বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বহু পুরনো ন্যাশনাল হেরান্ড পত্রিকা কাণ্ডে সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে জেরা করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। এতেও তাদের প্রশ্ন শেষ হয়নি। শুক্রবার রাহুলকে ফের মুখোমুখি হতে হবে ইডির। কংগ্রেস দলের এই আইকনিক নেতাকে এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করার প্রতিবাদে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। সোমবার এমনই এক বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অপরাধে পুলিসের মারে পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরেছে প্রবীণ এক নেতার। তার রেশ না কাটতেই বুধবার আকবর রোডে এআইসিসির সদর দপ্তরে ঢুকে বর্গী হানার মতো হামলা চালিয়েছে অমিত শাহের পুলিস! একথা ঠিক, আইন আইনের পক্ষে চলবে। কেউ আইন ভাঙলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও যেতে পারে। কিন্তু সবকিছুরই একটা নিয়মনীতি পদ্ধতি আছে। পুলিস নামধারী কিছু মাসলম্যানের দাপাদাপি সব সীমা লঙ্ঘন করেছে। খবরে প্রকাশ, কংগ্রেস অফিসে তখন অধীর চৌধুরী-সহ কয়েকজন নেতা ছিলেন। পুলিস তাঁদেরও রেয়াত করেনি। নিয়মের তোয়াক্কা না করে ওয়ারেন্ট ছাড়াই দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে বলে পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ। নেতাদের অনেককে মারধর, হেনস্তা করা হয়েছে। টেনে হিঁচড়ে পার্টি অফিস থেকে কাউকে কাউকে বের করে আনার দৃশ্যও দেখা গিয়েছে। এঁরা কেউ জঙ্গি বা সমাজবিরোধী নন। তাঁদের সঙ্গে এমন আচরণ শুধু অশোভনই নয়, অন্যায়ও। লোহার ব্যারিকেড আর আধা সেনা-পুলিস দিয়ে মানবপ্রাচীর তৈরি করে এই ‘পরিকল্পিত’ হামলা হয়েছে কি না তা নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার। সাংবাদিকরাও পুলিসের হাত থেকে রেহাই পাননি।
আসলে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিরোধী স্বরকে দমিয়ে রাখতে সব পথ খোলা রেখেছে বিজেপি সরকার। ইডি, সিবিআই, আয়কর হানা, পুলিস—সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিরোধীদের জব্দ করতে সব অস্ত্রকে নগ্নভাবে ব্যবহার করছেন মোদি-শাহরা। গোটা দেশেই ছবিটা এক। ভোটের আগে বা বড় কোনও ইস্যু সামনে এলে সিবিআই-ইডি-পুলিসের তৎপরতা বেড়ে যায়। তাদের লেলিয়ে দিয়ে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে চায় মোদি সরকার। জেরার নাম হেনস্তা করার ঘটনার উদাহরণ বহু আছে। রাজ্যে রাজ্যে এই একই জুজু দেখিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি। এর বিরুদ্ধে বিরোধীরা জোরালো প্রতিবাদও করছে। বুধবারই দিল্লিতে বিরোধী ১৭টি দলের এক বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সব নেতাই এর বিরুদ্ধে সবর হন। কিন্তু সরকার বিরোধী কোনও প্রতিবাদ রাস্তায় নামলেই তা ভাঙতে নেমে আসছে অমিত শাহের পুলিস। সীমা লঙ্ঘন করতেও অনেক সময় তাদের বাধছে না, যা প্রকারান্তরে গুন্ডামির রূপ নিচ্ছে! বুধবার দিল্লির কংগ্রেস দপ্তরে মোদি-শাহের পুলিসের এমনই এক অত্যাচারের দৃশ্য দেখল দেশবাসী। সঙ্গত কারণেই অভিযুক্ত পুলিস অফিসারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠল। কিন্তু অতীতের মতোই এক্ষেত্রেও কৌশলগত কারণে মোদি-শাহরা নীরব নির্বিকার!