রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে গেরুয়া শিবির। কোনও কোনও বিজেপি নেতার দাবি, দেরিতে হলেও ঔপনিবেশিক এবং দাসত্বের মানসিকতা ছেড়ে বেরচ্ছে ভারত। এটাই হল নিউ ইন্ডিয়া বা নবভারত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এক টুইটে বলেন, ‘এটি শুধুমাত্র ঔপনিবেশিক ভারতের একটি চিহ্ন মুছে ফেলার ঘটনা নয়, অমৃতকালের কাছে আমাদের প্রত্যাশারও এক প্রতিফলন।’ কংগ্রেস সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না-জানালেও অন্য একাধিক পার্টি মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে। তার প্রেক্ষিতে এক বিজেপি নেতার কটাক্ষ, ‘মোদি সরকার যখন ভারতকে তার গোলামি বা কলোনিয়াল অতীত থেকে বের করে আনতে সচেষ্ট, তখন কিছু বিরোধী নেতা বিরোধিতা করতে গিয়ে তাঁদের মুঘলাই বা ভোটব্যাঙ্ক মানসিকতা প্রকট করে তুলছেন।’
এটাই অবশ্য প্রথম নয়, মোদি জমানায় রাজধানীর বুকে এবং দেশের নানা প্রান্তের একগুচ্ছ সৌধ ও স্থাননাম বদলে গিয়েছে। সরকারের কর্মধারা থেকে পরিষ্কার যে, তারা এখানেই ক্ষান্ত দেবে না। এটা তাদের এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অঙ্গ। এই অনুমানও অসঙ্গত নয় যে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ এই ‘পবিত্র কর্মের’ একটি দীর্ঘ তালিকা সরকারের হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। সেটি ধরেই এগচ্ছে সরকার। এই বদলের খেলায় আরও অনেক দূর যেতে মরিয়া তারা। তাই অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পর, এবার দেশের ‘জাতীয় ধর্ম’ নিয়েও স্বপ্নের কথা ঘোষিত হয়েছে যোগী আদিত্যনাথের ‘শ্রীমুখ’ থেকে। সব মিলিয়ে বাড়ছে বিতর্কের পরিসর, যার নীচে চাপা পড়ে যাচ্ছে মানুষের আসল লড়াইয়ের খবর। অন্নচিন্তাই এখনও চমৎকার। সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারত অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের মতো বুনিয়াদি চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে। ওইসঙ্গে সর্বক্ষণ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে এদেশের গণতন্ত্র, সাধারণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি। আর্য অনার্য দ্রাবিড় চীন শক হুন মোগল পাঠান প্রভৃতি যে দেশের মাটিতে ও ভালোবাসায় লীন হয়ে আছে সেই দেশের নির্দিষ্ট কোনও ধর্মীয় চাহিদা থাকতে পারে না। তবু গেরুয়া শিবির উগ্র হিন্দুত্বের দৃষ্টিতে ভারতের ইতিহাস পুনর্লিখনে মরিয়া। এতে প্রকারান্তরে নস্যাৎ হচ্ছে মানুষের বাঁচা-বাড়ার প্রয়োজন। নাগরিককল্যাণে ব্যর্থতা ঢাকতেই কি সরকারের এই অবাঞ্ছিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া? চব্বিশের ভোটের দিন ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। আশঙ্কা হয়, উন্নয়নের উল্টো দিকেই মোদি সরকারের এই যাত্রাপথ আগামী দিনে আরও চওড়া হবে।