বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শেষমেশ অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, টিকার জন্য এক টাকাও পিএম কেয়ার্স ফান্ড দেয়নি। তাহলে ২০২০ সালের ১৩ মে পিএমও এক বিজ্ঞপ্তিতে জানাল যে, টিকা উৎপাদনকারীদের সহায়তা দানের জন্য এই ফান্ড থেকে ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে; এই টাকা ব্যবহৃত হবে মুখ্য বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতার নজরদারিতে? এই মর্মেই ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমোডর লোকেশ বাত্রা জানতে চেয়েছিলেন, পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে কোন খাতে কত টাকা খরচ করা হয়েছে? প্রতি অর্থবর্ষে টিকা উৎপাদনের জন্য এই ফান্ড থেকে কত টাকা করে দেওয়া হয়েছে, তারও বিস্তারিত তথ্য চান তিনি। তাতে কেন্দ্রের টিকা উৎপাদন বিভাগ জানিয়েছে, তারা এই বাবদ কোনও অর্থ পায়নি। অতঃপর আবেদনপত্রটি যায় পিএমও এবং আইসিএমআর-এ। আইসিএমআর-ও একই জবাব দেয়। পিএমও জানায়, পিএম কেয়ার্স ফান্ড কোনও সরকারি তহবিল নয়! ফলে, সেটি আরটিআই আইনের এক্তিয়ার বহির্ভূত। অতএব, এর বেশি তথ্য তারা দেবে না।
এর পরেই বিতর্কের শুরু। পিএম কেয়ার্স ফান্ডের টাকা খরচ করে ভেন্টিলেটর এবং অক্সিজেন প্লান্ট কেনা হল। কিন্তু, ভ্যাকসিন খাতে বরাদ্দ অর্থ খরচ করা হল না কেন? সেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। টুইট মারফত কংগ্রেস মুখপাত্র শামা মহম্মদের প্রশ্ন, পিএম কেয়ার্স ফান্ড তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী নাগরিকদের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলেছেন। এ থেকে ১০০ কোটি টাকা টিকা উৎপাদনে খরচের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এই টাকা দেওয়াই হয়নি। তাহলে কি পিএম কেয়ার্স ফান্ডের নামে দেশের মানুষের সঙ্গে দুর্নীতি করা হয়েছে? অথচ, শোনা যাচ্ছে, প্রথম পাঁচ-ছ’দিনেই পিএম কেয়ার্স ফান্ডে জমা পড়েছিল প্রায় ৩ হাজার কোটির বেশি টাকা! তারপরের কোনও হিসেব অবশ্য পাওয়া যায়নি। উপযুক্ত তদন্তের দাবিতে আগেই সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌগত রায়। তৃণমূলের চিকিৎসক-সাংসদ শান্তনু সেনের অভিযোগ, আগামী দিনে পিএম কেয়ার্স ফান্ড একটি বড় আর্থিক দুর্নীতির খতিয়ান হিসেবে প্রমাণিত হবে বলে সন্দেহ করছি। প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন অন্য বিরোধীরাও। কংগ্রেসের দাবি, বিশ্বের সবথেকে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি এটি। এই সমালোচনার অন্যায্যতার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীকেই দিতে হবে। সত্যিই তো, এই ফান্ডের সিএজি অডিট হবে না কেন? এরপর মানুষ ধরেই নেবে, গণতন্ত্রের নামে ক্ষমতা দখলের পর থেকে জবাবদিহি এড়াবারই নিকৃষ্ট রেকর্ড গড়ে চলেছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রীকেই এর পরিষ্কার জবাব দিতে হবে, সংসদের ভিতরে ও বাইরে। এর তদন্তও হওয়া উচিত সুপ্রিম কোর্টের কোনও কর্মরত বিচারপতির নজরদারিতে। সরকার দ্রুত এই দাবি মেনেই পদক্ষেপ করুক। না-হলে আরও একবার মুখ পুড়বে তাদের।