কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
আহার, নিদ্রা, ভয় ও মৈথুন মানবে যেরূপ মানবেতর প্রানীতেও এরা তদ্রুপ। কিন্তু মানবে ও মানবেতর প্রানীতে পার্থক্য করবার মত রয়েছে একটি বিশিষ্ট গুণ। ঐ গুণ মানবে অদম্য জ্ঞান পিপাসা। মানুষকে মানুষ নামে পরিচিত হতে হলে তাকে লাভ করতে হয় জ্ঞানালোক। সুতরাং জ্ঞানালোত লাভ করা আমাদের মধ্যে প্রত্যেকেরই বাঞ্ছনীয়। পরম সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, জ্ঞানালোক লাভ করবার শরীরও দিয়েছে বিধাতা মানবকে। অন্য জীব-শরীর হতে মানব শরীরের গঠন প্রকৃতিও ভিন্ন ধরনের। মানব শরীরের বিধান যন্ত্রে-মেরুদন্ড ও মস্তিস্কের মধ্যে এমন কতকগুলি প্রক্রিয়া, এমন কতকগুলি অবস্থান্তর রয়েছে যা দ্বারা জ্ঞান লাভ করবার বিষয়ে মানব ও মানবেতর জীবে বিশাল ব্যবধান রচনা করে দিয়েছেন। ভূতধাত্রী আমাদের এই বিশ্ব প্রকৃতি। সুতরাং প্রাকৃতিক কারণেই আমাদের মানব শরীর জ্ঞানালোক লাভ করবার উপযুক্ত ক্ষেত্র। উদাহরণরূপে বলা যেতে পারে, মানবের মেরুদন্ড উর্দ্ধমুখে অর্থাৎ ইহা আকাশমুখী, পৃথিবীর সমান্তরালে না থেকে পৃথিবীর উপর লম্বা ভাবে অবস্থিত। কিন্তু অন্য জীবের মেরুদন্ড ঐ উর্দ্ধদিকে না থেকে উহা থাকে পৃথিবীর সমান্তরাল। মেরুদন্ড পৃথিবীর সমান্তরালে থাকে বলে ওরা আপন আপন মনকে পার্থিব ধারণার উর্দ্ধে পরিচালিত করতে পারে না। পার্থিব দেহ নিয়ে হয় সুথী, থাকে আহার, নিদ্রা, মৈথুন, সুখে মগ্ন। কিন্তু মানব পৃথিবীতে থেকে চিন্তা করে পৃথিবীর অতীত প্রদেশের কথা। এমন কি ঐ যে অরূপ আকাশ এরও অপর পারে রয়েছে কী-অতৃপ্ত মানবমন খোঁজে তারও সন্ধান।
কার্য কারণের অনুসন্ধানে নিত্য মানবকে কতই না জটিল প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়! মানবের চিন্তা প্রবাহ এভাবে তাকে অতীন্দ্রিয় রাজ্যের দিকে পরিচালিত করে থাকে এবং অবশেষে জানিয়ে দেয় এ অতীন্দ্রিয় রাজ্যের সাথে তার সম্বন্ধ রয়েছে কতটুকু। এ বিষয় অনুধাবন করতে গিয়ে সর্বকালে জ্ঞানালোক লাভ করবার বহু মত বহু পথ আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমান জগতে এরাই নানা ‘ধর্ম্ম’ নামে অভিহিত।
দীপঙ্কর চৌধুরীর ‘অমৃত পুরুষ অদ্বৈতানন্দ’ থেকে