পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কৃষি ক্ষেত্রের বদান্যতায় গ্রামীণ বেকারত্ব কিছুটা কম বটে, কিন্তু শহুরে বেকারত্ব লকডাউন পরবর্তী বৎসরাধিককালেও উদ্বেগজনক রয়ে গিয়েছে। সংখ্যার বিচারে দেশে নারী-পুরুষ প্রায় সমান সমান। কাজের অধিকারেও আইনত কোনও বৈষম্য থাকার কথা নয়। তবু, বর্তমান পরিস্থিতিতে মহিলাদের বেকারত্ব পুরুষের তুলনায় অনেক বেড়েছে। স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টেও এজন্য হতাশা ধরা পড়েছে। সংসদের এই গুরুত্বপূর্ণ কমিটি জানিয়েছে, সংগঠিত, অসংগঠিত দুই ক্ষেত্রেই মহিলাদের বেকারত্ব তীব্রতর হয়েছে। সমাধান হিসেবে কমিটি যেসব সুপারিশ করেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: সরকারি পণ্য সংগ্রহে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত সংস্থাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। মহিলাদের শিল্প-ব্যবসা বাণিজ্যে পুঁজির জোগান বৃদ্ধিতে যত্নবান হতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে হবে চাইল্ডকেয়ার এবং ওই ধরনের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে। সিএমআইই-র হিসেবে, গত মে মাসেও সারা দেশের শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ছিল ১৪.৭২ শতাংশ। জুন থেকে কমতে কমতে সেপ্টেম্বরে সর্বনিম্ন হয়েছিল, অক্টোবর থেকে ফের ঊর্ধ্বগতি নিয়েছে বেকারত্বের হার। গত ডিসেম্বরে সারা দেশের আনএমপ্লয়মেন্ট রেট ছিল ৭.৯১ শতাংশ (শহরে ৯.৩০ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ৭.২৮ শতাংশ)।
সুখের কথা এই যে, এই সময়েও পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার মোটামুটিভাবে নীচের দিকেই থাকছে। ডিসেম্বরেও জাতীয় গড়ের নীচে (৭.৩০ শতাংশ) ছিল। চলতি মাসের শেষে এই হারের আরও কিছুটা উন্নতি হবে বলেই অর্থনীতির পণ্ডিতরা আশা করেন। এই সাফল্য কোনও দৈবকৃপা নয়। এর জন্য রাজ্য সরকারকেই বিশেষ উদ্যোগ নিতে হয়েছে। তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে বুঝে গিয়েছেন, এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যুদ্ধ ছায়ার সঙ্গে লড়াই করারই শামিল। গাত্রে ব্যথা আকর্ষণের এই অনাবশ্যক ‘ঐতিহ্য’ আগেভাগেই পরিহার করে তিনি বিকল্প উপায় খুঁজেছেন। প্রথমেই জোর দিয়েছেন, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের পূর্ণ সদ্ব্যবহারের উপর। অতঃপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন নানাভাবে মেয়েদের স্বনির্ভর করার উপর। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প-ব্যবসার বিকাশকেই পাখির চোখ করেছে তাঁর সরকার। তাই বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনের পাশে সমান উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে রাজ্যজুড়ে আয়োজিত সিনার্জি। ক্ষমতালাভের প্রথম পাঁচ বছরেই ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রে চালু করা হয়েছে ই-গভর্ন্যান্স। তার ফলে ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের অধীনে বিনিয়োগের প্রাথমিক ছাড়পত্র লাভের প্রক্রিয়া ভীষণ সহজ সরল হয়ে গিয়েছে। গত অক্টোবরে রাজ্যের ১২৫টি পুরসভা এলাকায় শুরু হয় রিয়েল টাইম ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুর ব্যবস্থা। আর এই প্রযুক্তিতে ভর করে মমতার রাজ্য মাত্র ১০০ দিনে ৪৮ হাজার ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুর সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে ফেলেছে। কর্মসংস্থান বা চাকরি হাওয়ায় হয় না। তার জন্য দরকার নতুন নতুন শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠা এবং তার দ্রুত বিকাশ। বাংলার সরকার সেই আসল কাজটাই করে চলেছে নীরবে। উন্নয়নের এই ধারা সরকার অব্যাহত রাখতে পারলে বাংলার সব শ্রেণির কর্মপ্রার্থীর সামনে সোনালি ভবিষ্যৎ আর রূপকথা নয়, নিখাদ এক বাস্তবই হয়ে উঠবে দ্রুত।