তাকে আনন্দ দিলেও পরে এগুলিও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেজন্যে সাধক যা-কিছু দেখুন-শুনুন বা অনুভব করুন না কেন, এগুলির ওপর নজর না দিয়ে চিন্তা করতে হয়—‘কে দেখছে?’ অর্থাৎ ‘আমি’-বোধের ওপর মনকে ফিরিয়ে আনতে হয় বারবার। এসব দর্শনকে প্রাধান্য দিলে সাধকের উন্নতি ব্যাহত হয়।
চতুর্থত, ধ্যান করার সময় মন লয়-অবস্থায় চলে যেতে পারে, অর্থাৎ মনে অন্য চিন্তা না উঠলেও সাধক ‘আমি’-বোধ সম্বন্ধেও সচেতন থাকেন না। কিছুক্ষণ পর মন সাধারণ অবস্থায় ফিরে এলে সাধক সচেতন হন ও ভাবেন যে তার হয়তো সমাধি হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে এটি সমাধি নয়, মন তখন লয় অবস্থায় চলে গিয়েছিল।
স্বামী সৌমেশ্বরানন্দের ‘দৈনন্দিন জীবনে ধ্যান ও শান্তি’ থেকে