রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
অথচ ইউপিএ সরকারের খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পেরই নাম বদলে মোদি সরকার করেছিল ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’। এবারও ওই নামটি রেখেই বিনামূল্যে চাল-গম দেওয়ার প্রকল্পের ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী বাহবা পেতে চাইছেন। অথচ গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদিই গরিবের জন্য সস্তায় এই রেশন প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন। এখন ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে আবার সেই প্রায় একই ধরনের প্রকল্পকে নিজের নামে চালাতে চাইছে মোদি সরকার! কাহিনির এখানেই শেষ নয়। আছে পরতে পরতে চমক। কোনও ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার জন্য যা করেন, মোদি সরকার এবার সেই ভূমিকায়!
দেখা যাচ্ছে, গরিব কল্যাণ প্রকল্প বন্ধ করায় বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য সেক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত হয়েছে। এই জানুয়ারিতেই কেন্দ্রীয় খাদ্যভাণ্ডারে মজুত খাদ্যশস্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৯ লক্ষ টন গম এবং ১ কোটি ৪ লক্ষ টন চাল। যে দেশে এখনও অর্ধেকেরও বেশি মানুষের দু’বেলা অন্ন জোটে না, তাদের কথা মনে রেখে রেশনের মাধ্যমেই স্বল্পমূল্যে এই অতিরিক্ত খাদ্যশস্য বণ্টনের ব্যবস্থা করা যেত। যে কোনও সংবেদনশীল সরকারের সেটাই করা উচিত। কিন্তু না, মোদি সরকার সে পথে হাঁটতে নারাজ। তাই এই অতিরিক্ত খাদ্যশস্যই খোলা বাজারে বেশি দামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আপাতত ঠিক আছে, আগামী মার্চের মধ্যে ৩০ লক্ষ টন গম বিক্রির। দেখা যাচ্ছে, যে সংগ্রহ মূল্যে এই চাল-গম কিনেছিল সরকার, তার থেকে বেশি দামে তা বিক্রি করবে তারা। উদ্দেশ্য রাজকোষ ভরানো। এতে সরকারের ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট। কত টাকা বেশিতে এই মজুত খাদ্যশস্য বিক্রি হবে? জানা গিয়েছে, গত খরিফ মরশুমে চাষিদের থেকে গম কেনা হয়েছিল কুইন্টাল প্রতি ২০১৫ টাকায়। তা বিক্রি করা হবে কুইন্টাল প্রতি ন্যূনতম ২৩৫০ টাকায়। একইভাবে চালও বেশি দামে বিক্রির ব্যবস্থা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এবং রাজ্য এই চাল-গম কিনতে পারবে। সাধারণ চাল কিনতে এক কেজির জন্য রাজ্যকে গুনতে হবে ৩৪ টাকা। অথচ খোলা বাজারে এর থেকে অনেক কম দামেই চাল কিনেছিল বাংলার সরকার। বলাই বাহুল্য, খাদ্যভাণ্ডারে মজুত চাল-গম সরকারি দামে বিক্রির পর তার সঙ্গে যুক্ত হবে ব্যবসায়ীদের লাভের অংশ। তাই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের মুনাফা লাভের সুযোগ বাড়লেও গরিবের কোনও উপকারই হবে না। রেশনের মাধ্যমে যে চাল-গম সুলভ মূল্যে বিক্রি করা যেত, সেটাই বাজার থেকে তাদের কিনতে হবে চড়া মূল্যে। ধনীদের স্বার্থরক্ষাতেই মোদি সরকার যে সদা সচেষ্ট সে অভিযোগ নতুন নয়। এবার দেখা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষার পাশাপাশি সরকার নিজেই ভর্তুকির খাদ্যশস্য বাজারে বেচে মুনাফা লাভের ব্যবসা শুরু করে দিল!