কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
অর্ডিন্যান্স এক বিশেষ ক্ষমতা। অনেকটা ব্রহ্মাস্ত্রের মতো। নিতান্ত প্রয়োজন না-হলে তা ব্যবহার করা উচিত নয়। নিয়ম হল, সংসদের অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন আপৎকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে অর্ডিন্যান্স জারি করেন রাষ্ট্রপতি। রাজ্যের ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা রাজ্যপালের। কিন্তু সংসদের পরবর্তী অধিবেশন বসার ছ’সপ্তাহের মধ্যে অর্ডিন্যান্সকে সংসদে পেশ করা বাধ্যতামূলক। না-হলে তার স্বেচ্ছামৃত্যু ঘটে। এক্ষেত্রে আইন তৈরির জন্য সংসদে বিল আনে সরকার। কিন্তু এ হল ধর্মের কথা। মোদি-শাহরা ধর্মের ভিত্তিতে দেশে বিভাজন চাইলেও নিজেরা যে ধর্ম কথায় বিশ্বাস করেন না, তা অর্ডিন্যান্সের বারবার অপব্যবহারেই পরিষ্কার। এ বিষয়ে অবশ্য পথিকৃৎ কংগ্রেস। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয়েছিল প্রায় মাঝরাতে, অর্ডিন্যান্স জারি করে। তথ্য বলছে, ১৯৬০ থেকে ’৮০ সালের মধ্যে দেশে অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছে কমপক্ষে ২০০ বার। আবার, শুধু ১৯৯৩ সালেই অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছে ৩৪ বার। আসল প্রশ্ন হল, নির্বাচিত দিল্লি সরকারের অর্জিত ক্ষমতা কতটা বিরল বা ব্যতিক্রমী ঘটনা, যার জন্য কেন্দ্রকে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে টপকে অর্ডিন্যান্স জারি করতে হচ্ছে? উত্তরটা দেশের আম জনতার কাছে পরিষ্কার হলেও কর্তৃত্ববাদী মোদিবাহিনীর কাছে তা অনেকটা যেন যুধিষ্ঠিরের কাজ!
ঘটনা পরম্পরা বলছে, মূলত কর্ণাটক নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর থেকে বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি একছাতার তলায় আসার চেষ্টা করছে। এমনকী, বিরোধীদের মধ্যে বিবদমান দলগুলিও কর্ণাটকের ফলাফল এবং দিল্লি কাণ্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এক সুর, একভাষায় সোচ্চার হয়েছে। অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে সব বিরোধী দলের সঙ্গে নিজে কথা বলা শুরু করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সন্দেহ নেই, সংবিধানকে মান্যতা দিয়েই কেন্দ্রের দমন-পীড়ন নীতির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিরোধীরা সোচ্চার হয়েছে। যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে ফেলার এবং মহামান্য আদালতের নির্দেশ অমান্য করার চেষ্টা চলছে, তাতে নানা আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। কারণ, সংসদের আগামী বাদল অধিবেশনে অর্ডিন্যান্সটি পেশ করতে হবে। দিল্লির ক্ষমতা স্থায়ীভাবে পেতে আইন করতে হলে বিল আনতেই হবে সরকারকে। কিন্তু একাই ৩০৩টি আসনের জোরে লোকসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভায় সরকার ও বিরোধী পক্ষের শক্তি সমানে সমানে। তার মানে, রাজ্যসভায় বিজেপি বিরোধী সাংসদরা এককাট্টা হয়ে ভোট দিলে কেজরিওয়াল সরকারের এক্তিয়ার খর্ব করে ক্ষমতা দখলের লালসা অধরাই থেকে যাবে মোদি সরকারের। সেটা হলে ’২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে এই বার্তাই দেওয়া যাবে যে, শাসক দলকে সংসদের ভিতরেও হারানো যায়। বিরোধীদের তরফে সেই চেষ্টাই চলছে। অতএব, সাধু সাবধান।