পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ছোট ও মাঝারি বেসরকারি সংস্থায় সারাজীবন চাকরি করে যাঁরা অবসর নেন, তাঁদের অবস্থা আরও করুণ। এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশনে (ইপিএফও) সমগ্র কর্মজীবনে তাঁদের নামে নিয়মিত কিছু অর্থ জমা হয়। তার ভিত্তিতেই বেসরকারি সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মাসে মাসে কিছু টাকা দেওয়া হয়। তার পরিমাণ ১০০০ টাকা কিংবা আর একটু বেশি। পেনশনের নামে প্রহসনের এর চেয়ে নিকৃষ্ট উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না। সংশ্লিষ্ট বয়স্ক ব্যক্তিরা এই অনাচার বন্ধের দাবিতে দীর্ঘদিন যাবৎ সরব। বিষয়টি তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, সংসদের শ্রম বিষয়ক স্থায়ী কমিটি এবং বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদেরও গোচরে এনেছেন। তাঁদের দাবি, প্রতি মাসে ন্যূনতম সাড়ে সাত হাজার টাকা পেনশন দিতে হবে। ওই সঙ্গে দিতে হবে ডিএ এবং স্বামী ও স্ত্রীর উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবার নিশ্চয়তা। ২০১৮ সালে এই লাগাতার আন্দোলনের সূত্রপাত মহারাষ্ট্রের বুলদানা থেকে। বিজেপি সাংসদ হেমা মালিনীর নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের এক প্রতিনিধি দল অতীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সংসদীয় কমিটি আন্দোলনকারীদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছে। একাধিকবার আশ্বস্ত করেছে শ্রমমন্ত্রক। কিন্তু অর্থমন্ত্রক স্পিকটি নট!
ফলে প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা তাঁদের আন্দোলন পথে নামিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন। বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লিসহ দেশের ২০০টি শহরে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। তবে এতেও সরকারের হৃদয় এতটুকু কাঁদবে কি না, ঘটনা পরম্পরাতে রয়েছে সেই সংশয়। এরপর যদি একজন নাগরিক ‘আপনা হাত জগন্নাথ’ প্রবচনের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শনটি ভারতের আইনসভাতেই খুঁজে পান, তাকে কি ভুল বলা যাবে? সংবিধান, জনগণ ও গণতন্ত্রকে সামনে রেখে যে অদ্ভুত ব্যবস্থাটি এদেশে কায়েম হয়েছে, সেটা নিঃসন্দেহে আইনসভার সুপ্রিমেসি! তার ফলে কৌশলে ব্রাত্য গণ্য হয়েছে জনগণ। জনসেবার দোহাই দিয়ে অনেকাংশে নিজেদেরই রসেবসে রাখার বন্দোবস্ত করেছেন আইনসভার সদস্যরা। বিপরীতে, জনগণের কথা তাঁরা কতটা ভাবছেন, সেই প্রশ্নটি তাঁদের বিবেকের কাছেই রাখা যেতে পারে। আঙুল এখন আর শুধু শাসকের দিকে রাখার অবকাশ নেই। ভিয়েতনাম, প্যালেস্তাইন, ইরাক প্রভৃতি দূর দূর দেশের জনগণের দুঃখে যাঁদের বুক ভাসে সর্বক্ষণ, মুখে অগ্নিবর্ষণ করেন যাঁরা অহরহ, ভারতের নিম্ন আয়ের কর্মীদের পেনশন-বঞ্চনা নিয়ে তাঁরা ব্যাকুল কতটুকু? রামধনু জোটের এর চেয়ে উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত ভারতবাসী আর দেখবে না!