পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বিবেকখ্যাতিকে পৃষ্ঠভূমিতে রাখিয়া যে কর্ম উত্পন্ন হয় তাহার নাম অক্লিষ্ট কর্ম। অবিবেকমূলক কর্ম নানা প্রকার হইতে পারে। শ্রেণীবিভাগ করিবার সময় এইগুলি শুল্ক, কৃষ্ণ ও মিশ্র এই তিন শ্রেণীতে বিভক্ত হয়। এইগুলি সবই সাংসারিক কর্ম। এইসব কর্মের ফলে সংসারবন্ধন ক্রমশঃ দৃঢ় হয়। কিন্তু বিবেকখ্যাতিমূলক কর্ম হইতে সংসারবন্ধন ক্রমশঃ শিথিল হইয়া যায়। যোগিগণ, শুল্ক, কৃষ্ণ ও মিশ্র নামে প্রধানতঃ তিন প্রকারে কর্ম বিভাগ করিয়া থাকেন। তাহার পর বিবেকখ্যাতি হইয়া গেলে ঐ জাতীয় কর্মের অবসান ঘটে। তখনকার কর্মের নাম অশুক্ল-অকৃষ্ণ। ঐ সকল কর্মে সংসারবন্ধন তো হয়ই না বরং পূর্বাস্থিত বন্ধন কাটিয়া যায়। যোগীর কর্ম অশুক্ল-অকৃষ্ণ, তাই ঐ কর্মের প্রভাবে সংসারোত্পাদক মিশ্র কর্ম, শুক্লকর্ম এবং কৃষ্ণকর্ম এবং অশুক্ল-অকৃষ্ণ কর্ম পরস্পরবিরোধী। শুক্ল ও কৃষ্ণ কর্মে যেমন মিশ্রণ হয় না তেমনি অশুক্ল-অকৃষ্ণ কর্মের সহিত শুক্ল কর্মেরও মিশ্রণ হয় না। শুক্লের সঙ্গে কৃষ্ণ থাকিলেও সান্নিধ্য বশতঃ শুক্ল কৃষ্ণ হয় না। ঠিক এই প্রকার অশুক্ল-অকৃষ্ণ সঙ্গে শুক্ল ও কৃষ্ণ কর্মের মিশ্রণ হয় না। ইহাই কর্ম-বিজ্ঞানের রহস্য। ইহা সংরক্ষিত না থাকিলে অনাদি সংসারের মধ্যে এক অবস্থা হইতে অন্য অবস্থায় পরিণতি হইতে পারিত না। ক্লিষ্ট কর্ম সংসারজনক কিন্তু অক্লিষ্ট কর্ম সংসারনাশক। পরমেশ্বরের স্বরূপে কোন প্রকার কর্মেরই স্পর্শ নাই। কর্মবিজ্ঞান অতি জটিল রহস্য স্বরূপ। ইহা মত্স্যজীবির জালের মত। অনাদিকাল হইতে ক্লিষ্ট কর্মের ধারা চলিয়া আসিতেছে। বিবেকখ্যাতি পূর্ণ না হইলে এই ধারার বিশ্রান্তি নাই। কর্মাশয় ক্লিষ্ট কর্ম হইতে উত্পন্ন হয়। অক্লিষ্ট হইতে হয় না।
ডক্টর গোপীনাথ কবিরাজের ‘সাধনা ও সিদ্ধি’ থেকে