যে কোনও ব্যবসায় অগ্রগতি আশা করা যায়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কর্মের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা হতে ... বিশদ
শেষমেশ এই সাংস্কৃতিক সংগঠনেরই ‘সদস্যপদ’ নিলেন কি অমিত শাহ! লড়াই এড়িয়ে জয়ের অঙ্ক কষেছিলেন কি তিনিও? না ভুল পড়েননি, তিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ‘সেনাপতি’ এবং মহাত্মা গান্ধী, সর্দার প্যাটেলের রাজ্য গুজরাতের ভূমিপুত্র। গান্ধীনগর আসন থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তিনিই। এবার দেখা গেল সুরাতের মতোই, গান্ধীনগরেও বিরোধী প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর ঢল! মোদি সরকারের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’-এর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ ন’জনের মনোনয়ন প্রথমে বাতিল করা হয়। মোট ৩৯ জনের মধ্যে—তারপর মনোনয়ন একে একে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আরও ১৬ জন। তাঁদের মধ্যে ১২ জন নির্দল। চারজন প্রার্থী হয়েছিলেন ছোট রাজনৈতিক দলগুলির তরফে। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করা কয়েকজনের দাবি, শাসক দল বিজেপির চাপের মুখে তাঁরা সাহস হারিয়েছেন। সুরাতে সংসদীয় গণতন্ত্রকে যূপকাষ্ঠে চড়ানো হয় ২১ এপ্রিল। সেদিনই সামনে আসে একটি ভিডিও। সেখানে বক্তার নাম জিতেন্দ্র চৌহান। গান্ধীনগরে এমনভাবে আহত গণতন্ত্রেরই একজন তিনি। যুবক জিতেন্দ্রকে কান্নাভেজা গলায় বলতে শোনা যায়, ‘গান্ধীনগর আসনে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে অমিত শাহর লোকজন। টাকার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। অপহরণ পর্যন্তও করা হয়েছিল।’ প্রাণহানির আশঙ্কাও প্রকাশ করেন জিতেন্দ্র চৌহান। তিনি আরও বলেন, ‘দেশ আজ বিপদের মুখে। সকলের কাছে আমার আর্জি, দয়া করে দেশকে রক্ষা করুন।’ ঠিক এর পরদিনই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন জিতেন্দ্র। একটি অনলাইন মিডিয়ায় তিনি অভিযোগ করেন, ভোটের লড়াই থেকে সরার জন্য তাঁকে চাপ দেন দীনেশ সিং কুশওয়া। বাপুনগরের বিজেপি বিধায়ক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বটে, কিন্তু সে-রাজ্যের অনেকেই জানে তাঁর দাপট কতখানি!
মোদি-শাহের ‘অব কি বার চারশো পার’-এর চিত্রনাট্য কি তাহলে এভাবেই সাজানো? দিকে দিকে চার, পাঁচ, ছয় লক্ষ ভোটের রেকর্ড মার্জিনে এক-একটি আসন তুলে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে কি এমনই গেরুয়া কৌশল? উঠে গিয়ে গিয়েছে সেই সংগত প্রশ্ন। গেরুয়া প্রচারযন্ত্র খুললেই শোনা যায়, গোটা গুজরাত নাকি গেরুয়া প্রেমে মাতোয়ারা! সেখানে মোদি-শাহ এবং তাঁদের ভক্তকুল ছাড়া বাকিরা নাকি ‘বহিরাগত’র মতোই, কেউ তাদের চায় না। তাহলে কী এমন বাধ্যবাধকতা উপস্থিত হল যে, জয়ের রাস্তা প্রশস্ত করতে হচ্ছে খিড়কির দিক দিয়ে, সদর দরজা হাটআলগা থাকতেও? আসলে মুখে যত আস্ফালন নেতাদের, মনের ভিতর ভয় ততোধিক। প্রথমত, টানা একদশক ক্ষমতা আঁকড়ে থেকেও মন্দির নির্মাণ আর ধর্মীয় বিভাজনের অতিরিক্ত কিছুই করে উঠতে পারেননি মোদিজি। সঙ্গে দিয়েছেন জনগণকে আরও রকমারি যন্ত্রণা। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির লাগাতার অনৈক্যই হাত শক্ত করেছে মোদির। এবার বিরোধী দলগুলি অনেকাংশেই হাতে হাত মিলিয়ে লড়তে আন্তরিক। তা দেখে কৃষক, শ্রমিক, বেকার যুব, মহিলা, প্রবীণ প্রভৃতিও প্রতিবাদের তীব্রতা বাড়িয়েছেন একযোগে। প্রথম দফা ভোটের দিনেই বিজেপির থিঙ্ক ট্যাঙ্কের কাছে ‘নির্ভুল’ খবর পৌঁছে গিয়েছে যে, জুমলা এবং নিপীড়নের বদলা নিতে প্রস্তুত এবার তামাম ভারত। এমন ভয়াবহ দুর্যোগকালে অপারেশন লোটাসের কারিগররা হাত গুটিয়ে বসে থাকেন কী করে? অতএব, খেলার অন্দরে আরও কিছু গোপন ক্রীড়ায় মত্ত তাঁরা। তবে, বিজেপির দুর্ভাগ্য যে তাঁদের কোনও গোপনই আর গোপন থাকছে না কোনোমতেই!