যে কোনও ব্যবসায় অগ্রগতি আশা করা যায়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কর্মের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা হতে ... বিশদ
দুর্যোগের পূর্বাভাস যেমন প্রাণিজগৎ আগাম বুঝতে পারে, রাজনীতি-অর্থনীতি-বাণিজ্যের গতি প্রকৃতির পূর্বাভাসও সবার আগে টের পায় শেয়ার বাজার। সেই শেয়ার বাজারেই গত কয়েকদিন ধরে নাগাড়ে রক্তক্ষরণ চলছে। দেখা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত, অর্থাৎ তার আগের ছ’দিনে শেয়ারের প্রধান সূচক সেনসেক্স পড়েছে ২২০০ পয়েন্ট। এর ফলে কুড়ি লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ খুইয়েছেন লগ্নিকারীরা। শুধু বৃহস্পতিবার একদিনেই সেনসেক্স পড়েছে ১০৬২.২২ পয়েন্ট। এই একদিনে সাড়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে লগ্নিকারীদের। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বেচে দিয়েছে। শেয়ারের এই পতন দেখে বাজার বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ বলছেন, তিন দফা ভোটের পর শাসকদের সঙ্গে বিরোধীদের ব্যবধান কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমন হলে হয় কেন্দ্রে দুর্বল সরকার তৈরি হবে, অথবা শাসক বদল হবে। এই রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবেই পড়ছে শেয়ার বাজার। বাজার সবসময় চায় স্থায়ী শক্তিশালী সরকার। তা নিয়ে আশঙ্কা থাকলেই টালমাটাল অবস্থা তৈরি হয়। ভোটের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে এই অবস্থা পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন শেয়ার বিশেষজ্ঞরা।
মোদি জমানায় যে গরিব-নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ আদৌ ভালো নেই, বরং আর্থিকভাবে তারা আরও পিছিয়ে পড়েছে—বিভিন্ন সরকারি তথ্য পরিসংখ্যানেই তা পরিষ্কার। বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি, বা প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা জমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দু’বার ভোটে জিতলেও এবার তা ব্যুমেরাং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। খোদ সরকারের মিথ্যা আশ্বাসে ক্ষুব্ধ কৃষক সমাজ বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার ডাক দিয়েছে। এবার শেয়ার বাজারের ধস ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শিল্প মহলও তেমন ভরসা রাখতে পারছে না মোদির উপর। ভোটের মধ্যেই একটি সর্বভারতীয় দৈনিকের সমীক্ষা রিপোর্টও মোদিবাহিনীর ঘুম ছুটিয়েছে। দেশের বারোটি রাজ্য সফর করে ২০১৪ সালে তারা বলেছিল, দেশে মোদি লহর চলছে। ওই একই পথে সফর করে ২০১৯-এ তারা বলেছিল, পুলওয়ামাকাণ্ড ও বালাকোটের সার্জিকাল স্ট্রাইক ঘিরে তৈরি হওয়া উগ্র জাতীয়তাবাদের ঢেউয়ে উতরে যাবেন মোদি। এবার সেই বারোটি রাজ্য সফর করে তারা বলছে, বেকারি, রোজগার, কৃষকের সমস্যা, গণতন্ত্র, সংবিধান, সংরক্ষণ, জাতীয় সম্পদ ইত্যাদি নিয়ে মুখ খুলছেন মানুষ। চোখ বন্ধ করে থাকার দিন বোধহয় শেষ। সব মিলিয়ে তাই মোদির জন্য পূর্বাভাস ইতিবাচক নয়। তবে এই অবস্থায় মোদির একমাত্র সান্ত্বনা হতে পারে, পূর্বাভাস তো সবসময়ে মেলে না!