কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
তথাপি মুক্তিকথার এত সাড়ম্বর চর্চ্চা কেন? আমের কথা শুনিতে শুনিতে যদি কাহারও আম খাইতে ইচ্ছা হয় এবং সে যদি সাহসী, বলবান ও উদ্যোগী হয়, তবে দেওয়াল ডিঙ্গাইয়া গাছে চড়িবে; রোজগার করিয়া পয়সা খরচ করিবে, এমন কি মালদহে, এমন কি বোম্বে আম খাইতে গিয়া পড়িতেও পারে।
কতকগুলি অন্ধ শিশুকে মাঠে ছাড়িয়া দেওয়া হইয়াছে। শান্তি ও স্বস্তির একমাত্র স্থান মাতৃক্রোড় লাভের জন্য তাহারা ব্যাকুল হইয়া ছুটাছুটি করিতেছে। বিস্মৃত-স্বরূপ জীবকূলের সকল চেষ্টার মূলে স্বরূপ প্রাপ্তির প্রবল আকাঙ্ক্ষা ব্যতীত আর কিছুই নাই। সৌন্দর্য্যে মাধুর্য্যে স্নেহে, প্রেমে, প্রতিভায়, বীর্যবর্ত্তায় সচ্চিদানন্দের একটু একটু আভাস মিলে, তাই তাতে মানুষেরা ক্ষণিক শান্তিলাভ করিয়া কৃতার্থ হয়।
সর্বশেষে চিন্ময় শ্যাম চিন্ময় ধামের সংবাদ পাইয়া জীব উন্মাদের ন্যায় ছুটিয়া চলে। বুদ্ধ শংকর চৈতন্য রামকৃষ্ণের জীবনে সেই উন্মাদনার পূর্ণ প্রকাশ দেখিয়া মানুষ অগ্রগতির উৎসাহ পায়। ইহাদের জীবনালোক প্রকাশ না হইলে পথহারা মানুষ চিরকাল পথে পথেই ঘুরিয়া মরিত।
মহাপুরুষের জীবনাদর্শ সম্মুখে রাখিয়া, গুরু প্রদর্শিত পথে চলিতে চলিতে যখন অবিদ্যা আবরণ খুলিয়া যায়, দেহপ্রাণ মন বুদ্ধির বন্ধন খাসিয়া পড়ে, তখন জীব দেখে সবই চিন্ময়! তখন অতীত জীবন সমূহের সংস্কার রাশি এক এক জীবে এক এক রূপ ধারণ করে।
কেহ চায় জীবন গতির চির অবসান; কেহ চায় ঐশ্বর্য্যের লীলাসম্ভোগ; সখাভাবে পূর্ণতার সহবাস; কেহ চায় ঈশ্বরকে ঐশ্বর্য্যবর্জিত শিশু সাজাইয়া ষোলআনা আপন করিতে এবং কেহ বা জীবনগতির লেশমাত্র রাখিয়া তাঁর মধ্যে সর্বস্ব সমর্পণ। শান্ত,দাস্য,সখ্য,বাৎসল্য, মধুর এই পঞ্চভাবে ব্রহ্মানুভূতি জীবনের চরম পরিমাণ। তাহাতেই হয় জীবনের পরম সার্থকতা।
ব্রহ্মনির্বাণ জীবন লীলার অবসান।
যতদিন জীবনলীলার মধ্যে আছি ততদিন জগৎ মিথ্যা বলিলে বড়ই ভুল হয়। চিন্ময় লোকে সগুণ ব্রহ্মকে নিয়া লীলাবিলাস—শিক্ষার বিদ্যালয়রূপে জগৎকে গ্রহণ করিলে মানুষের কল্যাণ হয়। এই জগতের সব ভাব ও সম্পর্ক নিয়া শ্রীহরিকে যে পাওয়া যায় তাহা মানুষ জানে না—তাই বৃথা কষ্ট করে।
জীবের জীবনের বিভাগগুলি দেখিলাম। প্রতি জীব পাঁচখানা জামা পরিয়া তিনটী গৃহে নাচিয়া বেড়ায়। এই খেলা চলে জন্ম থেকে মরণ পর্য্যন্ত। মৃত্যু হইলে পুনর্বার দেহধারণ না করা পর্য্যন্ত কোথায় থাকে তাহাও একটু জানা দরকার।
ড. সচ্চিদানন্দ ধরের সংকলিত স্বামী প্রেমেশানন্দজীর ‘ পত্র-সংকলন ’ থেকে