মেয়াদি সঞ্চয় থেকে অর্থাগম যোগ আছে। সন্তানের আবদার মেটাতে অর্থ ব্যয়। ধর্মকর্মে মন আকৃষ্ট হবে। ... বিশদ
বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা হিসেবে যে বাংলা অচ্ছুৎ নয়, বরং এই রাজ্য এখন শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত, টাটাদের কারখানা হস্তান্তরের ঘটনা সেই সত্যকেই তুলে ধরেছে। খবরে প্রকাশ, টাটা-হিতাচির জামশেদপুরের কারখানাটির জন্ম ১৯৬১ সালে। ছ’দশক সেটি চালানোর পর সংস্থার কর্তারা কারখানাটি অন্যত্র সরানোর সিদ্ধান্ত নেন। এবং, গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গকেই তাঁরা বেছে নেন। রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে সেই কারখানা চালু হয়েছে খড়্গপুরের শিল্পতালুকে। উৎপাদন বাড়াতে সেখানে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে দু’হাজার লোকের। নতুন কারখানার জন্য শিল্পতালুকের ১০০ একর জমি কিনেছে টাটারা। মূলত খনিজ সামগ্রী খননের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি হবে এই কারখানায়। এখানে তৈরি সামগ্রী ভবিষ্যতে বীরভূমের দেউচা-পচামির কয়লা উত্তোলনে বড় ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। জামশেদপুরের দেখানো পথে হাঁটতে চলেছে টাটা স্টিলও। ওড়িশার কেওনঝড়ের জোডায় সংস্থার স্পঞ্জ আয়রন কারখানাটিরও পরবর্তী গন্তব্য হতে চলেছে বাংলা। সংস্থার হেড অফিস ইতিমধ্যেই কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়েছে। সরকারের আশা, ভবিষ্যতে রাজ্যে টাটা গোষ্ঠীর বিনিয়োগ আরও বাড়বে।
শুধু টাটা গোষ্ঠী নয়, সামগ্রিকভাবে রাজ্যের শিল্প নিয়েই মাঝেমধ্যে গেল গেল রব তোলে বিরোধীরা। মমতা সরকারের ঘোষিত নীতি হল, কোনও কারণেই জোর করে জমি নেওয়া হবে না। যেকোনও প্রকল্পের জন্যই জমি কিনে নিতে হবে। শিল্পের জন্য জমির প্রয়োজন মেটাতে খুব সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, বেসরকারি যে জমিতে চাষ হচ্ছে না, সেই জমির মালিক রাজি থাকলে শিল্পের স্বার্থে তা কেনা যেতে পারে। সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পমহল। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে সরকার জানিয়েছিল, এবার শিল্প ও কর্মসংস্থানই হবে তাদের পাখির চোখ। সেই লক্ষ্যেই এক হাজার পাঁচশো কোটি টাকা খরচ করে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার তৈরি হবে। এখানে নিয়োগ হবে ৩০ হাজার। রাজ্যে তিনটি শিল্প-করিডর তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। করিডর লাগোয়া আট হাজার একর সরকারি জমিকে শিল্পের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি ইতিবাচক উদ্যোগ। বিনিয়োগ টানতে প্রতিবারের মতো এবারেও বছর শেষে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববঙ্গ শিল্পসম্মেলন। বিনিয়োগের প্রচারে পাঁচ রাজ্যে ‘রোড-শো’ করা হবে। এইসব উদ্যোগকেই আসলে রাজ্যে বিনিয়োগ টেনে আনার চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে সরকার।