শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
কিন্তু মোদির এইসব ঘোষণা কতটা অন্তঃসারশূন্য, তথ্য দিয়ে সেই পর্দা ফাঁস করেছে বিরোধীরা। যেমন বিশ্বকর্মা যোজনায় ঢালাও কাজের প্রচার চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পোঁ ধরেছে বিজেপিও। অথচ মোদি জমানায় দেশে কাজের বাজারের ছবিটা খুবই করুণ। আইএলও-র ২০২৪ সালের রিপোর্ট বলছে, ভারতে শিক্ষিত বেকারের হার গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বেড়েছে। শিক্ষিতদের মধ্যে স্নাতকস্তরের বেকারত্বের হার ৪২ শতাংশ। ২০১২-১৯ সালের মধ্যে নতুন কর্মস্থান বৃদ্ধির হার ছিল ০.০১ শতাংশ, মানে প্রায় শূন্য। অথচ প্রতি বছর সত্তর থেকে আশি লক্ষ প্রার্থী কাজ খুঁজছেন। সিটি গ্রুপের রিপোর্ট বলছে, সকলকে কাজ দিতে হলে বছরে ১.২ কোটি চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। রিপোর্টে প্রকাশ, ২০১৯-২২ সালের মধ্যে সংগঠিত ক্ষেত্রে স্থায়ী চাকরি কমে যাওয়ার হার ১০.৫ শতাংশ থেকে হয়েছে ৯.৭ শতাংশ। একদিকে সংগঠিত ক্ষেত্রে স্থায়ী চাকরি কমছে, অন্যদিকে বাড়ছে কম মজুরির ক্ষেত্রে চাকরি। এদেশে মাত্র ২১ শতাংশ কর্মী বেতনভুক। মজার বিষয় হল, বেকারত্ব নিয়ে হাহাকারের এই বাস্তব ছবিটাকে প্রাণপণে অস্বীকার করার চেষ্টা করছে মোদি সরকার। তার বদলে ‘বিকশিত ভারতে’র অসত্য স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে, যা দুর্ভাগ্যের।
ঘটনা হল, মোদি .৩ সরকারের প্রথম ১০০ দিনেই ব্যর্থতার ছবিগুলি প্রকট আকার নিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, নতুন সরকার গঠনের পর গত কয়েক মাসে বিমানবন্দরের পরিকাঠামো ও মূর্তি (শিবাজি মূর্তি সহ) মিলিয়ে মোট ৫৬টি নির্মাণ ভেঙে পড়েছে। এর অধিকাংশই মোদি জমানাতে তৈরি বা সংস্কার হয়েছে। এই সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ২৬টি সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনায় ২১ জন সেনার প্রাণ গিয়েছে। গত তিন মাসে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অনেকটা কমলেও তার সুফল পায়নি এদেশের মানুষ। এই সময়ে মূল্যবৃদ্ধিও আকাশ ছুঁয়েছে। এর সঙ্গেই রয়েছে অশান্ত মণিপুর। গত প্রায় সতেরো মাস ধরে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য জ্বলছে। কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষ থামার বিশেষ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এখনও সেখানে লক্ষাধিক মানুষ ঘরে ফেরেননি। এক কথায়, একেবারেই ভালো নেই মণিপুর। তবু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কেন্দ্র সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, মণিপুর স্বাভাবিক হলে কেন প্রধানমন্ত্রী সেখানে গেলেন না? প্রশ্ন উঠেছে, কেন সেই রাজ্যে রাজ্যপাল নেই? কেন অনেক মন্ত্রী ও বিধায়ক এখনও রাজ্যের বাইরে রয়েছেন? কেন শাসক বিজেপি তাদের প্রদেশ কার্যালয় খুলতে পারছে না? শাহ এসব প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি। আসলে আগের দুই সরকারের পরম্পরা মেনেই চলছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ভোটে কার্যত নাকখত খেয়েও কোনও শিক্ষাই নেননি তিনি।