বিদ্যায় সাফল্যও হতাশা দুই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। কর্মপ্রার্থীদের শুভ যোগ আছে। কর্মক্ষেত্রের ... বিশদ
স্বামীজী তথায় সর্বসমক্ষে পাঁচটি বক্তৃতা দেন। তিনি শ্রোতৃবর্গকে মন্ত্রমুগ্ধ করিয়া রাখিতেন, কারণ তাঁহার বক্তব্য বিষয়ের উপর অসাধারণ অধিকার ছিল এবং তিনি এমন ভাবে কথা কহিতেন, যেন তিনি ‘চাপরাস’ পাইয়াছেন। তাঁহার প্রদত্ত যুক্তিগুলি, কখনও ন্যায়বিরুদ্ধ হইত না, উহাতে তৎকথিত সিদ্ধান্তগুলির সত্যতার উপর দৃঢ় প্রত্যয় উৎপাদন করিয়া দিত, আর বক্তৃতায় অতি উৎকৃষ্ট অংশেও তিনি কদাপি ভাববশে চালিত হইয়া, যে সত্যটি তিনি লোকের মনে দৃঢ়াঙ্কিত করিয়া দিতে প্রয়াস করিতেছিলেন, সেই মূল বক্তব্যটি হারাইয়া ফেলিতেন না।
তিনি নির্ভীকভাবে তাঁহার অননুমোদিত ধর্ম বা দর্শনের সিদ্ধান্তগুলির প্রতিবাদ করিতেন, কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যাপারে লোকে স্বতই বুঝিতে পারিত যে, এ ব্যক্তির হৃদয় এত মহৎ যে উহা লোকের দোষ ও দুর্বলতার দিকে না দেখিয়া সমুদয় বিক্ষুক আপনার বুকে টানিয়া লইতে পারে; ইনি লোকের অত্যাচার সহ্য করিতে ও তাহাদিগকে ক্ষমা করিতে কখনও পরাঙ্মুখ হইবেন না। বাস্তবিকই, পরে আমার তাঁহার সহিত ঘনিষ্ঠতালাতের সুযোগ ঘটিলে আমি দেখিয়াছি, তিনি সত্যসত্যই মানুষের যতদূর সাধ্য ততদূর ক্ষমা করেন। আহা, কি অপরিসীম ভালবাসা ও ধৈর্যের সহিত তিনি তাঁহার সমীপাগত লোকদিগকে তাহাদের নিজ নিজ দুর্বলতার গোলকধাঁধা হইতে বাহির করিয়া আনিয়া, তাহাদিগকে ‘কাঁচা আমি’র গণ্ডি অতিক্রম করাইয়া ঈশ্বরলাভের মার্গ নির্দেশ করিয়া দিতেন। তিনি ঈর্ষা বলিয়া কিছু জানিতেন না। যদি কেহ তাঁহাকে গালি দিত, তিনি গম্ভীর হইয়া যাইতেন, “শিব শিব” বলিতে বলিতে তাঁহার বদন উদ্ভাসিত হইয়া উঠিত, আর তিনি বলিতেন, “ইহা তো শুধু প্রিয়তম প্রভুরই বাণী।”