বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
অর্থনীতির পণ্ডিতরা মনে করেন, শ্রমশক্তির এইরূপ অতি নিম্ন অংশগ্রহণ নিয়ে আর যাই হোক, কোনও দেশই ইকনমিক পাওয়ার বা অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে পারে না। তাহলে নরেন্দ্র মোদির একের পর এক ঘোষণা কি চুপসে যাওয়া ফানুস মাত্র! ২০১৯-এ তিনি দাবি করেছিলেন, ২০২৪ সালের ভিতরে ভারত ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থনীতি এবং গ্লোবাল পাওয়ার হাউস বা বিশ্বগুরু হয়ে উঠবে। ২০২৪-এর ভোট যত কাছে আসছে সরকার বুঝতে পারছে, এবার অনিবার্য হয়ে উঠছে কিছু জবাব দেওয়ার প্রয়োজন। অতএব, গোলপোস্টও একটু একটু করে পিছচ্ছে শাসক। তবে মুখ খুলছেন না মোদি নিজে। তাঁর জায়গায় নামানো হয়েছে তাঁরই মন্ত্রিসভার এক জুনিয়র সদস্যকে। ১৩ জুন পুনেতে এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর সুর পাল্টে বলেন, ভারত ইতিমধ্যেই ৩ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতি হয়ে গিয়েছে, ৫ ট্রিলিয়ন অর্জন করবে ২০২৬ সালের ভিতরে। কথাটি বলার সময় মোদির প্রতিনিধি চীনের ছবিটা মনে রেখেছেন বলে মনে হয় না। তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীনের অর্থনীতির বহরটি মনে করিয়ে দেওয়া জরুরি—২০২১ সালে ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে চীন। এই তুলনা জবরদস্তি নয়, এটাই স্বাভাবিক। মাওয়ের চীন স্বাধীনতা অর্জন করেছে ভারতেরও পরে। অথচ, তাদের শ্রীবৃদ্ধির পাশে ৭৫ বছরের স্বাধীন ভারতকে কোনওভাবেই রাখা যাচ্ছে না। তাহলে ইকনমিক পাওয়ার কথাটি আওড়ানোর বিলাসিতা কী কারণে?
ভোট যে সত্যিই ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে, ভিতরে ভিতরে ঘাবড়ে দিচ্ছে শাসককে, তা এবার পরিষ্কার হল প্রধানমন্ত্রীর অন্য-এক কথায়। মঙ্গলবার তিনি ঘোষণা করেছেন, আগামী দেড় বছরে তাঁর সরকার ১০ লক্ষ বেকারকে চাকরি দেবে! সংশ্লিষ্ট মহলের হিসেব, মোট শূন্যপদের থেকেও ১ লক্ষ বেশি চাকরির খোয়াব দেখিয়েছেন মোদি। তিনি নিশ্চয় মনে রাখেননি ২০১৩ সালে দেওয়া বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি। এও মনে করতে চান না, তাঁর সরকার দুই টার্মে কেন্দ্রীয় দপ্তরগুলিতে কর্মী নিয়োগে মোটেই গা করেনি। তার ফলেই শূন্যপদ জমতে জমতে ৯ লক্ষ ছুঁয়েছে। এবার তার সঙ্গে আরও ১ লক্ষ যোগ করে, মোট ১০ লক্ষ কর্মী নিয়োগের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে ২০২৩-এর ডিসেম্বর। খুব সোজা হিসেব, ২০২৪-এর গোড়ার দিকে ভোটের প্রচারে নামার আগে জুতসই হাতিয়ার তৈরিতে মন দিয়েছেন মোদি। বুঝে গিয়েছেন, রামমন্দির-সহ চূড়ান্ত মেরুকরণ নামক অস্ত্রের ধার ক্রমে ভোঁতা হয়ে আসছে। ভোটের বাজারে সুবিশাল বেকার বাহিনীর থেকে পরীক্ষিত বোড়ে আর কিছু হতে পারে না।