বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই বেরিয়ে পড়ছে বিজেপির সংগঠনের হাঁড়ির হাল। যোগীর হাত ছাড়ছেন একে একে বিজেপি বিধায়করা। এমনকী একাধিক মন্ত্রীও দলত্যাগ করে বসেছেন। জাহাজটা কি ডুবতে চলেছে? সংগত প্রশ্ন উঠে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অথচ, এই ইউপির নির্বাচনই জাতীয় রাজনীতিতে একসঙ্গে অনেক প্রশ্নের জবাব নিয়ে হাজির হয়। ভোটের পণ্ডিতরা দেশের বৃহত্তম রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল থেকে দিল্লির কুর্সির ভবিষ্যৎ নির্ণয় করতে পারেন। অতএব এই ভোটে জয়ের জন্য যে-কোনও রাজনৈতিক শক্তি মরিয়া থাকে। এমন সময়ে সমগ্র গেরুয়া শিবিরের মানসিক অবস্থা অনুমান করা শক্ত নয়। বিজেপি নেতৃত্ব চায়, তাদের সম্পর্কে যাবতীয় ‘অপপ্রচার, কুৎসা’ দু’হাতে সরিয়ে উত্তরপ্রদেশে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠায় তাদের আন্তরিকতার দিকটিই প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু তা কী দিয়ে হবে? বস্তুত সব দানই তো হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। অতএব বেকারত্বের অতি নিম্ন হার বা কর্মসংস্থানের উজ্জ্বল পরিসংখ্যানটিকেই হাতিয়ার করতে চান যোগীরা। কিন্তু ঠিক এই সময়েই যে অন্য একটি বিপরীত চিত্র সামনে হাজির করল মোদি সরকারের শ্রমমন্ত্রক! শ্রমমন্ত্রকের ই-শ্রম পোর্টালে (ন্যাশনাল ডেটাবেস অফ আনঅর্গানাইজড ওয়ার্কার্স) এখনও পর্যন্ত নথিভুক্ত অসংগঠিত শ্রমিকের সংখ্যা সাড়ে সাত কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এটি কেন্দ্রের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা থেকে এক কোটি বেশি। এই তথ্যেই যোগীরাজ্যে অসংগঠিত শ্রমিকের অস্বাভাবিকতাই প্রমাণিত হয়। অসংগঠিত শ্রমিক নথিভুক্তির বহর যেভাবে বাড়ছে, তাতে উত্তরপ্রদেশে চাকরি, কর্মসংস্থান, কাজের সুযোগ ইত্যাদির সরকারি বিজ্ঞাপনটিকে মোটেই গ্রহণযোগ্য মনে করছে না সংশ্লিষ্ট মহল।
সুপ্রিম কোর্টের গুঁতোয় ২৬ আগস্ট ই-শ্রম পোর্টাল চালু হয়। তখন সারা দেশের সাড়ে ৩৮ কোটি অসংগঠিত শ্রমিকের তথ্য তার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। তাতে রাজ্যওয়াড়ি লক্ষ্যমাত্রাও ছিল। সেটা উত্তরপ্রদেশের জন্য ছিল ৬ কোটি ৬৬ লক্ষ। রাজ্যটি সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে ১০ জানুয়ারি। ওইদিন পর্যন্ত ইউপির ৭ কোটি ৬৫ লক্ষ অসংগঠিত শ্রমিকের নাম ওই পোর্টালে যুক্ত হয়েছে। প্রতিদিন যোগ হচ্ছে আরও হাজার হাজার নাম। অতএব সংখ্যাটি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, কেউ জানে না। ধীরে ধীরে পরিসংখ্যানের অর্ধসত্যের ভয়ঙ্করটা খোলসা হচ্ছে কি না রামরাজ্যের বাসিন্দারাই ভালো বলতে পারবেন। চাপান-উতোরে গিয়ে শ্রমিকদের কোনও লাভ নেই। যে উদ্দেশ্যে এই পোর্টাল চালু করা সেই উদ্দেশ্যপূরণই হোক এই মুহূর্তের কর্তব্য। নির্মিত তথ্যভাণ্ডারের ভিত্তিতে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবীদের সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিক মোদি সরকার। তাতে যেন প্রকৃত কল্যাণকামী রাষ্ট্রের ছবিটাই ধরা পড়ে। তবে শুধু উত্তরপ্রদেশের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই। কারণ সার্বিকভাবে দেশের কর্মসংস্থানের ছবিটা ভীষণ করুণ। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমচিত্র বড়ই বেদনাদায়ক। আগামী বাজেটে এই সময়োচিত বিষয়টিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হোক।