ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
সাধু মহাপুরুষ কি কখন কাহারও অপরাধ লন? তাঁহারা যাহা কিছু বলেন ও করেন সমস্তই তোমাদের মঙ্গলের নিমিত্ত। তুমি এখানে শিখিতে আসিয়াছিলে এই যে ভাবটি বুঝিতে পারিয়াছ ইহা খুব ভালো। আজকাল বড় কেহ সামাজিক ও লৌকিক সদাচার ও শিষ্ট ব্যবহার শিখিতে চায় না। ঠাকুর আমাদিগকে হাত ধরিয়া বহু যত্নে এই সমস্ত বিষয় শিক্ষা দিতেন। এইটিকে শিক্ষার স্থান বলিয়া জানিবে। এখানে শিখিব এই ভাব লইয়া আসিলে তাহার মঙ্গল হইবে।
যত দিন না প্রভুর নামে আশ্রমটি পাকা রকমে বদ্ধমূল হয় তত দিন তোমার ঐ স্থানে থাকা উচিত, নতুবা বুঝিব তুমি অতি আসর, অপদার্থ, নিষ্ঠাহীন। দেখ, স্বার্থ, সুখ, সুবিধা ত্যাগ না করতে পারলে সে কি আবার মানুষ? ঠাকুরের নাম করবে, আবার স্বার্থপর হবে? সে ভক্ত তার উন্নতি কোথায়? তার দেশ চিরকাল অন্ধকারে ডুব থাক্বে, না উন্নতির আলোক পাবে? তুমি খুব ধীর স্থির হয়ে, চিন্তা করে চল্বার চেষ্টা কর্বে।
তোমার অসুস্থ সংবাদে দুঃখিত হইলাম। আমি মাঝে মাঝে গাই:—
‘‘ যখন যেরূপে মাগো রাখিবে আমারে,
সেই সে মঙ্গল যদি না ভুলি তোমারে।
বিভূতি বিভূষণ রতন মণি কাঞ্চন,
তরুতলে বাস কিংবা রাজ সিংহাসন ‘পরে’’।
‘‘আপনাতে আপনি থাক, যেওনা মন কারো ঘরে,
যা চাবি তা বসে পাবি, খোঁজ নিজ অন্তঃপুরে;
পরম ধন সেই পরশমণি, যা চাবি তা দিতে পারে।
(ও মন) কত মণি পড়ে আছে, চিন্তামণির নাচ দুয়ারে।।’’
ঠাকুরকে ধরে পড়ে থাক, কেবল ব্যারাম, ব্যাধির চিন্তা কেন? জান্বে, সব সময় জানবে, সব অবস্থায় জানবে—আমি প্রভুর, প্রভু আমার নিত্যধন—পরম বস্তু—সর্ব্ব সম্পদের সকল ঐশ্বর্য্যের আস্পদ্। ‘নাহং’ ‘নাহং’ সর্ব্বদা কর্বে। যত পার ভগবানের নাম কর্লে আর ভূতের ভয় থাক্বে না। আমরা যে মৃত্যুঞ্জয় মহাদেবের বাচ্চা, একথা স্মরণ রাখবে সব সময়।
*** হাসপাতাল খোলা সম্বন্ধে কে—তোমাদের জানাইয়াছে; আমারও সেই মত। যদি উহার অভাব না থাকে, তবে হাসপাতাল হতে বিরত হওয়াই উচিত। ও অতি নট্খটে ব্যাপার। এই সাময়িক দুর্ভিক্ষে লোক পাঠানই বেজায় মুস্কিল, তার উপর বহুদিনের জন্য সেবাকার্য্যে পাঠান মহা হাঙ্গামার কাজ। স্বামীজিরও ইচ্ছা ছিল বিদ্যমান। ইহা অতি উত্তম সঙ্কল্প। কেবল সেবাশ্রম আর সেবাশ্রম! ঐ এক হুজুক উঠেছে! কেন, নূতন কি কিছু করবার নাই? স্বামীজী শেষ দিন শেষ মুহূর্ত্ত পর্য্যন্ত আমার কাছে কেবল বিদ্যা-প্রচারের কথা বলেছিলেন। ইহাতে তোমাদের ও দেশের মহা কল্যাণ হবে ইহা ধ্রুব সত্য, ইহা ধ্রুব সত্য। তোমাদের আদর্শ জীবন দেখলে ছেলেরা এক অপূর্ব্ব নবজীবন, লাভ কর্ব্বে। হও তোমরা এই বিদ্যা-প্রচারের পথ-প্রদর্শক। সাধুসঙ্গে বিদ্যাচর্চ্চা কর্লে দেশের শ্রী ফিরে যাবে, লক্ষ্যে স্থির হয়ে যাবে ছেলেদের। তবেই ছেলেরা শুধু মানুষ কেন দেবতা হবে, ঋষি হবে। কথায় শুনেছি ঠাকুরের কাছে, ‘‘গুরু কৃষ্ণ বৈষ্ণব—তিনের দয়া হল, একের দয়া বিনা জীব ছারেখারে গেল।’’