কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
কালো ও জাল টাকার রমরমা। সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম সাইবার ক্রাইম। এই অপরাধচক্রের লক্ষ্য একজন দিনমজুর থেকে ধনাঢ্য ব্যক্তি, সকলেই। রাজনীতির দুর্বৃত্তয়ান ও অর্থায়নই আজকের ভারতের গণতন্ত্রের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। একাধিক প্রাদেশিক সরকারের আয়ু এই নয়া রাজনৈতিক সংস্কৃতিই ঠিক করে দেয়। এরকমই পরিস্থিতিতে ১৯ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) দু’হাজারি গোলাপি নোট বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার এক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। আরবিআই কিংবা অর্থমন্ত্রক কেউই এই উদ্যোগটিকে ‘নোট বাতিল’ আখ্যা দিতে চায়নি। তবে, ২৩ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২০০০ টাকার সমস্ত নোট বাজার থেকে গুটিয়ে নেওয়ার অনড় সিদ্ধান্তই জানিয়েছে কেন্দ্র। আমরা জানি, এই নোটগুলি ওই সময়সীমার মধ্যে প্রতিটি ব্যাঙ্কে জমা করা কিংবা ব্যাঙ্ক থেকে ছোট অঙ্কের নোটে বদলে নেওয়া যাবে। সরকার জানিয়েছে, এটি তাদের ‘ক্লিন নোট’ পলিসির অঙ্গ। এর পাশাপাশি নানাসময়ে আরও একাধিক যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা করেছে আরবিআই, তবে সেগুলি নিতান্তই ‘দুর্বল’ বলেই মনে করেন ভুক্তভোগী নাগরিকরা। দু’হাজারি নোট ব্যাঙ্কে বদল বা জমা করা নিয়ে নাগরিকের দুর্ভোগের অভিযোগও আমল দিতে নারাজ আরবিআই কর্তৃপক্ষ। তাঁরা মানতেই চান না যে, এই ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলির কাছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের যে নির্দেশই পৌঁছক না কেন, কয়েকটি ব্যাঙ্ক কিন্তু তাদের মর্জিমতো নিয়মকানুন চালু করেছে। তার ফলে টাকা জমা বা বদল অনেক ক্ষেত্রেই বেশ ঝক্কির ব্যাপার হয়ে উঠেছে। বুধবার খোদ রাজধানী নয়াদিল্লির একাধিক ব্যাঙ্কে গিয়ে নাগরিককে অন্যধরনের হয়রানিরও শিকার হতে হয়েছে। যত সংখ্যক দু’হাজারি নোট জমা পড়ছে সেই অনুপাতে ৫০০ বা তার নীচের অঙ্কের নোট কাউন্টারে ছিল না।
ক্লিন নোট পলিসি অনুযায়ী সরকার এবং আরবিআইয়ের ঘোষণা ও উদ্দেশ্য যাই হোক, তাদের আরও একটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখতে হবে, যা মোদি জমানায় বিশেষভাবে উপেক্ষিত। শুধু ২০০০ টাকার নোটের আয়ুক্ষয় হয়নি, আয়ু ফুরিয়ে এসেছে অপেক্ষাকৃত ছোট নোটগুলিরও। বিশেষ করে ৫০, ২০, ১০ এবং ৫ টাকার নোটের চেহারা ভেজা খবরের কাগজের মতোই হয়ে গিয়েছে। হাতে নিয়ে ওয়ালেটে ভরতেই ভয় হয়—এই বুঝি ছিঁড়ে ফর্দাফাই হয়ে যায়! ছেঁড়া-কাটা-ফাটা নোট নিয়ে বাজারে, বাসে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ বেড়েই চলেছে। তাঁর কষ্টার্জিত অর্থকে কেন্দ্র করে মানুষকে কেন নিত্য এই দুর্ভোগে পড়তে হবে? সরকার এই প্রমাণ অন্তত রাখুক, ‘ক্লিন নোট’ পলিসিটা ‘ক্লিন ইন্ডিয়া’ ঘোষণার মতো আর-একটা বাগাড়ম্বর নয়।