কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
২৩ জানুয়ারি জাতীয় ছুটি এবং দেশপ্রেম দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবিটি আজকের নয়। কিন্তু এখনও এ ব্যাপারে কেন্দ্র নীরব থাকায় হতাশ অনেকেই। যে মানুষটি সারাজীবন দেশমাতা ও দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন করে গেলেন, তাঁর অসামান্য বীরত্ব আত্মত্যাগের মূল্যায়ন কি প্রকৃত অর্থে করতে পেরেছে ভারত সরকার? প্রশ্নটি উঠছে। তা উঠছে এই কারণে যে, স্বাধীনতার পর এতগুলি বছর কেটে গেলেও তাঁর অন্তর্ধান রহস্য এখনও অনুদ্ঘাটিত। বারবার দাবি ওঠা সত্ত্বেও মোদি সরকার এখনও পর্যন্ত সরকারের হাতে থাকা যাবতীয় নথি প্রকাশ্যে আনেনি। এ ব্যাপারে সত্য উদ্ঘাটনে তাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবই প্রকট হচ্ছে। নেতাজি’র অন্তর্ধান রহস্য উদ্ঘাটন, জাতীয় ছুটি এবং দেশপ্রেম দিবসের ঘোষণা—মূল এই তিনটি দাবির ব্যাপারে উচ্চবাচ্য না করে বাংলার বিধানসভা ভোটের আগে নেতাজি নিয়ে বাঙালির আবেগকে বাড়তি মর্যাদা দিতে গেরুয়া শিবিরের নেতারা প্রায়ই সভা সমাবেশে তাঁর প্রসঙ্গ টেনে আনছেন। বুঝতে অসুবিধা হয় না তাঁদের এই নেতাজি স্মরণের পিছনেও রয়েছে ভোটের গোপন অঙ্ক। দেশজুড়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’র ১২৫তম জন্মদিবস নিশ্চয়ই আড়ম্বরের সঙ্গেই পালিত হবে। বাংলাতেও তা পালনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন এবং কিছু কর্মসূচিও ঘোষিত হয়েছে ইতিমধ্যে। কেন্দ্রের তরফেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন এক জাম্বো কমিটি গঠিত হয়েছে। প্রশ্ন হল, ওই বিশাল কমিটির যাঁরা সদস্য তাঁরা কি প্রত্যেকেই জানেন তিনি ওই কমিটির সদস্য? অথবা আর কারা কারা আছেন ওই কমিটিতে? বা বছরভর কর্মসূচির জন্য কত অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র? আশ্চর্যজনকভাবে অনেকেই রয়েছেন অন্ধকারে। বিস্ময়ের আরও বাকি। জন্মজয়ন্তী শুরুর সাতদিন আগেও অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত কমিটির একটি বৈঠকও হয়নি। কেন? এই তাহলে বছরভর কর্মসূচির গুরুত্ব! এত বড় কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকার কীভাবে এগতে চাইছে সে ব্যাপারে কমিটির অনেক সদস্যই আছেন অন্ধকারে! এমনকী নেতাজিকে প্রকৃত সম্মান দিতে তাঁর পরিবারের সদস্যরা কী চান তাও জানতে চাওয়া হয়নি। মোদি জমানায় অনেক ঘটনার মতো এও এক বিস্ময়কর ঘটনা। আসলে উদ্দেশ্য আর আন্তরিকতার মধ্যে ফারাক থাকলেই এমনটা ঘটে।
বাঙালির হৃদয় জুড়ে থাকা দেশবরেণ্য এই মানুষটিকে সম্মান জানাতে হলে তাই সবার আগে সরকারের উচিত কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করা। কেন্দ্রও জানে, ভারতের সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষত যুবসমাজে নেতাজির গ্রহণযোগ্যতা আকাশছোঁয়া। তাই ভোটের রাজনীতি ছেড়ে এবার অন্তত তাঁর অবদানের সঠিক মূল্যায়ন করাটা ভীষণ জরুরি।