যে কোনও ব্যবসায় অগ্রগতি আশা করা যায়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কর্মের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা হতে ... বিশদ
নির্বাচনে ভোটের হার কম হলে তা শাসক গোষ্ঠীর সর্বনাশ ডেকে আনে, এটাই চেনা দস্তুর। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৭ শতাংশের বেশি। ২০১৪-তে ৬৬ শতাংশের বেশি। দু’বারই ৫০ শতাংশের কম ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেন নরেন্দ্র মোদি। নিজেদের ভোটের হার বাড়াতে এবার সর্বতোভাবে চেষ্টা শুরু করেছে বিজেপি। কিন্তু দু’ দফার ভোট শেষে দেখা যাচ্ছে, প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে গতবারের চেয়ে ভোট পড়েছে কম। প্রথম দফায় যে ১০২টি আসনে ভোট হয়েছে সেখানে ২০১৯-এ ভোটদানের হার ছিল গড়ে ৬৯.৪৩ শতাংশ। এবার তা কমে হয়েছে ৬২.৪ শতাংশ। একইভাবে দ্বিতীয় দফায় ৮৮টি আসনে গতবার গড় ভোটদানের হার ছিল ৬৬ শতাংশ। এবার তা কমে হয়েছে ৬২ শতাংশ। বিজেপির গড় বলে পরিচিত হিন্দি বলয়ের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ৭ শতাংশ, বিহারে ৫ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ৯ শতাংশ ভোট কম পড়েছে। অন্যভাবে বললে, ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্য যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে দ্বিতীয় দফার ভোটে মথুরাতে ৪৭ শতাংশ, মিরাটে ৫৫ শতাংশ, বাগপতে ৫২.৭ শতাংশ, আলিগড়ে ৫৪.৪ শতাংশ, গাজিয়াবাদে ৪৮.০২ শতাংশ ভোট পড়েছে। এইসব কেন্দ্রে গতবারের চেয়ে গড়ে ১০ শতাংশ কম ভোট পড়েছে। ভোট কম হওয়ার কারণ হিসেবে তীব্র গরমকেই ঢাল করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাতের মতো ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘু ও যাদবদের বেশি সংখ্যায় ভোটের লাইনে দেখা গেলেও তেমনভাবে চোখে পড়েনি রাজপুত ও ক্ষত্রিয়দের। অন্য একটি ব্যাখ্যা হল, এবার গেরুয়া শিবিরের প্রচারে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে ‘মোদি গ্যারান্টি’-র কথা। কিন্তু ২০১৪ বা ২০১৯ এর মতো এবার মোদি-ম্যাজিক বা মোদি ঝড়ের অস্তিত্ব চোখে পড়ছে না। তাই ভোটের লাইনে গেরুয়া সমর্থকদের চেনা মুখের অনুপস্থিতিও চোখে পড়েছে।
৫৪৩টি আসনের মধ্যে দু’ দফায় মাত্র ১৩৫টি আসনে ভোট হয়েছে। তাতেই যেন ললাট লিখন পড়তে শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা। তাই দ্বিতীয় দফার ভোটের শেষে মোদি-শাহ-নাড্ডাদের বক্তৃতায় সেই তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিটা আর দেখা যাচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে না, সিএএ হবেই জাতীয় কথা। যে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়ে নিজের নামজপ করেন, তাঁর মুখেও যেন ‘আমিত্ব’ উধাও! এখন আর বিজেপি সরকার নয়, শোনা যাচ্ছে এনডিএ সরকারের কথা এবং শেষ চেষ্টা হিসেবে মেরুকরণের প্রচার। এক্ষেত্রে মোদির নতুন আমদানি হল, রাহুল গান্ধী রাজা-মহারাজাদের অভিযুক্ত করছেন, কিন্তু নবাব-নিজাম-সুলতান-বাদশাহদের অত্যাচার নিয়ে নীরব থাকছেন— এ জাতীয় বক্তব্য। রাহুলকে তিনি ‘শাহজাদা’ বলে ইঙ্গিত করেছেন! বিজেপি নেতাদের প্রচারে কংগ্রেস ইস্তাহার নিয়ে মনগড়া ও অসত্য ভাষণও গুরুত্ব পাচ্ছে! কীসের ভয়ে? এ কি তবে বিনাশকালে বুদ্ধিনাশের ইঙ্গিত? উত্তর মিলবে ৪ জুন।