বিদ্যার্থীদের কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। বিবাহ প্রার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের ... বিশদ
আপনি যখন পার্সেপ্শন্ বজায় রাখছেন ইনভল্ভমেন্টকে সরিয়ে দিয়ে, তখনই আপনার মন সচেতন (aware) হচ্ছে অথচ চিন্তাস্রোত বইছে না। একটি বিষয় লক্ষ্য করুন — আপনি যখন চোখ বন্ধ করে মনের চিন্তাগুলিকে ধরার চেষ্টা করছেন, তখন কি হয়? মনে কোনো চিন্তার ঢেউ ওঠে না। তাই না? তখন আপনি সচেতন, কিন্তু চিন্তাস্রোত নেই। এ-অবস্থায় কিছুক্ষণ থাকলে — আপনি যদি নবীন সাধক হন — ঘুম পেয়ে যাবে। যেহেতু চিন্তা ছাড়া সাধারণ মানুষের মন থাকতে পারে না, সেহেতু ঘুমের সাহায্যে মন ঐ অবস্থা থেকে পালাতে চায়। মন তখন ঘুমোতে চায়, কারণ ঘুমিয়ে পড়লে স্বপ্নের মধ্যে সে আবার তার কাজ শুরু করতে পারবে। কিন্তু আপনি যদি এ-অবস্থায় সচেতন থাকতে পারেন তাহলে আপনার মন একটি উঁচু (vertical) স্তরে যায়, এবং কিছুক্ষণ পরে আপনি তারার (stars) মতে আলোর বিন্দু দেখেন যা ক্ষণস্থায়ী। এগুলি কেন ক্ষণস্থায়ী হয়? ঐগুলি দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মন তাকে স্মৃতির সাহায্যে বুঝতে চায়। আপনার মনে চিন্তা শুরু হয় — এগুলি জ্যোতি, জ্যোতিদর্শনের কথা যোগশাস্ত্রে রয়েছে, আমি আধ্যাত্মিকতার উঁচু স্তরে উঠেছি, ইত্যাদি ইত্যাদি। এই চিন্তাস্রোতগুলি প্রথমে স্মৃতি (অতীত) ও পরে কল্পনাকে (ভবিষ্যৎ) আশ্রয় করে, মন অতীত ও ভবিষ্যৎকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং এর ফলে ‘বর্তমান’ সরে যায়। কিন্তু মনকে আপনি যদি এভাবে কাজ করতে না দেন তাহলে চিন্তাস্রোত উঠবে না, জ্যোতিও স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে।
‘মনকে কাজ করতে না দেওয়া’-র অর্থ মনকে জোর করে চুপ করানো নয়। জোর করে চুপ করানো ইচ্ছাশক্তির একটি কাজ। আপনি যদি ঐ কাজে ব্যস্ত থাকেন তবে উৎসকে (source) আবিষ্কার করার কাজটি করবেন কখন? সেজন্য ‘জোর করে চুপ করানো’ নয়, বরং সচেতন হন মনের চিন্তাগুলির বিষয়ে। ভালো-মন্দের ইন্ভল্ভ্মেন্ট ত্যাগ করে শুধু দেখুন। এই দেখার মাধ্যমে মনে চিন্তাস্রোত নিজেই বন্ধ হবে। মনের নীরবতা তখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসবে। মনের এই স্বতঃস্ফূর্ত নীরবতায় — যখন চেতনা আছে অথচ চিন্তাস্রোত নেই — আপনি আপনার আমি-বোধ বা চেতনা-কেন্দ্রকে আগের চেয়ে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন। এ-সময়ে দ্রষ্টা নিজেকেই দেখছে (observer is observed)। মনের কাছে এটি একটি নতুন অবস্থা। সেজন্যে প্রথমদিকে মন এটিকে সহ্য করতে পারে না, এবং এজন্যেসাধক আমি-বোধে বেশিক্ষণ থাকতে পারেন না। মন সেজন্যে বারবার তার অভ্যস্ত পথে (pattern) ফিরে যেতে চায়, পূর্ব অভিজ্ঞতার সাহায্যে একে ব্যাখ্যা করতে বা বুঝতে পারে না বলে মনের defence mechanism সক্রিয় হয়ে মনে চিন্তাস্রোত তুলতে চায়, ঐ অবস্থাটিকে ব্যাখ্যা করতে চায়।