যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
‘‘শ্রীশ্রীমা যখন মাদ্রাজে ছিলেন তখন প্রতিদিন তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে দর্শন করতাম এবং তাঁর স্নেহলাভ করতাম।...শ্রীশ্রীমা আমাদের বাড়িতে শুভ পদার্পণ করে আমাদের নৈবেদ্য যেদিন গ্রহণ করেছিলেন, সেই পুণ্যদিন আমার স্মৃতিপটে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’’ সেবারে মাদ্রাজে ‘সারদা দাসনে’র মা ও বাবার মন্ত্রদীক্ষা হয়।
দাক্ষিণাত্য থেকে ফিরে আসার পর শ্রীমা ভক্ত সরযূবালা সেনের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন: ‘‘অনেক লোক আমাকে দেখতে এসেছিল। সেখানকার মেয়েরা খুব লেখাপড়া জানে, আমাকে তারা লেকচার দিতে বললে। আমি বললুম, ‘আমি লেকচার দিতে জানি না, যদি গৌরদাসী আসত তবে দিত।’ অবশ্য শ্রীমা এই অভাব পূরণ করে দিয়েছিলেন। তাঁকে ঘিরে থাকত যে আনন্দস্নিগ্ধ মধুরতা, তার আকর্ষণেই মানুষ তাঁর কাছে আসত এবং তাঁর সান্নিধ্যলাভ করে তৃপ্ত হয়ে ফিরত।
এ-যাত্রায় শ্রীমা মাদ্রাজে এক মাস অবস্থান করেছিলেন। এই সময়কার একটি বিশেষ স্মরণযোগ্য ঘটনা—শ্রীমায়ের উপস্থিতিতে মাদ্রাজে ‘রামকৃষ্ণ হোমে’ অনুষ্ঠিত শ্রীরামকৃষ্ণ—আবির্ভাব উৎসব। শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মতিথি পড়েছিল বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ১৯১১ (১৮ ফাল্গুন ১৩১৭)। সারাদিন ধরে পূজা-পাঠ, ভজন-কীর্তন, প্রসাদ বিতরণ হয়। উৎসবে বহু সংখ্যক ভক্ত যোগদান করে। শ্রীমায়ের উপস্থিতিতে এ-বছরের উৎসব জমজমাট হয়ে উঠেছিল। শশী মহারাজের পাঠানো দু’জন ভক্তকে শ্রীমা সেদিন মন্ত্রদীক্ষা দেন। রবিবার ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ উৎসব। নানা স্থান থেকে আগত বেশ কয়েকটি কীর্তনদল নামকীর্তন করতে থাকে। ফুল ও মালা দিয়ে সাজানো শ্রীঠাকুরের একটি বড় ছবি হলঘরে উঁচু বেদির ওপর স্থাপন করা হয়েছিল। একদিকে ভক্তগণ প্রসাদ ধারণ করেন, অপরদিকে কয়েক হাজার দরিদ্রনারায়ণকে ভোজন করানো হয়। অপরাহ্ণে শ্রীতাথাচারিয়ার হরিকথা পরিবেশন করে উপস্থিত সবাইকে চমৎকৃত করেন। বিকাল সাড়ে পাঁচটায় জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রী এস. গোপালস্বামী আয়েঙ্গার শ্রীরামকৃষ্ণের উদার ধর্মমত ও ভক্তির বিষয়ে একটি লিখিত ভাষণ পাঠ করেন।