বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
উত্তর: ‘মন্ত্র’ শব্দ তো? শব্দ তাঁর প্রতিপাদ্য অর্থাৎ প্রতিপাদনের যোগ্য বা বিষয়ীভূত [প্রতিপাদ্য বিষয়]; তিনিই ভগবান। মন্ত্র মনে মনে জপ করবে, নামও মনে মনে করবে।
প্রশ্ন: তাঁকে পাই না, সর্বদা হারাই কেন?
উত্তর: এই সংসারের পথে কি হারালে? সমস্ত বিশ্বজোড়া তাঁর চরণ, তুমি সরাতে পারবে না, তিনিও সরাতে পারবেন না।
প্রশ্ন: ‘রূপং দেহি’ বলা হয় কেন?
উত্তর: দেখ, যে ভাব নিয়ে মানুষ উপাসনা করে সে সেই ভাবের সিদ্ধি পায়। কেউ যদি ভাবে—আমার রূপ-গুণ হবে, আর এই ভাব নিয়ে উপাসনা করে; সে তাও পায়।
প্রশ্ন: বিচার করাই কি সব?
উত্তর: বিচার আমাদের অন্তিম সিদ্ধান্তে পৌঁছে দিতে পারে না, কিন্তু সাধনা করতে গিয়ে সাধকের practical application-এর জন্য বিচার করতে হবে।
Philosophy বলবে আমি আরেকটু এগিয়ে যাই, philosophy-তে কোন finality বা সিদ্ধান্ত নেই। বিজ্ঞানেও কোন finality বা সিদ্ধান্ত নেই, বেদান্তেও finality নেই। শ্রুতির কথা শাস্ত্রে আছে, কিন্তু শ্রুতি যে সত্য তা কেমন করে জানলাম? ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে বলে শেষ পর্যন্ত শ্রুতিকে ধরলাম। একদিকে শ্রুতিকে বলা হয়, আরেক দিকে বলা হয় অনুভব করেছে যে পুরুষ তাকে; কিন্তু তার অনুভবটাই যে ঠিক তা কি করে বলবে? অন্য লোকেরাই বা তার অনুভব বুঝবে কি করে? একজন stage-এ অভিনয় করছে, অন্যেরা তা দেখে বুঝতে পারছে যে লোকটি ভাল অভিনয় করছে, তাই এটি পরসঙ্গ। কেউ রাজার অভিনয় করছে কিন্তু সে নিজে জানে যে আসলে সে রাজা নয়। শুধু তর্কের খাতিরে ঈশ্বর আছেন কিনা এ নিয়ে তর্ক করে কোন লাভ নেই, যদি আমি আমার বিশ্বাসকে দৃঢ় করবার জন্য অনুকূল তর্ক করি তবে তাতে আমার লাভ হবে।
প্রশ্ন: শুদ্ধাভক্তি কিভাবে হয় মহারাজ?
উত্তর: ভক্তি করতে করতে শুদ্ধাভক্তি আসে। ভগবানেতে ভক্তি করতে করতে ভগবানের প্রতি ভালবাসা বাড়ে; এইভাবে শুদ্ধাভক্তি হয়। ঠাকুরের কথাগুলি, তাঁর উপদেশগুলি এত পরিষ্কার, এত সহজবোধ্য যে তাঁর কথা ও উপদেশগুলি বোঝার জন্য কোন পাণ্ডিত্যের প্রয়োজন হয় না। কাজেই ঠাকুর লীলা করবার পর যাঁরা জন্মলাভ করেছেন, তাঁরা সত্যই ভাগ্যবান।
প্রশ্ন: চেতন, জড় কি? ঠিক বুঝতে পারি না।
উত্তর: দুটি তত্ত্ব—চেতন আর জড়। চিৎ তত্ত্ব আর জড় তত্ত্ব। এই ‘প্রকৃতি’ আর ‘জড়’ মিলে সৃষ্টি। ‘জড়’-এর সঙ্গে ‘প্রকৃতি’র অধ্যাস না হলে সৃষ্টি হয় না। মা-কে ‘প্রকৃতি’ বলি অর্থাৎ তিনি এই বিশ্বের আদি। ‘প্রকৃতি’র অর্থ হলো আদি; ‘প্রকৃতি’র আর একটি অর্থ হলো কারণ। জগতে ব্রহ্মাতিরিক্ত সত্তা নেই। বৈচিত্র্য তিনি নন, বৈচিত্র্য তাঁর ওপর আরোপিত। তিনি হলেন অধিষ্ঠান। অধিষ্ঠান ছাড়া আরোপিত বস্তুর সত্তা নেই। আদি-মধ্য-অন্ত সব তিনি।
স্বামী ভূতেশানন্দজীর ‘অমৃত সন্ধানের কথা’ থেকে