বিদ্যার্থীদের কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। বিবাহ প্রার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের ... বিশদ
আপনি যখন খেলার মাঠে বা টি-ভি-তে ক্রিকেট ম্যাচ দেখছেন তখন ভাবছেন যে আপনি সরাসরি ঐ খেলা দেখছেন। কিন্তু সত্যই কি সরাসরি দেখেছেন? গাভাসকার কাভার-ড্রাইভ্ করছেন আর রিচার্ডস কাভার-ড্রাইভ্ করছেন — এই দুটি ঘটনাকে কি আপনি একইভাবে দেখছেন? প্রথমটিকে যত আনন্দ পাচ্ছেন, দ্বিতীয়টিকে তত আনন্দ পাচ্ছেন না। তাই না? কেন এমন হয়? আপনি যে-মন নিয়ে ঘটনা দুটিকে দেখছেন, সেই মনকে জাতীয়তাবোধ প্রভাবিত করে রেখেছে। একটি ফুলকে আপনি কিভাবে দেখেন? কবি হলে এক ভাবে, বোটানিস্ট হলে অন্য ভাবে। মানুষ যখনই কিছু দেখে, তার মানসিক অবস্থা ঐ দেখার মধ্যে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আপনি যখন আপনার সন্তানকে দেখেন, কোনো রাজনৈতিক নেতা বা ধর্মীয় নেতাকে দেখেন, আপনি তখন তাদের সম্বন্ধে আপনার যে ধারণা (image) সেই ধারণার মাধ্যমে দেখেন। এই কথাকে শুধু বুদ্ধি দিয়ে নয়, দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে নিজের মনকে বিশ্লেষণ করে বোঝার চেষ্টা করুন। আমরা সাধারণভাবে যখন কিছু দেখি তখন সেটিকে একটি পটভূমিকা (blackground) থেকে দেখি। এই পটভূমিকা হলো আমাদের মনের বিশেষ ধরন। এটিকে তৈরী করে আমাদের স্মৃতি। কোনো-কিছু দেখার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতি সেটিকে নিজস্ব ছকে ঢেলে নিতে চায়। পূর্ব অভিজ্ঞতার কোনো একটির সঙ্গে নতুন-দেখা জিনিসটির কিছু সাদৃশ (similarity) মন আবিষ্কার করে এবং এই সাদৃশ্যের ভিত্তিতে মন নতুন-দেখা জিনিসটিকে বোঝে ও গ্রহণ করে কিংবা বাতিল করে। যেহেতু মনের স্বাভাবিক গতি এই সাদৃশ্য আবিষ্কার করা সেহেতু মন নতুন দেখা বিষয়ের মধ্যে সদৃশ-অংশ নিয়েই বেশি মাথা ঘামায়। ফলে সে বিষয়টিকে পূর্ণভাবে (totally) দেখতে ব্যর্থ হয়। নতুন বিষয়ের মধ্যে সদৃশ-অংশ আবিষ্কার করে মন সেই বিষয়টির নামকরণ করে শ্রেণীভুক্ত (categorised) করে।
তাহলে ব্যাপারটি কি দাঁড়ালো? নতুন-দেখা বিষয়টির অস্তিত্ব বর্তমানে(present)। মন এই বর্তমানের কিছু অংশ গ্রহণ করে চলে গেল অতীতে বা স্মৃতিতে (past)। সেখান থেকে গেল ভবিষ্যতে না নামকরণে (future)। নতুন দেখা বিষয় বা বর্তমানে মন বেশিক্ষণ না থেকে অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে দোল্ খেল। ধ্যানের বিভিন্ন দর্শনেও (vision) এটি হয়।
স্বামী সৌমেশ্বরানন্দের ‘দৈনন্দিন জীবনে ধ্যান ও শান্তি’ থেকে