কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী নিজে বহুবার বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্যে একই দলের অর্থাৎ ‘ডবল ইঞ্জিনের’ সরকার থাকলে কাজকর্ম অনেক ভালো হয়। সুবিধাও হয়। রাজ্যে রাজ্যে এমন ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি কেন্দ্র থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে বলে অনেক সময়ই বিজেপি প্রকাশ্যেই প্রচার করেছে। এবং ঘটনাও হল, দেশের যে ক’টি রাজ্যে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার চলছে তার প্রতিটিতেই ঢেলে অর্থ সাহায্য করছে মোদি সরকার। বিরোধীদের এই অভিযোগ অমূলক নয়। অন্যদিকে, আঞ্চলিক দল বা বিরোধী দল পরিচালিত রাজ্যগুলির প্রাপ্য শত শত কোটি টাকা মেটাচ্ছে না কেন্দ্র। কিন্তু দেশের জনগণের করের টাকা কীভাবে জলে চলে যাচ্ছে বেঙ্গালুরুর ঘটনা তারই জ্বলন্ত নিদর্শন। কর্ণাটকে ডবল ইঞ্জিনের সরকার চলছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, এটাই কি ডবল ইঞ্জিনের সরকারের ‘ভালো’ কাজের নজির? বলা বাহুল্য, জনগণের টাকা এইভাবে খরচ করা বা নষ্ট করার অধিকার নেই কোনও সরকারের। এরপরও কি প্রধানমন্ত্রী মোদি বা গেরুয়াবাহিনী ডবল ইঞ্জিনের সরকারের গুণগান করবেন? সে মুখ কি তাঁদের আছে? অবিজেপি শাসিত রাজ্যে এমনটা ঘটলে তাঁরা কী করতেন? এবার হবে কি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কাজের মূল্যায়ন?
যদিও ঘটনা এই একটা নয়। ডবল ইঞ্জিনের রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী গেলে কীভাবে ‘মোদি ভজনা’ করতে টাকার মোচ্ছব হয়, তার নিদর্শন অনেক। এমনই একটি ঘটনার সাক্ষী মধ্যপ্রদেশের মানুষ। ঘটনা গত বছরের নভেম্বরের। প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর দিনটি ‘জনজাতি গৌরব দিবস’ হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মধ্যপ্রদেশে সেই সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মাত্র চার ঘণ্টার জন্য গিয়েছিলেন মোদি। মূল অনুষ্ঠানে লোক আনতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যানবাহনের ব্যবস্থা করেছিল সরকার। জনজাতি মানুষের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করতে হয়েছিল। এবং এই দিবস উদযাপনে প্রধানমন্ত্রীর চার ঘণ্টার সফরের জন্য মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার আক্ষরিক অর্থেই মুঠো মুঠো টাকা খরচ করে। ২৩ কোটি টাকা খরচ হয়ে যায়। অথচ এই মধ্যপ্রদেশেই করোনাকালে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অধিকাংশ শ্রমজীবী মানুষের আয় তলানিতে ঠেকেছে। রেশনের চাল-গমই তাঁদের একমাত্র সম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে কী কেন্দ্র, কী বিজেপি শাসিত কোনও কোনও রাজ্য দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের স্বার্থরক্ষার কথা ভাবেই না। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চমক সৃষ্টি ও চাকচিকনে বিশ্বাসী। সেই নীতি মেনেই যেন চলছে কোনও কোনও রাজ্যে ডবল ইঞ্জিনের সরকার। তাই রাজ্যের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কথা না ভেবে প্রধানমন্ত্রীর ঘণ্টা কয়েকের সফরের জন্য হচ্ছে দেদার অর্থব্যয়। রাস্তা সংস্কারের জন্য পড়ছে সাময়িক প্রলেপ যা অচিরেই ভেঙে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। জলে চলে যাচ্ছে ব্যয় করা অর্থ। জনগণের করের টাকা নষ্ট করার এমন সংস্কৃতিই দেখা যাচ্ছে মোদি জমানায় ডবল ইঞ্জিনের সরকারের রাজত্বে। এই তাহলে ডবল ইঞ্জিনের মহিমা!